নির্বাচন দিন, সুষ্ঠু হলে মেনে নেব: খালেদা

সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, সুষ্ঠু হলে যে কোনো ফল তারা মেনে নেবেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 July 2015, 04:48 PM
Updated : 6 July 2015, 04:48 PM

সোমবার রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে ‘বিকল্পধারা বাংলাদেশ’ আয়োজিত ইফতার অনুষ্ঠানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

খালেদা জিয়া বলেন, “সত্যিকারভাবে সকলের অংশগ্রহণে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে। সেখানে যারাই জিতবে, তারাই সরকার গঠন করবে। এখানে বিভেদ-বিভাজন নয়, সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করলেই আমরা দেশটাকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে পারবো।”

এর মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদের প্রতি সন্মান প্রদর্শন এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বর্তমান সরকারকে ‘অনির্বাচিত’ আখ্যায়িত করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, “বর্তমান অগণতান্ত্রিক ও অনির্বাচিত সরকারের আমলে মহিলারা প্রতিনিয়ত নির্যাতিত ও অত্যাচারিত হচ্ছে। জাতীয় সংসদে মহিলারা অপমানিত হচ্ছে।”

‘মহিলারা শো-পিস’- সংসদে এইচএম এরশাদের এরকম বক্তব্যের সমালোচনা করে খালেদা জিয়া বলেন, “তারা স্বঘোষিত বিরোধী দল। যার বউ হয়েছেন লিডার অব দ্য অপজিশন, বিনা নির্বাচনে লিডার অব দ্য হাউজ কিংবা বিরোধী দলীয় নেতা দুই জনই মহিলা। সেই সংসদকে যদি বলা হয়, মহিলা সব শো-পিস, যেখানে জনসংখ্যার ৫০ ভাগ মহিলা রয়েছেন।”

সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “আজ সুষ্ঠু নির্বাচন প্রয়োজন। আমরা বলি না- মারামারি, খুনাখুনি, ব্যালট বাক্স ছিনতাই করে ক্ষমতায় যাব, জিতব। আমরা অমুক হবো, তমুক হবো। সেটা নয়।”

অনুষ্ঠানে বিকল্পধারার সভাপতি সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, “ক্ষুদ্র-তুচ্ছ, ভুল-ভ্রান্তি ও ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। মনে রাখতে হবে, শ্রদ্ধা করে কেউ কখনো ছোট হয় না। আর হিংসা করে কেউ কখনো বড় হয় না।”

“প্রেসিডেন্ট জিয়া বলতেন রাজনীতি করতে হলে হৃদয়টাকে বড় করতে হবে। তার এই বক্তব্য হউক রাজনীতির সংকট থেকে উত্তরণে মহামন্ত্র। আসুন আমরা আল্লাহর কাছে সাহায্য চাই। এই রোজায় একটি ঐক্যবদ্ধ প্লাটফর্মের রাজনীতির মাধ্যমে দেশ ও জনগণের মুক্তির পথে আহ্বান করি।”

বক্তব্যের শুরুতে দেশ গঠনে জিয়াউর রহমানের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কথাও স্মরণ করেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন মহাসচিব বি চৌধুরী।

খালেদা জিয়ার সঙ্গে এক টেবিলে বিকল্পধারার সভাপতি সাবেক রাষ্ট্রপতি একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ছাড়াও জাতীয় পার্টির কাজী জাফর আহমদ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির আসম আবদুর রব, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, বিএনপির আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিকল্পধারার মহাসচিব অবসরপ্রাপ্ত মেজর আবদুল মান্নান ও যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি চৌধুরী।

মুসলিম লীগের নুরুল হক মজুমদার, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, হামদুল্লাহ আল মেহেদি, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, ইসলামী ঐক্যজোটের মুফতি ফয়েজুল্লাহ, কল্যাণ পার্টির এমএম আমিনুর রহমান প্রমুখ নেতারা ছিলেন।

বিএনপি নেতাদের মধ্যে নুরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, এজেডএম জাহিদ হোসেন, এবিএম আশরাফউদ্দিন নিজান, শিরিন সুলতানা, রাবেয়া সিরাজ, শামা ওবায়েদ, ঢাকা উত্তরের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ইফতারে অংশ নেন।

সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ, মাহফুজউল্লাহ, ব্যারিস্টার রুহিন ফারহানা ছাড়াও একজন ব্রিটিশ কূটনীতিকও ছিলেন ইফতারে।