কোরিয়াতে যখন এসেছিলাম, তখন ছিল খুব ঠাণ্ডা। ফলে তখন এসেই ফুলের দেখা পাইনি। কিন্তু এয়ারপোর্ট, শপিং মলগুলোতে দেখেছি ফুলের সাজসজ্জা। তার কিছুদিন পরই দেখা মিললো চেরি ফুলের। যার কথা আমি আগে একটা আর্টিকেলে লিখেছিলাম।
চেরি ফুলের সময় চলে যাওয়ার কিছুদিন পরই শুরু হয় ফুলের উৎসবগুলো। সব ফুলগুলো ফুটতে শুরু করে মে মাস থেকেই। আর চলতে থাকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তারপর শুরু হয় শরৎকাল। ওই সময় তো কোরিয়া দেখতে আরও বেশি সুন্দর হয়।
শীত আগমনের আগে শরৎকালের প্রাকৃতিক দৃশ্য সবচেয়ে বেশি উপভোগ্য থাকে। চারদিকের গাছের পাতা কমলা, হলুদ, লাল রঙের হয়ে যায়। কী যে সুন্দর লাগে, তা আসলে ভাষায় প্রকাশ করার মতো ভাষা আমার কাছে নেই!
গোলাপি, লাল, বেগুনি, হলুদ, সাদা, কমলা ... যেন সব রঙগুলোর মেলা বসিয়ে রেখেছে। আমি তো দেখে আর ছবি তোলার লোভ সামলাতে পারিনি। তাই যেখানেই ফুল দেখতাম, সেখানেই ছবি তোলার জন্য ব্যস্ত হয়ে যেতাম।
ফুলের বাগান দেখার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে, কোনোভাবেই গাছ থেকে ফুল ছেঁড়া যাবে না। কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। আমরা বাঙালিরা ফুল দেখে এতো খুশি হই যে, ফুল ছিঁড়ে হাতে না নিলে আমাদের ভালই লাগে না।
গরমকাল শুরু হওয়ার পর থেকে যেখানেই যাচ্ছিলাম, সেখানেই ফুল দেখছিলাম। অবশ্যই খুব পরিকল্পনা করে সাজানো-গুছানো। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে যেহেতু ঘরে বসে থাকি না, তাই যেখানেই কোন ফেস্টিভাল হয়, চলে যাই বেড়াতে।
এইসব ফেস্টিভালগুলোতে শুধু ফুলই থাকে না, সাথে থাকে স্টেজ শো, পারফরমেন্স, রাতের বেলা আতসবাজির শো। রোজ ফেস্টিভালের আর একটা বিষয় আমার খুব ভাল লেগেছে, সেটা হচ্ছে- ফেস্টিভালের একটা বিশাল হল রুমের ভেতরে বিভিন্ন রকমের ফুলের দোকান রয়েছে। এগুলো আসলে ডিজাইনার ফ্লাওয়ার শপ।
এগুলো ছাড়াও ক্যানোলা ফুলের উৎসব, ল্যাভেন্ডার ফুলের উৎসব-এসব তো আছেই। কিন্তু প্রতিটা ফুলের উৎসবই একেকটা থেকে একেকটা আলাদা। সবার ভালো লাগার মতো করেই পরিকল্পনা করা। আপনি কখনোই যে বিরক্ত হবেন না, এটা নিশ্চিত।
ইংরেজিতে বলা হয় ‘হিবিস্কাস রোজ’ আর কোরিয়ানরা বলে ‘রোজ অফ শ্যরন’। বাংলায় বললে গোলাপ। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই গোলাপ দেখতে একদম আমাদের দেশের গোলাপের মতো না। দেখতে অনেকটাই আমাদের দেশের জবা ফুলের মত।
লেখক: প্রবাসী বাংলাদেশি
ইমেইল: shajia.shila@yahoo.com
ছবি কৃতজ্ঞতা: সাজিয়া শিলা ও শোয়েব
লেখকের আরও পড়ুন
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |