‘গালফ অব ওমান’- এর পূর্ব উপকূলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্ষুদ্রতম একটি অঙ্গরাজ্য এই ফুজেইরাহ। সমুদ্র তীর ঘেঁষে গড়ে উঠেছে এই নয়নাভিরাম আরব্য জনপদটি। এখানে বিভিন্ন পেশায়,ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়,সেবা ও আতিথেয়তাসহ নানা ক্ষেত্রে সুনামের সাথে কাজ করছে প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
হোটেলের ৩৬টি দেশের কর্মীর মাঝে আবহমান বাংলার শৌর্য বীর্যের গৌরব গাঁথা,তার সংস্কৃতি-ঐতিহ্য, পোশাক-পরিচ্ছদ,নানা ধরনের ভর্তা,পান্তা-ইলিশ,বিভিন্ন পদের বিরিয়ানী,পায়েসসহ ২০টিরও বেশি রসনাবিলাসী খাদ্য সম্ভার সবার মাঝে এক নতুন বাংলাদেশকে পরিচয় করিয়ে দেয়।
মহা ব্যবস্থাপক প্যাট্রিক অ্যান্টাকি বলেন, “এদেশে প্রায় দুইশ’টি দেশের মানুষ বাস করে। আমাদের হোটেলেই আছেন ৩৬টি দেশের কর্মী। অথচ আমরা একে অন্যের দেশ সম্পর্কে জানি না। বহুদিন আগে আমাদের কেরালার বন্ধুরা নিজেদেরকে উপস্থাপনের পর শ্রীলঙ্কা, ফিলিপাইনও একই উদ্যোগ নেয়। আমি চাইলাম বাংলাদেশিরাও একই চ্যালেঞ্জ নিক। আজ সে চ্যালেঞ্জ বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশ সম্পর্কে আমাদের জানার সুযোগ করে দিল।”
সাউদ আফ্রিকান হেড অব এক্সিকিটিভ অফিস জ্যানেট মুন্সুমি বললেন তার অভিজ্ঞতার কথা। তিনি এ ধরনের একটা বাংলাদেশি কম্যুনিটির অনুষ্ঠানে থাকতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান বলে দাবি করেন। বাংলাদেশি সংস্কৃতি আর বাংলাদেশকে আরও ভালভাবে জানতে পারলেন বলে জানালেন তিনি।
‘ঝর ঝর ঝরিছে বারিধারা’- এই গানের সাথে তাল মুদ্রা মিলিয়ে সাবলীল নাচছিলেন ইউক্রেনের মেয়ে মার্গারিটা ফেদোরোভা। তন্ময় হয়ে দেখছিলাম সে নাচ,আর অনুষ্ঠান শেষে কয়েকটি নাচে অংশ নেওয়া এই বিদেশিনী মিডিয়া কর্মীদের কাছে এসে দাঁড়াতেই কথা বললাম তার সাথে। জিজ্ঞেস করলাম-আপনি কীভাবে একটা বাংলা শব্দ না বুঝেও এভাবে নাচলেন?
উত্তরে মার্গারিটা হেসে জানালেন, তিনি এই গানগুলো নির্বাচন করে এর রিদম আর মুদ্রাগুলো অনুসরণ করেছেন। মার্গারিটার মত পোলান্ড,রাশিয়া,উজবেকিস্তান,ফিলিপাইনের মেয়েরাও বাংলাদেশি সহকর্মীদের সাথে তাল মিলিয়ে নেচে-গেয়ে আনন্দ করেছিলেন।
হোটেলের ৩৬টি দেশের কর্মীদের মধ্যে লাল-সবুজের বাংলাদেশের পতাকা, দেশি-বিদেশি অংশগ্রহণকারীর পরিবেশনায় বাংলাদেশি পোশাকে নাচ, গান,নানা উপাদানের ভর্তা,পান্তা-ইলিশসহ দেশি খাবার-দাবার,মিষ্টান্ন সামগ্রী- সবার মন কাড়ে। আর আয়োজকরাও একটি অনন্য উচ্চতার বাংলাদেশকে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরতে পেরে তৃপ্ত হন।
লেখক: প্রবাসী বাংলাদেশি
এই লেখকের আরও পড়ুন
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |