সিঙ্গাপুরে হয়ে গেল বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট সামিট

সিঙ্গাপুরের বাংলাদেশ হাই কমিশন ও মাইডাস টাচ এশিয়ার যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হল বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০১৫।

হোসেন মোঃ আল আমিন, সিঙ্গাপুর থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 August 2015, 01:11 PM
Updated : 28 August 2015, 01:11 PM

বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে বৃস্পতিবার আয়োজিত এই সম্মেলনে অংশ নেন সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ভারত, চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়াসহ আরও বেশ কয়েকটি দেশের ব্যবসায়ীরা।

বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এই সম্মেলনে তার বক্তব্যে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার আহবান জানান। তিনি বলেন, “বিদেশীদের বিনিয়োগের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ প্রয়োজনীয় সব ধরনের সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হবে।”

বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “বতর্মানে  বাংলাদেশে বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ বিরাজ করছে, অনেক দেশের বিনিয়োগকারীরা এখন বিনিয়োগ করছে।  

“বাংলাদেশকে একসময় তলাবিহীন ঝুড়ি আখ্যা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু আজ বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি নয়। বাংলাদেশ এখন ৭২৯ ধরনের পণ্য পৃথিবীর ১৯২টি দেশে রপ্তানি করছে। রপ্তানি আয় এখন ৩১ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।”

তোফায়েল আহমেদ জানান, বাংলাদেশ সরকার সারাবিশ্বে রপ্তানি বাজার সৃষ্টির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তৈরি পোশাক, চামড়া, ওষুধ, আসবাবপত্র, কৃষি পণ্য, আইটি ও জাহাজ নির্মাণ শিল্পকে আগ্রাধিকার দিচ্ছে সরকার। সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ হাই কমিশনের আয়োজনকে দৃষ্টান্ত হিসাবে নিয়ে দূতাবাসগুলোর মাধ্যমে অন্যান্য দেশেও এই ধরনের আয়োজন করবে বাণিজ্য মন্ত্রনালয়। 

প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গহর রিজভী বাংলাদেশে বিদ্যমান কিছু সম্ভবনার কথা তুলে ধরেন বিভিন্ন দেশ থেকে আগত ব্যবসায়ীদের সামনে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ সরকার বিদেশীদের বিনিয়োগের জন্য সব ধরনের সুযোগ সুবিধা ও নিরাপত্তা দিচ্ছে। বাংলাদেশে এখন অনেক দক্ষ শ্রমিকও রয়েছে। প্রতিবছরই জিডিপি বাড়ছে, সুতরাং আপনারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে অবশ্যই লাভবান হবেন।”

এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমাদ বলেন, “বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত দেশ হবার পথে। আমাদের সম্ভাবনার কথা পৃথিবীর সব দেশে জানাতে হবে আর তাহলেই দেশে  বিনিয়োগ বাড়বে।”

সিঙ্গাপুরের বড় কোম্পানি স্যামর্কপ মেরিনের সহসভাপতি তান চ্যাং গুয়ান বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেছি। রাজশাহীর মাতাবাড়ি ও সিরাজগঞ্জে দুটি বিদ্যুৎ প্রকল্পে আমরা বিনিয়োগ করেছি।” তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে বিদূৎ ও জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে।”

পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক জানান সমবেত ব্যবসায়ীদের জানান, বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে এখন পর্যন্ত কেউ পুঁজি হারায়নি কারণ, পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে স্বল্প খরচে পণ্য উৎপাদন করা যায়। তিনি আরও জানান,  বাংলাদেশ থেকে উৎপাদিত পণ্য সহজেই অন্যান্য দেশে পাঠানো যায়।

সম্মেলনের শুরুতে সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশের হাই কমিশনার মাহবুব উজ জামান বলেন, “এই সম্মেলনের মাধ্যমে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের সিঙ্গাপুরসহ বেশ কয়েকটি দেশের বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার সুযোগ তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি, তৈরি পোশাক, ওষুধ, চামড়াজাত পণ্য ও জাহাজ খাতে বিনিয়োগের বড় সুযোগ রয়েছে।”  

দিনব্যাপী এই সম্মেলনে তথ্যপ্রযুক্তি, চামড়াজাত পণ্য, তৈরি পোশাক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, জাহাজ নির্মাণ, টেলিযোগাযোগ, কৃষি, খাদ্য প্রক্রিয়াজাত পণ্য ও ওষুধ শিল্প নিয়ে দুইটি প্যানেল আলোচনা হয়।

প্যানেল আলোচনায় বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন মেট্রোপলিটন চেম্বারের সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, মোহাম্মদি গ্রুপের রুবানা হক, এনার্জি পাওয়ার জেনারেশনের মো. হুমায়ুন রশিদ, হাবিবুল্লাহ এন করিম, ড.আরিফ দৌলা, ওয়ের্স্টান মেরিনের মোঃ সাইফুল ইসলাম, এম নুরুল কবির এবং জাতীয় রাজস্ব র্বোডের সচিব নেয়াজুর রহমান প্রমুখ।

সম্মেলনের সহযোগিতায় ছিল বাংলাদেশ বিজনেস চেম্বার অব সিঙ্গাপুর।

প্রবাস জীবনের গল্প ও অভিজ্ঞতা এখন থেকে আমাদের সরাসরি জানাতে পারেন। পুরো নাম ও সংশ্লিষ্ট ছবিসহ লেখা পাঠিয়ে দিন এই ঠিকানায়  probash@bdnews24.com