যুক্তরাষ্ট্রে জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে ‘গণহত্যা দিবস’ পালন

যুক্তরাষ্ট্রে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের যৌথ উদ্যোগে এই প্রথম ‘গণহত্যা দিবস’ পালন করা হয়েছে।

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 March 2017, 05:08 AM
Updated : 26 March 2017, 05:24 AM

স্থানীয় সময় শনিবার নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশ মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে দিবসটি পালন করা হয়।

এ সময় ২৫ মার্চ কালরাতের শহীদসহ মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদ স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুরু হয়। এরপর ২৫ মার্চের গণহত্যার উপর একটি প্রামাণ্য ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।

‘গণহত্যা দিবস’ স্মরণে আয়োজিত সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য দেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন।

তিনি একাত্তরের ২৫ মার্চ কালরাতে ‘অপারেশন সার্চ লাইট’-এর নামে নিরস্ত্র, ঘুমন্ত, নিরপরাধ বাঙালির উপর পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হিংস্র আক্রমণ ও নির্মম গণহত্যার কথা তুলে ধরে বলেন, “পরিসংখ্যানের বিচারে বিশ্বের অন্যান্য গণহত্যার তালিকায় এই গণহত্যা একেবারে প্রথম দিকে অবস্থান করছে। আমাদের দুর্ভাগ্য আমাদের গণহত্যার যথাযথ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মেলেনি।”

একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বাস্তবায়ন করার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করে রাষ্ট্রদূত বলেন, “ইতোমধ্যে আমরা জাতিসংঘের বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছি। গণহত্যা প্রতিরোধ বিষয়ক জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ উপদেষ্টার সাথে দেখা করে সরকারের এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত এবং এটি জাতিসংঘে উত্থাপনে বাংলাদেশের উদ্যোগের বিষয়টি অবহিত করেছি। এছাড়াও জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের নেতৃবৃন্দের কাছে বিষয়টি উত্থাপন করেছি।”

রাষ্ট্রদূত মোমেন বলেন, “আন্তর্জাতিকীকরণের অংশ হিসেবে এ বিষয়ে অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতা নিয়ে আমাদের সম্ভাব্য সব ধরনের কৌশল নির্ধারণ করতে হবে।”

গণহত্যার বিষয়ে সমমনা বন্ধু রাষ্ট্র, মুক্তিযুদ্ধে সহায়তাকারী দেশ ও গণহত্যা কবলিত দেশসমূহকে নিয়ে জাতিসংঘে ও অন্যান্য বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্মে ২৫ মার্চের গণহত্যার পক্ষে একযোগে কাজ করার উপর গুরুত্বরোপ করেন মাসুদ বিন মোমেন। তিনি এক্ষেত্রে প্রবাসী বাঙালি, এনজিও, সুশীল সমাজ, মিডিয়া, সাহিত্যিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, শিক্ষাবিদ ও গবেষকসহ সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল শামীম আহসান ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড বিশ্বমানবতাকে পরাজিত করেছিল বলে উল্লেখ করে বলেন, “আপনারা অনেকেই এদেশের নাগরিক। আপনাদের সুযোগ রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রতিনিধি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে এই গণহত্যার কথা তুলে ধরার।” প্রবাসে গণহত্যা দিবস পালনের মাধ্যমে সারা পৃথিবী ১৯৭১-এর প্রকৃত ঘটনা জানতে পারবে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।

যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, “আসুন, দলমত নির্বিশেষে মহান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল শক্তি ২৫ মার্চকে ‘আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতির জন্য একযোগে কাজ করি।”

মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে বক্তব্য দেন মহসিন আলী ও আবুল মনসুর খান। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জেনোসাইড-৭১ ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট প্রদীপ রঞ্জন কর, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট বসারত আলী, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আইরিন পারভীন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুখ আহমেদ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব বেলাল বেগ।