গ্রীষ্ম প্রধান দেশ থেকে আসা আমাকে স্বাগত জানিয়েছিল স্টকহোমের মেঘলা আকাশ আর ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। কিন্তু সেই বৃষ্টির সাথে আসা ঠাণ্ডা বাতাসে আমার প্রায় জমে যাবার দশা। আমার প্রতি করুণা করেই কিনা জানিনা, পর পর কয়দিন রোদ উঠলো, ভীষণ রোদ। আর তারপরে শুরু হলো এদেশের শরৎ।
আমাদের শরতের সাথে এদের কোনো মিলই নেই! সবুজ তরুণ প্রকৃতি কি করে জরাগ্রস্ত হয়ে পড়ে সে এক দেখার মত বিষয়। প্রকৃতির সাথে মানুষের মনের যোগ আছে এটা আগেও জানতাম। কিন্তু নতুন করে উপলব্ধি করলাম।
তিন সপ্তাহেরও বেশি হলো সুইডেনে রোদ ওঠেনি। রোদের দেশের মানুষ আমি, একটুখানি রোদের জন্য বুকের মধ্যে রীতিমত হাহাকার চলছে। ঠাণ্ডা বাতাস সাথে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি, মন ভার হবার জন্য একেবারে আদর্শ আবহাওয়া। কিছুই ভালো লাগে না, না মন, না শরীর। সারাদিন ঘুম ঘুম,আলসেমি,অকারণ কান্না পায়। অথচ এই মুখভার দিন বদলে যেতে একমুহূর্তও লাগবে না রোদ উঠলে! বাতাসে ঝরে পড়া পাতার শব্দ তখন সত্যিই নুপূরের ঝঙ্কার মনে হয়। প্রকৃতির এই রংয়ের পরত উপভোগ করা যায় প্রাণ ভরে।
যারা ছবি তুলতে ভালোবাসেন তাদের জন্য এই সময়টা ভীষণ কাঙ্খিত। ক্যমেরার লেন্সে,মুহূর্তের রং বদলের খেলা ধরে রাখা আসলেই উপভোগ্য। প্রকৃতির এই রংয়ের খেলা উপভোগ করতেই হয়তো এসময় এখানকার মানুষ রংহীন কাপড় পরে। এদের পোশাকের দোকানগুলোতে অটাম কালেকশন দেখলে আপনি বুঝতে পারবেন কালো থেকে সাদা এবং সাদা থেকে বাদামী, ধূসরের কত রকম শেড হতে পারে! তবে এ সময় রং-বেরংয়ের মোমবাতি খুঁজে পাবেন প্রায় সব দোকানে। ভিন্ন ভিন্ন তাদের সুবাস। দিন ছোট হতে শুরু হয়েছে আগেই, এছাড়া হ্যালোউইন এবং ক্রিসমাস সামনে রেখে এই সময় প্রচুর মোম বিক্রি হয়।
লেখক: প্রবাসী ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট