ইউরোপ জুড়ে বাঙালীর অভাব নাই। তবে ইউরোপের গ্রামাঞ্চলে বঙ্গসন্তানদের আনাগোনা মনে হয় একটু কম। এজন্য এখানে হাটের কথা এর আগে শুনি নাই। ইউরোপেও হাট বসে শোনার পর আমিও একটু চমকে গিয়েছিলাম আর কি!
শুধু যে শনিবারের হাট দেখতে যাচ্ছি, তা নয়। গ্রামটাও ফরাসি দার্শনিক ভলতেয়ারের নামে। এই সুযোগে ভলতেয়ারের হালকা পরিচয় দিয়ে রাখি। তিনি ছিলেন ফরাসি আলোকময় যুগের একজন নাট্যকার, লেখক, প্রাবন্ধিক ও দার্শনিক।
তাঁর রসবোধপূর্ণ বাকচাতুর্য ও দার্শনিক লেখালেখির জন্য এখনও বিখ্যাত তিনি। তিনি নাগরিক স্বাধীনতার পক্ষে, বিশেষত ধর্মের স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের অধিকারের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার জন্য বিখ্যাত হয়েছিলেন। তিনি ফ্রান্সের কঠোর সেন্সর আইন উপেক্ষা করে সামাজিক সংস্কারের অন্যতম প্রবক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। খ্রিস্টান গির্জা ও তৎকালীন ফরাসি সামাজিক আচার ছিল তার ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের লক্ষ্য।
সে যাই হোক, ফরাসি বিপ্লবের দার্শনিক তত্ত্ব নিয়ে পাঠকদের জ্ঞান দিতে কি-বোর্ড ধরিনি আজকে। আপনাদের নিয়ে যাব ইউরোপের গ্রামীণ হাটে।
সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরে মোট অধিবাসির ৪০ শতাংশই বিদেশি। যেন তেন বিদেশি নয়, সব ডিপ্লোম্যাট। কারণ এ শহরের অলিতে-গলিতে আন্তর্জাতিক সংস্থার সদর দপ্তর। এখানে আইএলও তো ওখানে আংক্টাড।
কথা বেশি বাড়ানোর দরকার নাই। হাট থেকে তোলা এই ছবিগুলোতে দেখে নিন কী কী পাওয়া যায় এই হাটে। ফ্রান্সের গ্রামের বাড়িতে হাতে তৈরি পাউরুটি-পিঠা-পুলী থেকে সস্তা জামা-কাপড়। পাওয়া যাবে চাইনিজ খেলনা থেকে ইউরোপীয় কুটির শিল্পের পণ্য। আশেপাশে সমুদ্র না থাকলেও এই হাটে পাওয়া যাবে সামুদ্রিক মাছ। মশলাপাতি থেকে টাটকা আলু-মুলা নিয়ে পশরা সাজিয়ে বসে হাটুরেরা।
জেনেভা শহরের কল্যাণে এই গ্রামীণ হাটেও নাকি দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে ফরাসিরা বিরক্ত। সুইজারল্যান্ডের মানুষেরা সস্তায় জিনিস পাবার আশায় এখানে কিনতে আসে আর এই দামেও ফরাসিরা বিরক্ত!
তবে মানুষ শুধু কেনাকাটা করতেই এই হাটে আসে, তা-ই না কিন্তু। শহরের ইট-পাথরের জঙ্গলের বাইরে একটুখানি ভীড়ের মধ্যে হৈ চৈ-এর মধ্যে এসে স্থানীয় পানাহার করার মজাই আলাদা। শনিবার ছাড়া অন্য কোনও দিন এখানে গেছেন তো দেখবেন- শুনশান নিরবতা।
লেখক: প্রবাসী বাংলাদেশি
ইমেইল: salehimran@gmail.com, salehimran@mincom.gov.bd
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |