ব্রিসবেনের বাঙালিরা 

অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাসের কথা উঠলে সিডনি আর মেলবোর্নের কাছে যেন বেশ খানিকটা ম্লান হয়ে যায় অন্য শহরগুলোর নাম।

কবির উদ্দিন, অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেন থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Oct 2015, 03:06 PM
Updated : 29 Nov 2015, 03:31 PM

এই দুটো শহর অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতির প্রাণভোমরা, স্বাভাবিকভাবে সেখানে চাকরি ও ব্যবসার সম্ভাবনাও অন্য শহরগুলো থেকে বেশি। আর এ কারণে অধিকাংশ প্রবাসী বাঙালিই ওই দুটি শহরে থিতু হয়েছেন।

আর এজন্যই হয়তো উত্তর অস্ট্রেলিয়ার শহরগুলো বাঙালিদের আকৃষ্ট করে না। তবে উত্তর অস্ট্রেলিয়ায় ধীরে ধীরে বাড়ছে চাকরি ও ব্যবসার সুযোগ।

এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড দিনদিন বাড়ছে। অনেক নতুন প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে, মাঝারি শহরগুলোর বাইরে শহরতলী বড় হচ্ছে, গড়ে উঠছে বড় বড় আবাসিক এলাকা।

অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের রাজধানী ব্রিসবেন এমনই একটি শহর। জনসংখ্যার দিক দিয়ে এটি অস্ট্রেলিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম শহর, জনসংখ্যা প্রায় আড়াই লাখ। বাংলাদেশের আঙ্গিকে অবশ্য এক বড় শহর বলা যায় কিনা সন্দেহ!  

ব্রিসবেনে বসবাসরত বাঙালির সংখ্যা হবে আনুমানিক পাঁচ হাজার। সংখ্যাটি বিশাল না হলেও এখানে প্রবাসী বাঙালিরা বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বেশ সক্রিয়, এটা বলা যায়। এখানে ‘বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ইন ব্রিসবেন’ নামে প্রবাসীদের একটি সংগঠন রয়েছে।

সংগঠনটি বছরের নির্দিষ্ট সময়ে বিভিন্ন রকম অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। ব্রিসবেনে পহেলা বৈশাখ অনুষ্ঠানও আয়োজন করে থাকে সংগঠনটি। চলতি বছর ১৮ এপ্রিল কিউঙ পার্কে এই মেলার আয়োজন করা হয়েছিলো।

এর প্রধান শাহিদুজ্জামান আলম জানালেন উৎসাহব্যঞ্জক তথ্য, "এবারের পহেলা বৈশাখে আশাতীত লোকসমাগম হয়েছিলো এবং খাবারের স্টলগুলোর খাবার শেষ হয়ে গিয়েছিল দুপুরের মধ্যেই!"

ব্রিসবেনের পহেলা বৈশাখ অনুষ্ঠানের উপস্থিত দর্শক / সৌজন্যে - বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ইন ব্রিসবেন  

ক্রিকেট বিশ্বকাপের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, "বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ক্রিকেট দলকে আমরা সংবর্ধনাও দিয়েছিলাম।”

এখানে বসবাসরত বাঙালির সংখ্যা বিশ্বের অন্য কিছু শহরের মতো বড় না হলেও ১৯৯৩ সাল থেকেই এখানে চলছে 'ব্রিসবেন বাংলা স্কুল'।  

আর অবাক করার মতো হলেও ব্রিসবেনের বাঙালিদের আছে নিজস্ব একটি রেডিও স্টেশন!  ‘রেডিও ফোরইবি’ নামের এই কমিউনিটি রেডিও ২০০০ সালে শুরু করেন আহমেদ ফরিদুর রহমান।

রহমান জানান, ৯০ দশকের দিকে ব্রিসবেনে বাঙালির সংখ্যা ছিল সর্বসাকূল্যে ২৫০ জনের মতো।শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসবাসরত বাঙালিদের মধ্যে একধরনের যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবেই শুরু করা হয় এই রেডিও।

তখন শ্রোতার সংখ্যা কম থাকলেও সবার কাছ থেকে উৎসাহ পেয়েছিলেন বলে জানান রহমান। ২০০৩-০৪ সালের পর থেকে ব্রিসবেনে বাঙালির সংখ্যা বাড়তে শুরু করে আর সেই সূত্রে রেডিও চ্যানেলটির পরিচিতি ও শ্রোতার সংখ্যাও বেড়েছে। তবে রেডিওটি শুধুমাত্র প্রতি বুধরাত রাতে অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে থাকে।

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা সরাসরি আমাদের জানান। নাম, ঠিকানা ও সংশ্লিষ্ট ছবিসহ লেখা পাঠিয়ে দিন এই ঠিকানায়  probash@bdnews24.com