'প্রেমিকা'কে ফেইসবুকে চিঠি লিখে সিঙ্গাপুরে প্রবাসীর আত্মহত্যা

বিয়ে করতে ব্যর্থ হয়ে দেশে থাকা কথিত প্রেমিকাকে ফেইসবুকে চিঠি লিখে সিঙ্গাপুরে নির্মিতব্য একটি বহুতল ভবন থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেছেন প্রবাসী এক বাংলাদেশি যুবক।

মহসীন মালহার, সিঙ্গাপুর থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 March 2017, 03:36 PM
Updated : 20 Nov 2021, 01:58 PM

এসময় আরেক বাংলাদেশির উপর পড়ায় তিনিও গুরুতর আহত হয়েছেন।   

আত্মহত্যাকারী তানিম আহমেদের গ্রামের বাড়ি মেহেরপুরে। তিনি সিঙ্গাপুরের ট্রান্সওভার স্কাফোল্ড পিটিই নামের একটি প্রতিষ্ঠানে লিফট অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন।

গুরুতর আহত অপর বাংলাদেশি মো. জামালের বাড়ি মুন্সিগঞ্জে। তিনি স্ক্যাফোল্ড পিটিই কোম্পানির নির্মিতব্য ওই ভবনটির ফোরম্যান হিসেবে কাজ করতেন। 

বুধবার সকালে সিঙ্গাপুরের মেরিনা ওয়ান প্রজেক্ট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন স্ক্যাফোল্ড পিটিই কোম্পানির নির্মাণাধীন ওই ভবনের কনস্ট্রাকশন সুপারভাইজার ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বাংলাদেশি আদনান শাহ।

তিনি জানান, আত্মহত্যার জন্য তানিম ওই ভবনের ২২ তলায় উঠে নিচে লাফ দেন। সরাসরি নিচে তিন তলায় কর্মরত জামালের উপর পড়েন। এতে ঘটনাস্থলেই তানিম মারা যান।

গুরুতর আহত অবস্থায় জামালকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়।

এদিকে আত্মহত্যাকারী তানিম মৃত্যুর আগে ফেইসবুক ওয়ালে ইংরেজি অক্ষরে বাংলায় তার কথিত প্রেমিকাকে একটি চিঠি লিখে যান।

চিঠিটি ইতোমধ্যে সিঙ্গাপুরের সোশাল মিডিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের মধ্যে ভাইরাল হয়েছে। এতে প্রবাসী শ্রমিক তানিমের দুঃখের কথাগুলো উঠে এসেছে।

বাংলাদেশের সময় আনুমানিক সকাল সাড়ে ৮টায় ফেইসবুকে পোস্ট করা ওই চিঠির শেষ অংশে, দেড়ঘণ্টা পরে আত্মহত্যার কথা বলেন তানিম।

তার আগে তার দীর্ঘ তিন বছরের অপেক্ষা, কথিত প্রেমিকার পরিবারের উপেক্ষা এবং নিজের পরিবারের প্রতি ভালোবাসার কথা লিখেন।

চিঠির একটি জায়গায় তানিম লিখেন-

"আমার পরিবারের সবাই আমার কাছে অনেক কিছু আশা করে কিন্তু আমি তাদের কিছুই দিতে পারলাম না! আমার মা আমাকে যে পরিমাণে ভালবাসে আমার যদি সাতবার জন্ম হয়, আমি যদি সাতবারই সারাজীবন ধরে আমার মায়ের পা ধোওয়া পানি খাই, তবু আমার মায়ের ঋণ আমি শোধ করতে পারবো না!

"আর আমার আব্বাও আমাকে অনেক অনেক ভালবাসে। আর আমার ছোটবোনটা আমি বাড়ি থাকলে সবসময় আমার সাথে মারামারি করতো, কিন্তু এখন ঠিকই আমার জন্য কাঁদে! আমার পরিবারের সবার এত ভালবাসা সত্ত্বেও আমি তাদের মুখের দিকে তাকিয়ে বেঁচে থাকতে পারছি না।"

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash.bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!