বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে দূরত্ব তেমন বেশি না। বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায়, আর মালয়েশিয়া দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়।আকাশ পথে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পার হয়ে মিয়ানমার আর থাইল্যান্ড পেরোলেই মাত্র সাড়ে তিন ঘণ্টায় বিমান পৌঁছে যায় (প্রায় ৩ হাজার মাইল) মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে।
ঋতু বৈচিত্রের দেশের মানুষ আমরা। যখন মনে মনে স্বদেশের শীত ঋতুর স্মৃতি রোমন্থন করছি, তখন চোখের সামনে বৃষ্টিমুখর সন্ধ্যা। বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় ঘুরতে আসা অনেকের মুখে শুনেছি, মালয়েশিয়ার আবহাওয়া বাংলাদেশের মতো। ইউরোপ-আমেরিকা বা মধ্যপ্রাচ্য থাকেন, এমন কেউ মালয়েশিয়ায় বেড়াতে আসলেও এই কথা বলেন।
শার্ট-প্যান্ট পরে তার ওপর মোটা শীতের জামা মুড়ি দিয়ে মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে কুয়ালালামপুর এসে পৌঁছানোর পর গায়ের মোটা কাপড়টি তাড়াতাড়ি খুলতে হয়। যতদিন মালয়েশিয়ায় থাকা হয়, ততোদিন শীতের কাপড়ের আর প্রয়োজনই হয় না। তখন বোঝা যায়, বাংলাদেশ-মালয়েশিয়ার আবহাওয়ার আসল অমিলটা।
আমি কুয়ালালামপুরের চায়নাটাউনে থাকি, এটা স্ট্রিট মার্কেট। বৃষ্টি হলেই উপভোগ করতে হয়। যেমনটি শৈশবে দাওয়ায় বসে কখনও মুষলধারে বৃষ্টি, কখনো টাপুর-টুপুর বৃষ্টি পড়া উপভোগ করতাম।
জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর, বছরের যেকোনও সময় মালয়েশিয়ার আকাশ কেঁদে ওঠে, টাপুর-টুপুর বৃষ্টি নামে। চোখের সামনে টানা ঘণ্টাদেড়েক বৃষ্টি হলেই সময়টা বর্ষাকাল মনে হয়, অন্তত যতক্ষণ বৃষ্টি হয়। আর স্মৃতিরা ফিরে যায় বর্ষার গ্রাম বাংলায়।
বৃষ্টি হলে দোকানগুলোতে ক্রেতা কিছুটা কমে যায়। আমাদের ব্যস্ততা কমে। বৃষ্টিভেজা অলস সময়ে ফেলে আসা কতো স্মৃতি মনকে নাড়া দিয়ে! একেক সময় একেক গল্প মনে পড়ে।
খ্রিস্টিয় নতুন বছরের তৃতীয়দিনে এই দূর পরবাসে যখন দেশের শীতকালের কথা মনে পড়ছে, শীতের সকালের মিষ্টি রোদ কিংবা শিশিরভেজা দুর্বাঘাস মাড়িয়ে পথচলার কথা মনে পড়ছে, ঠিক তখন চোখের সামনে তুমুল বৃষ্টি।
হাত বাড়ালে খেলতে পারছি বৃষ্টিজলে। ইচ্ছে হলে কাগজের নৌকা বানিয়ে ভাসিয়ে দিতে পারি শৈশবের ঠিকানায়।
লেখক: মালয়েশিয়া প্রবাসী।
ইমেইল: rafiq.akhan80@gmail.com
এ লেখকের আরও লেখা:
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |