ডুইসবুর্গ-এসেন বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রীষ্ম উৎসবে বাংলাদেশিরা

জার্মানির ডুইসবুর্গ-এসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক গ্রীষ্ম উৎসবে প্রথমবারের মত যোগ দিলেন বাংলাদেশের ছাত্র-ছাত্রীরা।

রায়হানা বেগম, জার্মানির ডুইসবার্গ থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 July 2015, 06:32 PM
Updated : 1 July 2015, 06:32 PM

বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের এক সবুজ চত্বরে জমে উঠেছিল এই আনন্দ মেলা৷ ৪০টিরও বেশি দেশের ছাত্র-ছাত্রীরা নিজ নিজ দেশের রকমারি দ্রব্য, মুখরোচক খাদ্য ও তথ্য নিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন৷ গান বাজনায় মেতে উঠেছিল উৎসব চত্বর৷

বেশ কয়েক বছর ধরেই আয়োজন করা হচ্ছে এই উৎসবের৷ এতে প্রথমবারের মত যোগ দিলেন বাংলাদেশের ছাত্র-ছাত্রীরা৷

২০০৩ সালে ডুইসবুর্গ ও এসেন শহরের দুটি বিশ্ববিদ্যালয় একীভূত হয়ে নব উদ্যোমে যাত্রা শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি৷ প্রায় ১৩০ দেশের ৪০ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে ডুইসবুর্গ-এসেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। জার্মানিতে ছাত্র সংখ্যার দিক দিয়ে প্রথম ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে অন্যতম এটি৷ শিক্ষার্থীদের প্রায় ১৬ শতাংশই বিদেশি।

এই সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের কারণে এক দিকে যেমন বিশ্ববিদ্যালয়টিকে বিশেষ দায়িত্ব নিতে হয় আবার অন্যদিকে নানা দিকে বিকশিত হওয়ার সুযোগও থাকে৷

২০০৯ সালে ‘চার্টার ডাইভার্সিটি’ সনদপত্রে স্বাক্ষরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে ডুইসবুর্গ-এসেন ছিল অগ্রগামী৷ এরপর থেকে আন্তর্জাতিক ও আন্তঃসাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড তথা উৎসব আয়োজনের উপর আরও জোর দেওয়া হয়৷

কয়েক বছর আগেও ডুইসবুর্গ-এসেন বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ থেকে আসা শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল হাতে গোনা৷ এখন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। আর এ কারণেই এবার বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশের ছাত্রছাত্রীরাও এই সামার ফেস্টিভ্যালে অংশগ্রহণ করতে উদ্যোগী হয়ে ওঠে৷

কয়েকজন সক্রিয় ছাত্র-ছাত্রী স্টল সাজানো, খাবার দাবার ও স্টেজ পরিবেশনা ঠিক করা, দেশ থেকে ঐতিহ্যবাহী জিনিসপত্র আনা- এসব আয়োজন করে। বাংলাদেশ থেকে আনা হয় মানচিত্র, নানা রকম ছবি, কুলা, ঝাকা, বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের ছোট সংস্করণ ইত্যাদি৷ রসনা পূরণের জন্য ছিল ঝালমুড়ি, নারকেলের নাড়ু, পায়েস ইত্যাদি৷

আগতদের আপ্যায়ন করা হয় বাংলাদেশি চা দিয়ে৷

বাংলাদেশি স্টলের মেহেদির নকশা তো রীতিমত সাড়া ফেলে দেয়৷ বেশ ভিড় জমে যায় সেখানে৷ হাতে সুন্দর কারুকার্য পেতে অনেকেই আগ্রহী হয়ে ওঠে৷ হাত বাড়িয়ে দেয় ‘শিল্পী’র দিকে৷

এর সব কিছুই ছিল বিনামূল্যে৷ কেননা বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতিকে তুলে ধরা, পারস্পরিক পরিচিতি, সৌহার্দ্য, তথ্যের আদান-প্রদান ইত্যাদি ছিল উৎসবের মূল লক্ষ্য৷ এজন্য বেশ কিছু অর্থ বরাদ্দ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি৷

বাংলাদেশের অনুষ্ঠান দিয়ে স্টেজ পরিবেশনা শুরু হয়৷ লোক সংগীত, জার্মান র‌্যাপ গান এবং নৃত্যের তালে তালে আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে অনুষ্ঠান৷

প্রতিবারের মত এবারও একটি জুরি-টিম ‘সেরা স্টল’ হিসাবে একটি স্টলকে পুরস্কার দেয়৷ এবারের পুরস্কারটি জিতে নেয় ইরানের স্টল৷

সামনের বার হয়তো এই পুরস্কার তাদের জুটবে বলে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আশা। এবারও তো কম সাড়া পায়নি তারা৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক অফিসের সমন্বয়কারী ব্যারবেল এঙ্গার বাংলাদেশের বর্ণ বৈচিত্র্যময় স্টল দেখেন, তিন প্লেট পায়েস ও ঝালমুড়ি খেয়ে বাংলাদেশে বেড়াতে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন৷

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা এখন থেকে সরাসরি আমাদেরকে জানাতে পারেন। পুরো নাম, ঠিকানা ও ছবিসহ লেখা পাঠিয়ে দিন এই ঠিকানায় probash@bdnews24.com