ইসির প্রতি বিদেশিদের অনাস্থা প্রমাণিত: বিএনপি

একটি প্রকল্প থেকে ইউএনডিপির সরে যাওয়া নির্বাচন কমিশনের প্রতি বিদেশিদের অনাস্থা প্রমাণ করেছে বলে দাবি করেছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 July 2015, 12:06 PM
Updated : 4 July 2015, 01:32 PM

“আমরা মনে করি, এভাবে ফান্ড তুলে নেওয়ার ঘটনা সরকারের নির্বাচনী ব্যবস্থার প্রতি আমাদের বিদেশি বন্ধুদের অনাস্থার বহিঃপ্রকাশ,” বলেছেন বিএনপির মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন।

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বিভিন্ন নির্বাচন নিয়ে পশ্চিমাদের অসন্তোষের মধ্যে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি-ইউএনডিপি ইসির ‘নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শক্তিশালীকরণ’ প্রকল্প থেকে তদের তহবিল প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘোষণা দেয়।

শনিবার নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই বিষয় নিয়ে কথা বলেন বিএনপি নেতা রিপন।

তিনি বলেন, “বর্তমান সরকারের প্রতি দেশের জনগণের আস্থা নেই। আন্তর্জাতিক মহলেরও আস্থা থাকছে না।”

দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপি বর্তমান নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে কমিশনারদের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে। 

রিপন বলেন, “বর্তমান নিবার্চন কমিশন সরকারের একটি সেবাদাসমূলক, আজ্ঞাবাহী ও নির্লজ্জ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। তারা ভবিষ্যতে নিরপেক্ষ নির্বাচন করার সামর্থ্য হারিয়ে ফেলেছে। এই কমিশনকে রেখে স্থানীয় সরকার নির্বাচনও সুষ্ঠুভাবে, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কিংবা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে জনগণের ভোট প্রদান অথবা তাদের ভোটের সুরক্ষা হতে পারে- এর কোনো সম্ভাবনা আমরা দেখছি না।”

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ দাবি করে সব দলের সঙ্গে আলোচনা করে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবি জানান তিনি।

“একতরফাভাবে সার্চ কমিটির নামে দলবাজ লোকদের নির্বাচন কমিশনে বসানো চলবে না। নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজে যারা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ আছেন, তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে একটি শক্তিশালী নিবার্চন কমিশন গঠন করা হোক।”

নাসিমের বক্তব্যের প্রতিবাদ

খালেদা জিয়ার রাজনীতি ‘লেডিস ক্লাবে সীমাবদ্ধ’- স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন আসাদুজ্জামান রিপন।

তিনি বলেন, “আমাদের পার্টি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া রাস্তায় বেরুলে, জনসভা করলে লক্ষ জনতার কেমন ঢল হয়, তা সরকারের না জানার কথা নয়।

“তারা এতে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক চলাচলে বাধার সৃষ্টি করছে। এখন আবার পরিহাস করে বলেছেন, লেডিস ক্লাবে সীমাবদ্ধ হয়েছে।”

বিরোধী দলকে কর্মসূচি পালনে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে রিপন বলেন, “রাজনৈতিক দলকে মাঠে নামতে দেয় না, ঘরের মধ্যে ঠুকিয়ে রেখেছেন। এটা কী সরকারের কোনো সাফল্য?

“এটা স্বৈরাচারী আচরণের লক্ষণ। একটি সরকার অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী হয়ে উঠলে তারা বিরোধী দলকে রাস্তায় নামতে দেয় না।”

শুক্রবার নরসিংদীর পলাশের বিএনপির ইফতার পার্টিতে হামলার নিন্দা জানিয়ে সরকারকে হুঁশিয়ারও করেন রিপন।

“সরকারকে বলতে চাই, অনতিবিলম্বে আপনাদের ক্যাডার বাহিনীকে ঠেকান। রোজার মাস বলে আমরা ওদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে চাই না। বিভিন্ন জায়গায় যদি আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের ওপর এভাবে হামলা হতে থাকে, আমাদের কর্মীরা কতদিন এভাবে চেয়ে চেয়ে দেখবে। এখনও সময় আছে, আমরা সরকারকে সর্তক করছি।”

কাশিমপুর কারাগারে বন্দি দলের যুগ্ম মহাসচিব ‘গুরুতর অসুস্থ’ রুহুল কবির রিজভীর মুক্তি দাবিও জানান রিপন।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, আবদুস সালাম আজাদ, আবদুল লতিফ জনি, শ্যামা ওবায়েদ উপস্থিত ছিলেন।