যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্প বিরোধী বিক্ষোভে প্রবাসী বাংলাদেশিরা

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাতটি মুসলিম দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশাধিকারের নিষেধাজ্ঞা জারির প্রেক্ষিতে চলা এক বিক্ষোভে অংশ নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Feb 2017, 06:44 AM
Updated : 4 Feb 2017, 07:29 AM

স্থানীয় সময় শুক্রবার নিউ ইয়র্কের জেএফকে এয়ারপোর্টে ‘নিউইয়র্ক ইমিগ্রেশন কোয়ালিশন এবং মজলিস আল সুরাহ’র উদ্যোগে এ বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে জুমার নামাজ শেষে ট্রাম্পের ওই নির্দেশের প্রতি ধিক্কার জানিয়ে অন্যান্য দেশের প্রবাসী ও আমেরিকান নাগরিকদের পাশাপাশি মানববন্ধন করে প্রবাসী বাংলাদেশিরাও।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নারী অধিকার সংগঠক মাজেদা এ উদ্দিন বলেন,“যে মানুষটি নারীর সম্মান জানে না,শ্রমিকের অধিকারকে পাত্তা দেয়না,সেই মানুষটি এখন ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধে কূট-কৌশল চালাচ্ছেন। কিন্তু এই আমেরিকা তা সহ্য করবে না বলেই সকল ধর্মের মানুষ আজ রাজপথে।”

প্রবাসী বাংলাদেশিদের কম্যুনিটি নেতা ওসমান চৌধুরী বলেন,“ডোনাল্ড ট্রাম্প যে কাণ্ড শুরু করেছেন, তা অব্যাহত থাকলে সারাবিশ্ব থেকে যুক্তরাষ্ট্র বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। সেটি ভয়ের ব্যাপার। সেজন্যেই আমেরিকানরা আজ মুসলমানদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে আমেরিকার ইতিহাস-ঐতিহ্যকেই সমুন্নত রাখতে চাচ্ছেন।”

প্রতিবাদ কর্মসূচিতে বাংলাদেশি রিয়েল এস্টেট এজেন্ট সাইফুল ইসলাম বলেন, “ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা এসেছে। জনমনে হতাশা বিরাজ করছে। এ অবস্থার অবসান ঘটানো সম্ভব না হলে আবারও আমেরিকায় অর্থনৈতিক বিপর্যয় অবশ্বম্ভাবী।”

বিক্ষোভে সংহতি প্রকাশ করতে আসেন দেশটির অঙ্গরাজ্য পার্লামেন্টের অ্যাসেম্বলিম্যান ডেভিড আই ওয়েপ্রিন।

জ্যামাকাই মুসলিম সেন্টারের সাবেক সেক্রেটারি জুন্নন এ চৌধুরী বলেন, “আমাদের সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্ন করার ক্ষমতা কোন প্রেসিডেন্টেরই নেই। ট্রাম্প যা করছেন, তা যুক্তরাষ্ট্রের জন্যেই শুধু ভয়ংকর নয়, সারাবিশ্বেও জন্যেই একটির অশনি-সংকেত।”

‘নিউইয়র্ক ইমিগ্রেশন কোয়ালিশন এবং মজলিস আল সুরাহ’র নেতা তালি আব্দুল রশিদ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে এ আন্দোলনকে আরও বেগবান করার উদাত্ত আহ্বান জানান।

জেএফকে এয়ারপোর্টে বিপদগ্রস্ত অভিবাসীদের স্বেচ্ছায় আইনগত সহায়তাকারি এটর্নিদেরপক্ষে বক্তব্য দেন এটর্নি  তাহানি আবুশি।

দক্ষিণ এশিয়ান-আমেরিকানদের অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে কর্মরত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘দেশিজ রাইজিং আপ অ্যান্ড মুভিং (ড্রাম)’- এর সংগঠক কাজী ফৌজিয়া বলেন, “ট্রাম্পকে প্রতিরোধ করা সম্ভব না হলে আমেরিকার সুনাম ভূলুণ্ঠিত হবে-এতে কোন সন্দেহ নেই।”

ট্রাম্পের গণবিরোধী ও আমেরিকার চেতনার পরিপন্থি নির্বাহী আদেশের কঠোর সমালোচনা করে বাংলাদেশি-আমেরিকান ডেমোক্র্যাটিক লীগের প্রেসিডেন্ট খোরশেদ খন্দকার বলেন, “সামনের বছর নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের মধবর্তী নির্বাচনে ট্রাম্পের এহেন গণবিরোধী কর্মকাণ্ডের দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিতে এখন থেকেই সংগঠিত হতে হবে।”

এ সময় নিউ ইয়র্ক ইমিগ্রেশন কোয়ালিশনের‘নো ব্যান’ক্যাম্পের আইনজীবীরা মুসলিম অভিবাসীদের আইনগত সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেয়।