দেশে-বিদেশে যেখানেই যাওয়া হয়েছে, সে এলাকার নদীগুলো খুঁজে দেখার চেষ্টা করেছি। তা সে আমাদের দেশের পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, কীর্তনখোলা, আড়িয়াল খাঁ হোক, কিংবা চাংশার 'শিয়াং', ম্যকাও-এর 'পার্ল', হো চি মিনের 'সাইগন'বা 'মেকং', ফিলাডেলফিয়ার 'দেলাভার', ওয়াশিংটনের 'পোটোম্যাক'।
প্রথম যখন লুঝৌ শহরের নাম শুনি, ম্যাপ দেখে খুশি হলাম। বাহ! পৃথিবীখ্যাত নদীতীরের এক শহরে কাজ করব! ভাবতেই বেশ ভালো লাগল। এশিয়ার দীর্ঘতম নদী 'ইয়াংজে'। আর সমস্ত পৃথিবীতে তৃতীয়। চীনারা একে 'ছাংজিয়াং'-ই বেশি বলে। ছোটবেলায় বাংলা বইয়ে আমরা 'ইয়াংশি' উচ্চারণ পড়েছিলাম। এই 'ইয়াংজে' আর 'থুও' নদীর সঙ্গমস্থলের ছোট সবুজ শহর লুঝৌ।
তিব্বত-সিংহাই এর টাংলা পর্বতে জন্ম নিয়ে সিচুয়ান, ইউনান, ছংছিং, হুনান, হুবেই, জিয়াংসি, আনহুই, জিয়াংসু প্রদেশ চুমে সাংহাই হয়ে পূর্ব চীন সাগরে মিলিত হয়েছে 'ইয়াংজে'। এই দীর্ঘ ভ্রমণে সে পাড়ি দিয়েছে প্রায় ৪ হাজার মাইল! পূর্ব থেকে পশ্চিম, দক্ষিণ থেকে মধ্য চীনের প্রকৃতি, পরিবেশ, কৃষি, অর্থনীতি, যোগাযোগ ব্যবস্থা- সব কিছুই ইয়াংজে নদীর উপর নির্ভরশীল।
লুঝৌ শহরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা ইয়াংজের অংশটুকু অনেকটাই জৌলুশহীন। নদী এখানে খুব বেশি চওড়া নয়। শহর সংলগ্ন যে ক'টি সেতু নদী পাড় হয়েছে, সেগুলো এক-দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ মাত্র। তারপরও এই জৌলুশহীন নদী আমাকে খুব টানে। এ যে সুবিশাল এক নদীর অংশ মাত্র।
মাঝে মাঝেই নদীর পাড়ে চলে আসি। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা দৌড়াদৌড়ি করে, বয়স্করা শরীর চর্চা করে কিংবা গল্প করে সময় কাটায়। কিছুক্ষণ পর পরই নদীতে দেখা যায়, পণ্যবাহী 'কার্গো' জাহাজ। অথবা লুঝৌ বিমানবন্দরে অবতরণের আগে নদীর ওপর বিমানের শেষ চক্কর। কখনও ছোট নৌকাও দেখা যায়, হয়তো মাছ ধরার। তীরে নোঙ্গর করা আছে বেশ কয়েকটি ভাসমান খাবার ঘর।
লেখক: প্রবাসী বাংলাদেশি
ইমেইল: asadkhanbmj@yahoo.com
এই লেখকের আরও লেখা
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |