স্থানীয় সময় মঙ্গলবার এ উপলক্ষে নিউ ইয়র্কে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশন এবং ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে পৃথক তিনটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে বাংলাদেশ মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠান শুরু হয়।
সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে স্থায়ী মিশনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার মাধ্যমে জাতীয় শোক দিবস পালনের কর্মসূচি শুরু করা হয়। এরপর ১৫ অগাস্টের শহীদদের উদ্দেশ্যে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয় ও শহীদদের স্মরণে দোয়া করা হয়।
বিকাল সাড়ে ৬টায় মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। অনুষ্ঠানের শুরুতে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর নির্মিত একটি ভিডিও দেখানো হয়। এরপর দিবসটি উপলক্ষে দেওয়া রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়।
আলোচনার আগে অডিটোরিয়ামে রাখা জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান যুক্তরাষ্ট্র সফররত তিন এমপি ও মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি।
অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন বলেন, “১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতির পিতা জাতিসংঘে প্রথমবারের মতো বাংলায় যে ভাষণ দিয়েছিলেন, তার মধ্যেই ২০১৫ সালে জাতিসংঘ গৃহীত এসডিজি’র ১৭টি অভীষ্টের অধিকাংশই প্রতিফলিত হয়েছে, যা বিস্ময়কর।”
রাষ্ট্রদূত মোমেন বলেন, “জাতির পিতার হত্যাকারীরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে মুছে ফেলতে চেয়েছিল, কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশের মানুষ জাতির পিতার জীবন ও আদর্শকে ধারণ করেছে। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে বিশ্বের বুকে সগৌরবে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ।”
এমপি মো.জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, “জাতির পিতা আমাদের দেখিয়ে গেছেন, কিভাবে দেশের জন্য, মানুষের জন্য জীবন উৎসর্গ করতে হয়।”
তিনি আরও বলেন, “জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে ইতিহাস বিকৃতি ও বিচারহীনতার যে সংস্কৃতির সৃষ্টি হয়েছিল, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা হত্যার বিচার ও ইতিহাস বিকৃতি রোধ করে সে কলঙ্ক থেকে জাতিকে মুক্ত করেছে।”
মো.আবু জাহির এমপি জাতির পিতার দীর্ঘ সংগ্রামী জীবন ও জেল-জুলুমের ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, “পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক জান্তারা যে মহামানবকে হত্যা করতে সাহস পায়নি, তাঁকে ৭৫-এর ঘাতকরা সপরিবারে নির্মমভাবে কাপুরুষের মতো হত্যা করেছিল, এমন হত্যাকাণ্ড এর আগে কখনই বিশ্ব দেখেনি।”
এমপি মিজানুর রহমান মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির পিতা হত্যার বিভিন্ন প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, “প্রবাসীরাও মুক্তিযুদ্ধসহ সকল সংকটে দেশের পাশে থেকেছেন। হৃদয়ে দেশপ্রেম নিয়ে মাতৃভূমির উন্নয়নে কাজ করেছেন।” তিনি জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ায় প্রবাসীদের আরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাসে বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠান হয়েছে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিনের বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা।
জ্যাকসন হাইটসে পালকি পার্টি সেন্টারে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শামসুদ্দিন আজাদ।
ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদের পরিচালনায় এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন জাহিদ হাসান রাসেল এমপি, আবু জাহির এমপি, মিজানুর রহমান এমপি, রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক নিজাম চৌধুরী।
আরও বক্তব্য দেন সংগঠনটির যুগ্ম সম্পাদক আইরিন পারভিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন দেওয়ান, আব্দুল হাসিব মামুন, নিউ ইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী, নিউ ইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলমগীর হোসেন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ও সহ-সভাপতিরা।
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |