বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী বাঁচাতে মালয়েশিয়ায় চিত্র প্রদর্শনী

পনের-বিশ বছর আগেও গ্রামে দেখা যেত নানা প্রজাতির জলজ প্রাণী। দেখা মিলত অনেক রকমের স্থলচর ও বন্য প্রাণীর। কিন্তু সম্প্রতি অনেক প্রজাতির প্রাণীকেই আর আগের মতো দেখা যায় না। অনেক প্রাণীর সংখ্যা দিন দিন কমে আসছে। হারিয়ে যাচ্ছে অনেক প্রাণী।

রফিক আহমদ খান, কুয়ালালামপুর থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Oct 2016, 08:51 AM
Updated : 25 Oct 2016, 08:51 AM

শুধু বাংলাদেশে নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেও কমে যাচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীর সংখ্যা। বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন যেমন এর কারণ, তেমনি প্রাণীর প্রতি মানুষের অবহেলা, নির্দয় আচরণ, অহেতুক বিলাসী জীবনযাপনও এজন্য অনেকাংশে দায়ী।

এক শ্রেণীর বিলাসি ধনীরা আজকাল গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষের মতো সহজলভ্য পশুর চামড়া দিয়ে তৈরি পণ্য চায় না। এরা চায় কুমির, তিমি, বাঘ, হরিণ কিংবা সাপের চামড়া দিয়ে তৈরি নানা পণ্য। তা যতো দামীই হোক না কেনো!
পৃথিবী থেকে হারিয়ে যেতে বসা এমন প্রাণীদের বাঁচানোর জন্য মালয়েশিয়ান শিল্পীরা আয়োজন করেছিলো গণসচেতনতামূলক এক চিত্রকর্ম প্রদর্শনীর। একে অনেকটা প্রতিবাদী প্রদর্শনীও বলা যায়।

প্রদর্শনীতে শিল্পীদের হাতে তৈরি তিমি, হাতি, কচ্ছপ, হর্নবিল ও বাঘসহ বিভিন্ন প্রাণীর চিত্র স্থান পেয়েছিল। দর্শনার্থীদের বোঝানো হচ্ছিলো, এসব প্রাণীর চামড়া দিয়ে তৈরি পণ্য না কেনার জন্য। রেস্টুরেন্টে বসে এসব প্রাণীর রেসিপি না খাওয়ার জন্য।

হাঙ্গরের চিত্রকর্মে লেখা ছিল ‘আমাকে মুছে ফেলো না’। আরেকটি হাঙ্গরের গায়ে ব্যাগ পরিয়ে দিয়ে প্রতিবাদ জানানো হলো, হাঙ্গরের চামড়া দিয়ে ব্যাগ না বানানোর জন্য, ব্যাগ ব্যবহার না করার জন্য।

প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়া এক শিল্পী কচ্ছপ দেখিয়ে বলছিলেন, মালয়েশিয়ায় কচ্ছপ বিলুপ্তির পথে। সমগ্র মালয়েশিয়ায় প্রায় দুই'শ কচ্ছপ আছে। অর্থাৎ খরগোশ গতিতে কমছে কচ্ছপ জাতির সংখ্যা।

তার সাথে আমিও যোগ করেছিলাম আমাদের দেশের অনেক কথা। আগে আমাদের গ্রামের প্রত্যেকটা পুকুরে, খালে-বিলে কচ্ছপ থাকতো। হাটে-বাজারে কচ্ছপ বেচাকেনা হতো। এখন গ্রামের পুকুরে বা খালে-বিলে কচ্ছপ খুব কমই দেখা যায়। তাহলে কী কচ্ছপ বাংলাদেশেও কমে যাচ্ছে দিনকে দিন।

বাংলাদেশে গেলে আগের মতো গ্রামে আর পাখ-পাখালি দেখি না। কিসের ভয়ে পাখিরাও আমাদের গ্রাম ছেড়েছে প্রায়। গ্রামে মাটি কুড়লে কেঁচোরা লাফিয়ে ওঠে না আর। এসব কথা বলেছিলাম প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়া শিল্পীর সাথে।

কুয়ালালামপুরের সর্ববৃহৎ শপিং মল টাইম স্কয়ারের সেন্টারে গত মাসেই সপ্তাহব্যাপী (১০-১৮ সেপ্টেম্বর) এ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। প্রাণীদের রক্ষায় গণসচেতনা সৃষ্টিতে এ ধরনের প্রদর্শনী সারা বিশ্বে হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। তাদের এ উদ্যোগ সফল হোক। পৃথিবীর বুক থেকে বিলুপ্ত হওয়ার পথে থাকা প্রাণীগুলোর বংশবিস্তার হোক আবারো। সব প্রাণীর জন্য অশেষ ভালোবাসা।

এই লেখকের আরও পড়ুন: