দেশের অগ্রযাত্রার অংশীদার হবেন সব সেনা সদস্য: প্রধানমন্ত্রী

সেনাবাহিনীর প্রতিটি সদস্য দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার অংশীদার হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 July 2015, 04:28 PM
Updated : 5 July 2015, 04:29 PM

রোববার প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের ৪০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমার প্রত্যাশা, আপনারা সর্বোচ্চ দেশপ্রেম ও কর্তব্য পরায়নতার মাধ্যমে বাংলাদেশকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিবেন।”

ঢাকা সেনানিবাসে পিজিআর সদরদপ্তরে বিকালে এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক, তিন বাহিনীর প্রধানসহ সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা এবং পিজিআরের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

১৯৭৫ সালের ৫ জুলাই প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্ট প্রতিষ্ঠিত হয়।

পিজিআরের সঙ্গে নিজের সম্পর্কের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দায়িত্ব পালনকালে প্রতিদিনই গার্ড সদস্যদের সাথে আমার দেখা হয়। রোদ, বৃষ্টি, ঝড় উপেক্ষা করে আপনারা বিশ্বস্ততা, আনুগত্য, শৃঙ্খলা ও পেশাদারিত্বের সাথে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেন।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনে প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছি।”

পিজিআর তথ্য-প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও পেশাগত অনুশীলন চালিয়ে যাবে বলেও প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।

রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধানের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে পিজিআর সদস্যদের একাগ্রতা ও আত্মোৎসর্গের মনোভাব যেন চিরদিন বজায় থাকে সে প্রত্যাশা করেন শেখ হাসিনা।

২০১৩ সালের ৮ এপ্রিল পিজিআরকে ‘স্বতন্ত্র’ মর্যাদা দেওয়া হয়। ওই বছরের ৭ অক্টোবর পিজিআরের নতুন সাংগঠনিক কাঠামোর অনুমোদন দেওয়া হয়।পিজিআরের জনবল এখন দুই হাজারে উত্তীর্ণ হয়েছে।

গণভবনে ১৫০ জন গার্ড সদস্যের জন্য বসবাসযোগ্য একটি ব্যারাক নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।

২০১৪ সালের ১ এপ্রিল থেকে সেনাবাহিনীর জেসিওদের প্রথম শ্রেণি (নন ক্যাডার) এবং সার্জেন্টদের দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদায় উন্নীত করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীর উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকারের পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন।

পাঁচটি সেনানিবাসে আর্মি মেডিকেল কলেজ, তিনটি সেনানিবাসে আর্মি ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় এবং দুটি সেনানিবাসে আর্মি ইনস্টিটিউট অফ বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

সেনাসদস্যদের আবাসন সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে আধুনিক ব্যারাক নির্মাণ করা হয়েছে।

ফোর্সেস গোল-২০৩০ অনুযায়ী সেনাবাহিনীর উন্নয়ন করা হচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

সেনাসদস্যদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আমাদের সরকার আপনাদের কল্যাণে এসকল পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে যাতে আপনাদের চাকরি ও পারিবারিক জীবন স্বাচ্ছন্দ্যময় হয়। দেশ ও জাতির সেবায় আপনারা যাতে আরও ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত হন।”

শেখ হাসিনা তার পরিবারের সদস্যদের স্মৃতিচারণ করে বলেন, “সেনাবাহিনীর সাথে রয়েছে আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক। যখনই আপনাদের মাঝে আসি তখন আমার ভাইদের কথা মনে পড়ে যায়। আমার দুই ভাই শেখ কামাল ও শেখ জামাল বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য ছিলেন।”

প্রধানমন্ত্রী পিজিআর সদরদপ্তরে পৌঁছে কোয়ার্টার গার্ড পরিদর্শন এবং সালাম গ্রহণ করেন।

পিজেআরে কর্মরত অবস্থায় নিহতদের স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের হাতে অনুদান ও শুভেচ্ছা উপহার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে পিজিআরের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার কর্নেল মো. জাহাঙ্গীর হারুন শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন।

পরে প্রধানমন্ত্রী পিজিআরের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত বিশেষ ইফতার ও প্রীতিভোজে অংশ নেন।