নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় রোববার ৯০ বছর বয়স্ক সি আর দত্তের শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবর নিতে মুক্তিযুদ্ধের তিন কণ্ঠযোদ্ধাসহ ছয় মুক্তিযোদ্ধা তার মেয়ের বাড়িতে গেলে এক আলাপচারিতায় তিনি এ কথা বলেন।
মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিডিআর-এর (বর্তমানে বিজিবি) প্রথম মহাপরিচালক সি আর দত্ত বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক সিটির দক্ষিণে ২০ মাইল দূরে ওয়েস্টচেস্টারে তার মেয়ে মহুয়া দত্তের বাসায় রয়েছেন।
তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে যাওয়া ব্যক্তিরা সেখানে পৌঁছামাত্র সি আর দত্তের মেয়ে মহুয়া দত্ত, কানাডা প্রবাসী মেয়ে চয়নিকা দত্ত, নাতনি অঞ্জলি দত্ত আন্তরিকতার সঙ্গে অভ্যর্থনা জানান।
তারপরই মুক্তিযুদ্ধের সহযোদ্ধাদের নিয়ে আড্ডায় মেতে ওঠেন এ বীর সেনা। নির্জন পরিবেশ, শরৎকালের শিশিরস্নাত স্নিগ্ধ আবহাওয়ায় তৈরি হয় ভিন্ন এক পরিবেশ।
এ আলাপচারিতায় ছিলেন- রথীন্দ্রনাথ রায়, ফকির আলমগীর, শহীদ হাসান, আবুল বাশার চুন্নু, রাশেদ আহমেদ এবং লাবলু আনসার।
বয়সের কারণে অনেক কিছুর খেই হারিয়ে ফেললেও বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতির ব্যাপারে মনোযোগ বিন্দুমাত্র কমেনি সি আর দত্তের।
তিনি বলেন, “সবকিছু সমঝোতার মধ্য দিয়েই করা উচিত। তাহলে সমাধানের অস্তিত্ব স্থায়ী হয়।”
এখানেই থামেন না সি আর দত্ত। জোর দিয়ে বলেন, “রোহিঙ্গা ইস্যুতে শেখ হাসিনা ইজ দ্য বেস্ট। শুধু তাই নয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার সমাধানেও শেখ হাসিনা অবিস্মরণীয় ভূমিকা পালন করেছেন। শান্তির জন্য তার নেতৃত্বের বিকল্প নেই।”
আড্ডা শুরুর ফাঁকেই তার হাতে অতিথিরা তুলে দেন একগুচ্ছ ফুল। এক ফাঁকে ফকির আলমগীর তার লেখা বই- ‘মুক্তিযুদ্ধে বিদেশি বন্ধুরা’ পরম ভালোবাসা আর শ্রদ্ধার সঙ্গে তাঁকে দেন।
তিনি সবাইকে আশীর্বাদ করেন। অতিথিরা তার সঙ্গে ছবি তোলেন।
এসময় স্বভাবসুলভ রসিকতা করে সি আর দত্ত তার নাতনিকে বলেন- “ফকির আলমগীরের চুলের ছবি ঠিক মতো তুলেছ তো!” পরিবারের সবাই হেসে তাকে বলে, “তুমি যেখানে আমাদের নামও কখনও কখনও ভুলে যাও, সেখানে ফকির আলমগীরের নাম ঠিক মনে রেখেছ।”
এসময় ফকির আলমগীর স্বগতোক্তি করেন- তিনি আমার এতো বড় ভক্ত তা জানা ছিল না।
মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, শরতের সকালে এ মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে দেখা করে আবেগ আর ভালোবাসার কথা জানাতে গিয়েছিলাম। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সি আর দত্তের অভিজ্ঞতালব্ধ ভাবনা জানতে।
সবশেষে সি আর দত্ত মুক্তিযোদ্ধাদের মাধ্যমে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “জাতীয় স্বার্থকে দলীয় স্বার্থের উর্দ্ধে রাখতে হবে। একাত্তরের চেতনায় বাংলাদেশ গড়ার যে কর্মযজ্ঞ চলছে তা অব্যাহত রাখতে মুক্তিযোদ্ধাদেরকেও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
তাকে দেখে মুক্তিযোদ্ধাদের মনে হয়েছে, দেশের প্রতি বুকভরা ভালোবাসা আর আন্তরিকতা চির অম্নান।
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |