কিন্তু তাদের সেই উদ্দেশ্যে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন পাকিস্তানের ‘বন্ধু’ যুক্তরাষ্ট্রেরই কয়েকজন সাহসী নাগরিক।
১৯৭১ সালের ১১ জুলাই বাল্টিমোর সমুদ্রবন্দরে জাহাজ ‘পদ্মা’কে ভিড়তে দেননি তারা। ওই জাহাজে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর জন্য অস্ত্র দেওয়ার কথা পেন্টাগনের।
ছোট কয়েকটি ডিঙি নৌকা নিয়ে জীবন বাজি রেখে সেদিন ‘পদ্মা’র যাত্রা আটকে দিয়েছিলেন পেনসিলভেনিয়া ও বাল্টিমোরের সেই সাহসী মানুষেরা।
বাল্টিমোর সমুদ্রবন্দরে ‘পদ্মা’ অবরোধে নেতৃত্ব দেওয়া রিচার্ড টেইলারের লেখা ‘ব্লকেড’ বইটিই এবার একই নামে উঠে এসেছে তথ্যচিত্রে।
যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাঙালি আরিফ ইউসুফ ও তসবির ইমাম স্বাক্ষর নির্মিত তথ্যচিত্রটির প্রথম প্রদর্শনী হয়ে গেল শনিবার নিউ ইয়র্ক সিটির ম্যানহাটানের বারুক কলেজের এঙ্গেলম্যান রিসাইটাল হল মিলনায়তনে।
কনকনে ঠাণ্ডা উপেক্ষা করে প্রদর্শনীতে উপস্থিত হন বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাঙালি ও মার্কিন নাগরিক।
প্রদর্শনী শেষে তথ্যচিত্র ‘ব্লকেডের’ অন্যতম নির্মাতা আরিফ ইউসুফ সাংবাদিকদের জানান, ২০০৮ সাল থেকে তিনি এবং স্বাক্ষর এটির নির্মাণ শুরু করেন।
দুজন হাজার মাইল দূরে থাকলেও মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায় মানুষের সামনে তুলে ধরার পথে তা বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি।
আরিফ বলেন, “স্বাক্ষর থাকে ওয়াশিংটন ডিসিতে। আর আমি নিউ ইয়র্কে। হাজার মাইলের ব্যবধানও আমাদের দমাতে পারেনি।যাবতীয় পরিকল্পনা এবং পদক্ষেপ সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে নেওয়ায় ছবিটি বানাতে এতদিন লেগেছে।”
তাসবির ইমাম স্বাক্ষর বাংলাদেশের জনপ্রিয় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হাসান ইমামের ছেলে।
“তৎকালীন মার্কিন প্রশাসন যে পাক হায়েনাদের সর্বাত্মক সহায়তা দিয়েছে, তা সাধারণ আমেরিকানদের মধ্যে আরও স্পষ্ট করার অভিপ্রায়ে আমরা এই তথ্যচিত্রটি নির্মাণে উদ্বুদ্ধ হয়েছি,” বলেন আরিফ।
তথ্যচিত্র ‘ব্লকেড’ শিগগিরই বাংলাদেশে প্রদর্শণ করার কথা জানান কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির তথ্য-প্রযুক্তি বিভাগের পরিচালক আরিফ।
“আসছে জুলাইতে ঢাকায় যাব। তারপর সেটি প্রদর্শনের সময় ঠিক করব।”
শনিবার ‘ব্লকেড’ তথ্যচিত্রটি ক্যালিফোর্নিয়ার সানফ্রান্সিসকোর বে এরিয়াতেও প্রদর্শিত হয়েছে।
এছাড়া ওয়াশিংটন, বোস্টন, নিউজার্সি ও কানাডায় তথ্যচিত্রটি প্রদর্শণ এবং অনলাইনে ছাড়া হবে বলে আরিফ জানান।