স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যায় নিউ ইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে নিউ মেজবান পার্টি হলে আয়োজিত সমাবেশটিতে সংগঠনটির সাবেক বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদের নেতৃত্বে একদল নেতাকর্মী 'বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করে 'সভা ভণ্ডুলে'র চেষ্টা চালান বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশটি শুরু হয় ইমাম কাজী কাইয়ুমের কণ্ঠে কোরআন তেলওয়াত এবং সবিতা দাসের গীতা পাঠের মধ্য দিয়ে।
সভায় যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি নুরুজ্জামান সর্দারের স্বাগত বক্তব্যের পরপরই দলবল নিয়ে সমাবেশস্থলে ঢোকেন নানা অভিযোগে বছর দুয়েক আগে বরখাস্ত হওয়া সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ।
এসময় সাজ্জাদ বলেন, "আমি এখানে থাকতেও কেন আরেকজনকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পরিচয় দেয়া হচ্ছে।"
জবাবে মাইক্রোফোনে সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, "দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তার উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় আমাকে সাসপেনশনের নির্দেশ জারি করতে বলেছেন এবং সেই টেক্সট আপনি (সাজ্জাদ) ও পেয়েছেন।
এনিয়ে সাজ্জাদের সমর্থকদের সঙ্গে উপস্থিত বাকিদের সাথে বাক-বিতণ্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে সাজ্জাদের সমর্থকরা তাকে ঠেলে অনুষ্ঠানের মঞ্চের কাছে নিয়ে গিয়ে মাইক্রোফোন কেড়ে নেয় এবং সাজ্জাদ যেন অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সেই দাবি জানান।
সভাপতি সিদ্দিকের সাথে অনুষ্ঠানের আয়োজকদের সবাই তখনও মঞ্চে বসে ছিলেন। কিন্তু বাকিদের সঙ্গে সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ ও তার অনুসারীদের ধাক্কাধাক্কি হয়। এক পর্যায়ে চেয়ার ছুঁড়ে মারার ঘটনাও ঘটে। মুহূর্তে সবকিছু লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়।
অবস্থা বেগতিক দেখে রেস্টুরেন্টের মালিক পক্ষ পুলিশকে ফোন করলে তারা এসে সাজ্জাদ ও তার অনুসারীদের সমাবেশস্থল থেকে তাড়িয়ে দেয়।
পুলিশের উপস্থিতিতে বাকিরা পার্টি হলে ঢুকলে পুনরায় সমাবেশ শুরুর পরিবেশ তৈরি হয়।
ধস্তাধস্তির সময় সাজ্জাদের সমর্থকরা অনুষ্ঠানের ব্যানার খুলে ফেলেছিলেন। সেটি আবার টানানো হয় এবং ঘন্টাখানেক পর সমাবেশ যথারীতি শুরু হয়।
মেসেজটি পড়ার পর সভাস্থলে উপস্থিতরা সাজ্জাদ ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়া শুরু করেন। তারা সাজ্জাদ ও তার অনুসারীদের 'জামায়াত-শিবির আর খোন্দকার মুশতাকের দোসর হিসেবে' অভিহিত করে দল থেকে এদেরকে বহিষ্কারের দাবি তোলেন।
এরপরই সমাবেশের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মান্নান আসেন এবং মঞ্চে আসন নেন। কয়েক মিনিটের মধ্যেই আসেন বিশেষ অতিথি সংসদ সদস্য আবু জাহির ।
তিনি বলেন, "মুজিবনগর দিবসের সমাবেশ যারা বানচালের ষড়যন্ত্র করেছে, তারা কখনোই আওয়ামী লীগের লোক নয়, ওরা খুনি খোন্দকার মোশতাকের দোসর, জামাত-শিবিরের এজেন্ট।’
"যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ পরিচালিত হচ্ছে সরাসরি সভানেত্রী শেখ হাসিনা এবং সজীব ওয়াজেদ জয়ের দিক-নির্দেশনায়। এটি যারা মানতে পারবে না, তাদের আওয়ামী লীগে থাকার অধিকার নেই।"
এ সময় আব্দুল মান্নান এমপিও বলেন, "যারা কোন্দল করে, গ্রুপিংয়ের মাধ্যমে বিশেষ মহলের পারপাস সার্ভ করতে চায়, তাদের দলে থাকার অধিকার নেই।"
অভিযুক্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রহিম বাদশা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিনিধিকে বলেন, "গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আওয়ামী লীগকে পরিচালনা করতে হবে। সারাজীবন সভাপতি থাকবেন ড. সিদ্দিকুর রহমান-এমন বিধি আমরা মানবো না।"
এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক নিজাম চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কোন গঠনতন্ত্র নেই। কারণ, এর গঠনতন্ত্র হচ্ছে জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ। আমরা ১৯৮৯ সালের ১৭ মে থেকেই তার নির্দেশে কাজ করছি আমেরিকায়। এ নিয়ে বাদানুবাদের সুযোগ নেই।"
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |