তাবিজ দেওয়ায় বাংলাদেশি ইমামকে হত্যা করে ‘আইএস সমর্থকরা’

তাবিজ দেওয়ার কারণে যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টারে বাংলাদেশি ইমাম জালাল উদ্দিনকে দুই ‘আইএস সমর্থক’ হত্যা করে বলে আদালতে শুনানিতে উঠে এসেছে।

প্রবাস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 August 2016, 07:47 PM
Updated : 24 August 2016, 07:55 PM

ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ম্যানচেস্টার ক্রাউন কোর্টে মঙ্গলবার এ হত্যা মামলার শুনানিতে একথা বলা হয়।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় গ্রেটার ম্যানচেস্টারের রচডেলের একটি শিশু পার্কে হামলার শিকার হন জালাল উদ্দিন (৭১)। তার মাথা ও মুখে একাধিক জখমের চিহ্ন পাওয়া যায়, যা হাতুড়ি দিয়ে পেটানোর কারণে বলে ধারণা করা হয়।

আদালতে বলা হয়, নামাজ আদায়ের পর মসজিদ থেকে এক বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে দাওয়াত খেয়ে হেঁটে বাসায় ফেরার পথে তাকে হামলা করা হয়।

মোহাম্মেদ হোসেন সাঈদী (২২) ও মোহাম্মেদ আব্দুল কাদির (২৪) নামে দুজনের বিরুদ্ধে এ হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ আনা হয়েছে। জালাল উদ্দিন ইসলামি পন্থায় (তাবিজের মাধ্যমে) রোগ সারানোর চেষ্টা করেন বলে গত বছর জানতে পারার পর তারা তার প্রতি ‘বিদ্বেষ’ পোষণ করতে থাকেন বলে প্রসিকিউশনের ভাষ্য।

আদালতে মামলার শুনানিতে প্রসিকিউটর পল গ্রিনি কিউসি বলেন, “জালাল উদ্দিনের মতো শান্ত একজন ব্যক্তিকে কারা ঘৃণা করে? গুরুত্বপূর্ণ এই প্রশ্নের জবাব মিলবে আইএসআইএসের বিভ্রান্তিকর মতাদর্শে।

“জালাল উদ্দিন রোগ সারাতে রুকিয়া নামে ইসলামি পন্থা চর্চা করতেন। আইএসআইএস এটাকে ‘ব্ল্যাক ম্যাজিক’ হিসেবে দেখে এবং তারা মনে করে, যারা এর চর্চা করে তাদের কঠিন শাস্তি, এমনকি মৃত্যু প্রাপ্য।”

প্রসিকিউটর বলেন, “বিবাদী মোহাম্মেদ হোসেন সাঈদী এবং মোহাম্মেদ আব্দুল কাদির নামে তার সহযোগী আইএসআইএসের সমর্থক এবং সে কারণে তারা ওই দৃষ্টিভঙ্গি লালন করেন যে, যারা রুকিয়া চর্চা করে তাদের এ ধরনের শাস্তি প্রাপ্য।”

গ্রিনি বলেন, সাঈদী দাবি করবেন যে, তিনি আইএস বা কোনো ধরনের সহিংস চরমপন্থা সমর্থন করেন না।

“তার এই বক্তব্য সত্য কি না সে বিষয়ে আপনারা সিদ্ধান্ত নেবেন। আমরা বলছি, আপনারা যদি একবার সব তথ্য-প্রমাণ শোনেন তাহলে আপনারা নিশ্চিত হবেন যে তার ওই বক্তব্য সঠিক নয়,” বিচারকদের উদ্দেশ্যে বলেন তিনি।

প্রসিকিউটর বলেন, ওই দিন সাঈদী গাড়িতে করে কাদিরকে ওই পার্কের ফটকে নিয়ে যান। তিনি ভালোভাবে জানতেন যে, কাদির জালাল উদ্দিনকে হত্যা বা তার ক্ষতি করতে যাচ্ছেন।

কাদির বারবার তার মুখে সজোরে আঘাত করেন। তারপর সে পার্কের অন্য পাশ দিয়ে বেরিয়ে সাঈদীর গাড়িতে উঠে পালিয়ে যান।  

দুই কিশোরী রাত পৌনে ৯টার দিকে অচেতন অবস্থায় জালাল উদ্দিনকে দেখতে পান। এরপর দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কিছুক্ষণ পর তার মৃত্যু হয়।

সাঈদী এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন। অন্যদিকে হত্যার কয়েক দিন পর যুক্তরাজ্য থেকে পালিয়ে গেছেন কাদির।