নিউ ইয়র্কে ‘বঙ্গবন্ধু স্মারক বক্তৃতা’

‘যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ’ এর উদ্যোগে পঞ্চমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু স্মারক বক্তৃতা’।

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Sept 2017, 08:25 AM
Updated : 10 Sept 2017, 08:25 AM

শনিবার সন্ধ্যায় নিউ ইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসের জুইশ সেন্টার মিলনায়তনে ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ও বাংলাদেশের গ্রাম’ শিরোনামে এ বক্তব্য দেন জাতিসংঘের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ নজরুল ইসলাম।

নজরুল ইসলাম বলেন, “১৯৭৫ সালের জানুয়ারি মাসে বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয় বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন। এই কর্মসূচির রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দুটি দিকই ছিল। অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে মূল যে নতুন কর্মসূচি বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন, তা হলো প্রতিগ্রামে বাধ্যতামূলক সমবায় প্রতিষ্ঠা করা।”

মস্কো বিশ্ববিদ্যালয় ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করা নজরুল বলেন, “বঙ্গবন্ধুর সমবায়ী গ্রামের প্রস্তাবে দুটি দিক ছিল। একটি হলো যৌথ চাষ। বঙ্গবন্ধু প্রস্তাব করেছিলেন, গ্রামের সব জমিতে যৌথ চাষ হবে। দ্বিতীয়টি ছিল, গ্রামের সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করে একটি স্বয়ম্ভু ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়ে তোলা। গ্রাম তহবিল গঠন সংক্রান্ত বঙ্গবন্ধুর প্রস্তাবের মধ্য দিয়ে এই দিকটি বিশেষভাবে প্রকাশিত হয়েছিল।”

বঙ্গবন্ধুর সমবায় পুরোপুরি সমাজতন্ত্রের সমবায় ছিল না জানিয়ে তিনি আরও বলেন, “সমাজতন্ত্রের সমবায়ে সাধারণত জমির ওপর ব্যক্তি মালিকানা থাকতো না, ফলে নিট উৎপাদনের প্রায় পুরোটাই শ্রমের ভিত্তিতে বিতরণ হতো। বিপরীতে, বঙ্গবন্ধুর সমবায়ে জমির ওপর ব্যক্তি মালিকানা অক্ষুন্ন ছিল। ফসলের ৩ ভাগ হওয়ার কথা ছিল। একভাগ জমির মালিকানা ভিত্তিতে, একভাগ শ্রমের ভিত্তিতে এবং আরেক ভাগ গ্রাম তহবিলের জন্য। এই তহবিল দিয়ে গ্রামের কল্যাণমুখী বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হবার কথা।”

কিন্তু ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা ও ক্ষমতার হাত বদল হওয়ায় দ্বিতীয় বিপ্লব আর অগ্রসর হতে পারেনি জানিয়ে নজরুল বলেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রকৃত বিচার এখনও হয়নি। যেটি হয়েছে, সেটিকে বলা যায় শেখ লুৎফর রহমানের পুত্র ব্যক্তি শেখ মুজিবের হত্যার বিচার।”

জাতীয় নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার এখনও হয়নি অভিযোগ করে নজরুল ইসলাম বলেন, “এজন্য বৃহৎ আকারে তদন্ত হওয়া দরকার। পঁচাত্তরের ১৫ অগাস্টের নৃশংসতার নেপথ্যে কারা ছিল, কারা ষড়যন্ত্রে মদদ দিয়েছে, তাদের সবার বিচার হওয়া দরকার।”

‘জাসদ রাজনীতির নিকট বিশ্লেষণ’ ও ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ও বাংলাদেশের গ্রাম’ শিরোনামে নিজের লেখা দুটি গবেষণামূলক বইয়ের উল্লেখ করে নজরুল বলেন, “বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত জীবনী এবং কারাগারের রোজনামচা পড়লে বাঙালি জাতির অবিস্মরণীয় এই নেতা সম্পর্কে অনেক কিছ্ইু জানা সম্ভব।”

অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তাকে শুভেচ্ছা জানান যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি নূরন্নবী, সাধারণ সম্পাদক শিতাংশু গুহ ও লেখক আনিসুল হক। উপস্থিত ছিলেন ফাহিম রেজা নূর ও সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম যুক্তরাষ্ট্র শাখার সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য শুভ রায়।

আগের বছরগুলোতে ‘বঙ্গবন্ধু স্মারক বক্তৃতা’য় অংশ নিয়েছিলেন সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী শাহরিয়ার কবীর, অধ্যাপক  মুনতাসির মামুন, কলামনিস্ট বেলাল বেগ ও কাজী সাজ্জাদ জহীর বীর প্রতীক।

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!