ইউনূসকে তদন্তের আওতায় আনার দাবি যুক্তরাষ্ট্র আ.লীগের

পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্ব ব্যাংকের উত্থাপিত দুর্নীতির ‘আজগুবি অভিযোগের’ সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ সন্দেহভাজনদের তদন্তের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ।

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Feb 2017, 09:38 AM
Updated : 17 Feb 2017, 02:33 PM

বৃহস্পতিবার নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের পার্টি হলে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ তদন্ত শেষে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও দাবি জানান।

মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে বাংলাদেশের জনগণকে ‘হেয় করায়’ বিশ্ব ব্যাংককে ক্ষমা চাওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

দুর্নীতির অভিযোগ তুলে চার বছর আগে পদ্মা সেতু প্রকল্পের অর্থায়ন থেকে সরে দাঁড়িয়েছিল বিশ্ব ব্যাংক।  পরে বাংলাদেশ সরকার নিজস্ব অর্থায়নে দেশের সবচেয়ে বড় এই অবকাঠামো নির্মাণে হাত দেয়।

পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিনের তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিশ্ব ব‌্যাংক উত্থাপিত দুর্নীতির অভিযোগ গত সপ্তাহে কানাডার আদালতে খারিজ হয়ে যায়।

সরকারের কর্তাব্যক্তিরা প্রথম থেকেই অভিযোগ করছেন, বিশ্ব ব্যাংক ‘যাদের যোগসাজশে’ দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছিল, তাদের মধ্যে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসও আছেন।

বুধবার চৌদ্দ দলের বৈঠকে আওয়ামী লীগ নেতা নাসিম বলেন, “পদ্মা সেতুসহ দেশবিরোধী বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের নাটের গুরু ড. ইউনূস। তিনি বিভিন্ন সময় আন্তর্জাতিক প্রভাব খাটিয়ে, লবিষ্ট নিয়োগ করে দেশের স্বার্থবিরোধী কাজ করেছেন। এইভাবে পদ্মা সেতু নিয়ে ষড়যন্ত্র করেছেন।”

আগের দিন প্রধানমন্ত্রীও একই ইঙ্গিত করে বলেছিলেন, “একটা ব্যক্তির স্বার্থে আঘাত লাগল বলে, সেই ব্যক্তি দেশের এত বড় একটা মূল্যবান প্রোজেক্ট...  যা হলে আমাদের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নতি হতে পারত...।”

গত মাসে সংসদেও তিনি বলেছেন, হিলারি ক্লিনটনকে দিয়ে পদ্মা সেতুতে বিশ্ব ব‌্যাংকের অর্থায়ন আটকেছিলেন নোবেলজয়ী বাংলাদেশি মুহাম্মদ ইউনূস এবং তাতে বাংলাদেশের এক সম্পাদকেরও ভূমিকা ছিল।

অবশ‌্য ইউনূস সেন্টার বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেছে, পদ্মা সেতু নিয়ে নোবেলজয়ী ড. ইউনূস কখনও কিছু বলেননি।

যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বর্তমান সরকার বাংলাদেশের স্বার্থে যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার ক্ষমতা রাখে।

“শেখ হাসিনার ন্যায়-নিষ্ঠতার প্রতি অবিচল আস্থার আরেকটি নজির স্থাপিত হলো কানাডার আদালতের রায়ে। ড. ইউনূসের সঙ্গে ওই ষড়যন্ত্রে তথাকথিত সুশীল সমাজেরও দুয়েকজন ছিলেন। তাদেরও স্বরূপ উন্মোচনের সময় এসে গেছে।”

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা থেকে টেলিফোনে যোগ দেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান।

তিনি বলেন, দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের ওই অভিযোগ যে ‘মিথ্যা’, তা বুঝে শুরু থেকেই এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চালিয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ।

“ওয়াশিংটন ডিসিতে শতশত প্রবাসী জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। বিশ্ব ব্যাংককে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে স্মারকলিপিও দিয়েছে। আজ সেই সত্যেরই জয় হল।”

যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সৈয়দ বসারত আলীর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আরও ছিলেন সহ-সভাপতি মাহবুবুর রহমান, উপদেষ্টা ডা. মাসুদুল হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমেদ, মহিউদ্দিন দেওয়ান, আবুল হাসিব মামুন, প্রচার সম্পাদক হাজী এনাম, উপ-প্রচার সম্পাদক তৈয়বুর রহমান টনি, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মোজাহিদুল ইসলাম, ফরিদা আকতার দীবা, মিসবাহ আহমেদ, ফরিদ আলম, সোলায়মান আলী ও শামসুল আবদীন।

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ, আড্ডা, আনন্দ বেদনার গল্প, ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!