বিচার বিভাগ আগের চেয়েও নিয়ন্ত্রিত: খালেদা

নির্বাহী বিভাগের হস্তক্ষেপে দেশের বিচার বিভাগ আগের চেয়েও ‘নিয়ন্ত্রিত’ বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 July 2015, 03:32 PM
Updated : 4 July 2015, 04:06 PM

শনিবার সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য আয়োজিত ইফতার অনুষ্ঠানে তিনি এ অভিযোগ করেন।

খালেদা জিয়া বলেন, “এই সুপ্রিম কোর্টের মিলনায়তন থেকে আমি বলতে চাই, দেশে কি আইনের শাসন আছে, সকলের জন্য আইন সমান- এটা কি সত্য কথা? না, তা ঠিক নয়। কারণ আমরা দেখেছি, সরকারি দল হলে এক রকম বিচার হয়, বিরোধী দল ও সাধারণ মানুষ হলে আরেক রকম। এটা চলতে পারে না।”

বিচার বিভাগ পৃথক হলেও স্বাধীন বিচার বিভাগ হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।

বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, “স্বাধীনতা এখনো হরণ ও খর্ব করা হয়। বরং এখন বিচার বিভাগ আরও বেশি নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। দেশে ন্যায় বিচার ও আইনের শাসন না থাকার কারণে আইনের দুইরকম প্রয়োগ হচ্ছে।”

ইফতার অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টসহ বিভিন্ন বারের তিন সহস্রাধিক আইনজীবী অংশ নেন।

সারাদেশে দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হচ্ছে জানিয়ে খালেদা বলেন, “বিএনপির এমন একজনও নেই, তার বিরুদ্ধে মামলা নেই। বিএনপির কি সব অপরাধী? আর আওয়ামী লীগের কি সব সুফি হয়ে গেছে?”

“বিএনপির নেতাকর্মীরা নাকি গাড়ি পোড়ায়। পুলিশও যেভাবে সাজিয়ে দেয় বিচারকরা তা ভালোভাবে দেখে না। তারা (বিচারক) একতরফা শাস্তি দেয়। এ কারণে আমাদের নেতাকর্মীদের দিনের পর দিন কারাগারে রাখা হয়, শাস্তি দেওয়া হয়।”

বিএনপি গাড়ি পোড়ানোর রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না বলেও দাবি করেন তিনি।

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর সমালোচনা করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, “এখন বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে দেওয়া হচ্ছে। তার মানে আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর ফলে বিচারকরা বেশি নিয়ন্ত্রিত। এজন্য দেশে আজ ন্যায়বিচার নেই, আইনের শাসন নেই।”

অবিলম্বে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “প্রত্যেকে বলছে, একটা নির্বাচন দরকার। তবে সেটা আওয়ামী লীগ মার্কা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মতো নয়। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সব দলের অংশগ্রহণমূলক একটি গ্রহণযোগ্যমূলক সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে।”

খালেদা জিয়ার সঙ্গে এক টেবিলে সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ আইনজীবী অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি টিএইচ খান, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন ছাড়াও ছিলেন মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, এজে মোহাম্মদ আলী, শাহজাহান ওমর, জয়নুল আবেদীন, আমীনুল হক, মীর মো. নাসির, গরীবে নেওয়াজ, আহমেদ আজম খান, নজরুল ইসলাম খান, লুৎফে আলম, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক মাহবুবউদ্দিন খোকন ও ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মাসুদ আহমেদ তালুকদার।

এছাড়া সুপ্রিম কোটের আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া, খোরশেদ আলম, মহসিন মিয়া, বদরুদ্দোজা বাদল, ইকবাল হোসেন, বোরহান উদ্দিন, গোলাম মুস্তফা খান, ওমর ফারুক ফারুকীসহ জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরাও ছিলেন।

শিক্ষাবিদ অধ্যাপক এমাজ উদ্দীন আহমেদ, অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, অধ্যাপক সদরুল আমিন, অধ্যাপক আফম ইউসুফ হায়দার, কলামনিস্ট মাহফুজউল্লাহ, বিএনপির চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আবদুল্লাহ আল নোমান, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ফজলুল হক মিলন, খাইরুল কবীর খোকনও ইফতার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।