অপরদিকে তাদের অভিযোগ নাকচ করে মিলন বলছেন, যারা সাংগঠনিক রীতি অনুসরণ করে বিএনপির কমিটি গঠনে আগ্রহী নন তারাই নানা অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছেন। শুধু তাই নয়, যারা জালিয়াতি এবং সাংগঠনিক অনিয়মের জন্যে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন তারা এখন এক হয়ে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাংগঠনিক ঐক্যে ফাটল ধরানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাতে নিউ ইয়র্কে পৃথক দুটি সভা থেকে পরস্পরবিরোধী অভিযোগ করা হয়। জ্যাকসন হাইটসের পালকি পার্টি সেন্টার মিলনবিরোধীদের এবং ব্রুকলীনের সন্দ্বীপ সোসাইটির অফিসে মিলন ও তার সমর্থকদের বৈঠক হয়।
নিউ ইয়র্ক রাজ্য বিএনপির কমিটি গঠনের লক্ষ্যে মাথাপিছু এক ডলার ফি দিয়ে সদস্য হওয়ার পর প্রার্থী হতে আগ্রহীদের নগদ অর্থে মনোনয়নপত্র কিনতে বলা হয়েছে। ১৩ অগাস্ট কাউন্সিল অধিবেশন সামনে রেখে মিলনকে আহ্বায়ক এবং বিএনপির সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক গিয়াস আহমেদকে সদস্যসচিব করে ১০১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কাউন্সিল ঘিরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক আন্তর্জাতিক সম্পাদক এহসানুল হক মিলনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ করেন তারা।
মিলনের বিরুদ্ধে তাদের সঙ্গে সুর মেলান ওয়াশিংটন ডিসি বিএনপির সাবেক সেক্রেটারি লিয়াকত আলীও।
ওই সভায় তিনি বলেন, “কমিটির পদ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে মিলন আমার কাছে নগদ অর্থ চেয়েছেন। দেইনি বলে এখন আমার সাথে তিনি কথা বলেন না।
“সংস্কারবাদী হিসেবে পরিচিত এই মিলন ইতোপূর্বে নেতাকর্মীদের হাতে লাঞ্ছিত হওয়া সত্ত্বেও তার লাজ-শরম হয়নি। এখন বিএনপির ভবিষ্যৎ কাণ্ডারি তারেক রহমানের নাম ভাঙিয়ে প্রবাসে চাঁদাবাজিতে লিপ্ত হয়েছেন।”
আকতার হোসেন বাদল বলেন, “তারেক রহমানের নাম ভাঙিয়ে মিলনের চাঁদাবাজি আমরা মানতে পারি না। কারণ এই ব্যক্তি এর আগেও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিকে তছনছ করেছিলেন। এখন স্টেট কমিটি গঠনের ধান্দায় বিএনপির সাংগঠনিক অস্তিত্ব চুরমার করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। দুর্দিনের ত্যাগী নেতাকর্মীদের পাত্তা না দিয়ে নগদ অর্থ নিয়ে কমিটি গঠনের পাঁয়তারা চালাচ্ছেন।”
মিলনের বিরুদ্ধে ওয়াশিংটন ডিসি, ফ্লোরিডা, মিশিগান, পেনসিলভেনিয়া, টেক্সাস, জর্জিয়া প্রভৃতি স্থানে বিএনপির কমিটি গঠনের সময় নগদ অর্থের পাশাপাশি মূল্যবান দ্রব্য-সামগ্রী গ্রহণের অভিযোগ ওঠে ওই সভায়।
একই রাতে ব্রুকলীনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মিলন বলেন, “সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে আমি কাজ করছি। তার নির্দেশ যারা মানেন না বা মানবেন না, তারা আসলে আওয়ামী লীগের এজেন্ট। এটি মনে রাখতে হবে বিএনপি পরিবারের সকলকে।”
“আজকে যারা এই নির্বাচন প্রক্রিয়ার সমালোচনা করছেন তারা সকলেই সেই সভাগুলোতে উপস্থিত ছিলেন এবং তাদের সকলের সম্মতির ভিত্তিতেই সম্মেলনের মাধ্যমে সরাসরি ভোটে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সরাসরি নির্বাচনে তাদের ভরাডুবি হবে জেনে তারা ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন পদ্ধতি বাতিল করে সিলেকশনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করার জন্য আমাকে চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু নিউ ইয়র্ক ও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সকল নেতাকর্মী নিরপেক্ষ নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান নেন।”
মিলন বলেন, “বিগত দিনে যারা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও জালিয়াতির কারণে বহিস্কৃত হয়েছেন, সেই সব বিপথগামীরা আজ সম্মেলনের বিরুদ্ধচারণ ও আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা কুৎসা রটাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতৃবৃন্দ আজ দলের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ, আমরা সম্মেলনের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী নিউ ইয়র্ক স্টেট বিএনপি উপহার দেব।”
এই সভায় বিএনপি নেতাদের মধ্যে গিয়াস আহমেদ, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, কামাল পাশা বাবুল, সোলায়মান ভূইয়া, আব্বাস উদ্দিন দুলাল, রাফেল তালুকদার, সারোয়ার খান বাবু, জাহাঙ্গীর সরোয়ার্দী, সোহরাব হোসেন, দেলোয়ার শিপন, একে আজাদ, মাহফুজুল মাওলা নান্নু, আবু সুফিয়ান, জাকির হাওলাদার, বিলাল চৌধুরী, মিসবাউজ্জামান, রফিকুল ইসলাম ডালিম, নাজমুল আলম, সোহেল, কচি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।