আবুধাবিতে বিমানের ফ্লাইট বিলম্বিত, ‘অব্যবস্থাপনা’য় ভোগান্তির অভিযোগ

যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট ২৪ ঘণ্টা বিলম্বিত হওয়ার পর সংস্থাটির ‘অব্যস্থাপনায়’ ভোগান্তির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন আবুধাবি থেকে দেশে ফিরতে চাওয়া প্রবাসীরা।

জাহাঙ্গীর কবীর বাপপি, আবুধাবি থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 June 2017, 04:37 PM
Updated : 22 June 2017, 05:03 PM

আবুধাবির স্থানীয় সময় বুধবার রাত সাড়ে ১১টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-০২৭ ফ্লাইটটির বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা ছিলো।

ফ্লাইটটি আবুধাবি থেকে ঢাকা হয়ে চট্টগ্রামে গিয়ে যাত্রা শেষ করার কথা।

তবে ‘যান্ত্রিক ত্রুটি’র কারণে আবুধাবি পৌঁছাতে প্রায় ২৪ ঘণ্টা দেরি করেছাড়বে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। বেশ কয়েকজন যাত্রী অভিযোগ করেছেন, বিমান বিলম্বিত হওয়ার ব্যাপারে আগে থেকে তাদের কিছুই বলা হয়নি।

আবুধাবি প্রবাসী কমুনিটি নেতা এম এ মোতালেব কন্যাসহ এ ফ্লাইটটির চট্টগ্রামের যাত্রী ছিলেন।

তিনি বলেন, “বিমানের যেকোনও যান্ত্রিক ত্রুটি হতেই পারে। যাত্রীরা বুধবার রাত ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে এয়ারপোর্টে পৌঁছে বিমানের কোনও কাউন্টার খোলা না পেয়ে, এমনকি বাংলাদেশ বিমানের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাকে সেখানে  না পেয়ে, কিংবা ফ্লাইট বিলম্বের ব্যাপারে কোন তথ্য জানতে না পেরে দিশেহারা হয়ে পড়েন।

“এসময় বিমানের ‘লাগেজ চেক ইন কাউন্টার’ও খোলা ছিলো না। আমরা বুঝতেই পারছিলাম না এয়ারপোর্টে থাকবো নাকি চলে যাব। বিমানের স্থানীয় কর্তৃপক্ষের উচিৎ ছিল আমাদেরকে এ ব্যাপারে আপডেট দেওয়া, তারা তা দেননি।”

একই ফ্লাইটের যাত্রী ছিলেন চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির শুয়াবিল গ্রামের বাসিন্দা আবুধাবি প্রবাসী ইকবাল হোসেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অন্ত:সত্তা স্ত্রী, দুই বছরের শিশু সন্তানসহ ঈদ করতে দেশে যাচ্ছিলাম। বিমানের যে ফ্লাইট বিলম্ব হচ্ছে সে ব্যাপারে না বিমান, না ট্র্যাভেল এজেন্ট কারও কাছ থেকে আপডেট পাইনি।

“১০০ কেজি মালপত্র, শিশুসন্তান ও অসুস্থ স্ত্রী নিয়ে আমাকে যে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে তা অবর্ণনীয়। বিমানের পরবর্তী শিডিউল দেখাচ্ছিলো বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটা। রাত ১২টায় আমরা বাসায় ফিরে আসি। এ ধরনের আচরণ চলতে থাকলে আমাদেরকে বিকল্প চিন্তা করতে হবে।"

বিমানের এ ফ্লাইটটির যাত্রী ছিলো মোট ৩১৯ জন। যাদের মধ্যে কেউ কেউ মোসাফফা, আল-আইন, রূয়েইস, এমনকি সাড়ে তিনশ’ কিলোমিটার দূরের সিলা থেকেও এসেছিলেন।

এদের মধ্যে মাত্র ৩৯ জনের হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করেছেন বিমান কর্তৃপক্ষ।  

যাত্রীদের অভিযোগ নিয়ে বিমানের আবুধাবি রিজিওনাল ম্যানেজার ইকবাল আহমেদ চৌধুরীর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “নির্ধারিত ফ্লাইট বোয়িং-৭৭৭-২০০ বিমানটি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সিলেট থেকে আসতে পারেনি।

“তবে বৃহস্পতিবার রাতের নির্ধারিত ফ্লাইট ঠিক সময়েই ছাড়বে। বাতিল ফ্লাইটের ৩৯জন যাত্রীকে আমরা হোটেল দিয়েছি। যাদের ফোনে পাওয়া গেছে তাদের বিলম্বের কথা জানানো হয়েছে।"

আগের দুই যাত্রী বিমানের পক্ষ থেকে কোনও খবর না পাওয়ার অভিযোগ করলেও আরেক যাত্রী বলেছেন তিনি বিমান বিলম্বিত হওয়ার বিষয়টি জানতে পেরেছেন যাত্রা শুরু ঠিক এক ঘণ্টা আগে, রাত সাড়ে ১০টায়। 

চট্টগ্রামের  চট্টগ্রামের পটিয়ার মারুফুল আলম আবুধাবি থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে মোসাফফায় থাকেন। বিজনেস ক্লাশে টিকেট কাটা ছিল তার।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ইফতার করে কোনোমতে এয়ারপোর্টে ছুটে যাই। সাড়ে ১০টায় ফোন আসে যে ফ্লাইট ‘ডিলে’ আছে। এটা আগে জানলে হয়তো আমাদের দুর্ভোগের পরিমাণ কমতো। বিমান থেকে কেউ এসে ফ্লাইট বিলম্বের জন্য দুঃখ প্রকাশের সৌজন্যও দেখালেন না।”

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!