ভিনদেশিদের নিয়ে ফিনল্যান্ডে শহীদস্মরণ

শহীদ মিনার না থাকুক, ভাষার জন্য জীবন উৎসর্গ করা সেই বীর শহীদদের প্রতি হাজারো মাইল দূর থেকে শ্রদ্ধা জানালো ফিনল্যান্ডের অউলু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

এহেছান লেনিন ফিনল‌্যান্ড থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Feb 2017, 05:55 PM
Updated : 22 Feb 2017, 09:33 AM

বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল ভ্যালিতে সেই শোকের আর ভাষার অধিকার আদায়ের গর্বের অধ্যায় স্মরণে ছিল মঙ্গলবার দিনব্যাপী নানা আয়োজন।

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে আয়োজিত এসব অনুষ্ঠানে অংশ নেন ফিনল্যান্ড, ভারত, জার্মানি, আমেরিকা, ঘানা, নাইজেরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা; কথা বলেন নিজের ভাষা নিয়ে, নিজের ভাষার প্রতি দরদও তুলে ধরেন তারা।  

মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকেই অউলু বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত সেন্ট্রাল ভ্যালিতে জড়ো হতে থাকেন নানা দেশের শিক্ষার্থীরা। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের বীরত্বময় দিনটির ইতিহাস যারা জানেন না তাদের মাঝে বেশ কৌতূহল ছিল অনুষ্ঠান কেন্দ্র করে।

অস্থায়ী শহীদ মিনার, দেয়ালিকা, পোস্টার, ব্যানারা, ছবি ও নানা দেশের বর্ণমালা দিয়ে সাজানো হয় পুরো অনুষ্ঠানস্থল। অংশগ্রহণকারীদের জন্য ছিল একুশে ফেব্রুয়ারির ইতিহাসসমৃদ্ধ লিফলেট।

ভাষার জন্য প্রাণ দেওয়ার বীরত্বের কথা জেনে কাউকে কাউকে দেখা গেছে আবেগ আপ্লুত হতে। কারো কারো ভাষ্য ছিল: ‘এমন ঘটনাও পৃথিবীতে ঘটেছে?’

ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের স্নাতকোত্তরের ছাত্র ফিনল্যান্ডের নাগরিক জুলিয়ান যেমন বললেন, “তোমরা শুধু দেশের জন্যই প্রাণ দাওনি, ভাষার জন্যও প্রাণ দিয়েছো; আজই জানলাম। এমন জাতি সত্যিই বিরল। তোমাদের প্রতি শ্রদ্ধা।”

মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় বাঙালির এই আত্মত্যাগের দিনটি এখন আর বাংলাদেশেই সীমাবদ্ধ নয়; ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে সারা বিশ্বে।

অউলু বিশ্ববিদ্যালয়ে গর্ব ও শোকের দিনের এই অনুষ্ঠানের আয়োজকদের একজন সানাউল হক।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “গতবছরও আমরা দিনটি পালন করেছিলাম। তবে এবারের আয়োজনে ব্যাপকতা ছিল। আমাদের বাংলাভাষী ছাড়াও অনেকেই অংশ নিয়েছেন দেখে ভালো লাগছে।”

প্রতিবছর বাংলাদেশের জাতীয় দিনগুলো পালন করার আশা প্রকাশ করেন নজরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, “দেশের প্রতি দায়িত্ব থেকেই আমরা জাতীয় দিবসগুলো পালন করে আসছি। বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরাই আমাদের লক্ষ্য। এ বিষয়ে কোনো বিভেদ নেই, মতের বিরোধ নেই। আর তাই প্রবাসী বাংলাদেশিদের সবার সহযোগিতাও পাই।”

দিনব্যাপী অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যা ৬টায় ছিল বাংলা গানের আয়োজন; সবশেষে বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানটি সম্মিলিতভাবে পরিবেশনের মধ্য দিয়ে ইতি টানা হয় অনুষ্ঠানের।

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash.bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!