সরকারের পরিণতি হবে ‘হীরক রাজা’র মত: খালেদা

জনগণ সরকারের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছে দাবি করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, কিছুদিন পরে ক্ষমতাসীনরা ‘লুকানোরও’ জায়গা পাবেন না।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 July 2015, 03:40 PM
Updated : 1 July 2015, 03:40 PM

বর্তমান সরকারের পরিণতি ‘হীরক রাজা’র মতো হবে বলে মন্তব্য করেন বিএনপি নেত্রী।

তিনি বলেন, “এই রমজান মাসে আমরা দোয়া করব, যাতে এই ‘জালেম অত্যাচারী’ সরকারের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করে। আল্লাহতালা এই ‘জালেম-অত্যাচারীদের’ পরীক্ষা করছে- তারা কত দুর্নীতি করতে পারে, কত খারাপ কাজ করতে পারে, কত মিথ্যা কথা বলতে পারে।

“যখন দড়ি ধরে টান দেবে, কেটে দেবে, তখন তারা খান খান হয়ে যাবে। সেই হীরক রাজার মত ‘দড়ি ধরে মারো টান, রাজা হবে খান খান’।”

বুধবার রাজধানীর বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটির ‘রাজদর্শন’ এ জোট শরিক লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপির ইফতার অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর জামিনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “একজন নেতাকে জেল দেওয়া হয়েছে, তিনি ছাড়া পেয়ে জনগণের ভয়ে লুকিয়ে আছেন।

“আমি বলতে চাই- এখনও সময় আছে, জায়গা ঠিক করে রাখুন। পরে সময়ও পাবেন না, লুকানোর সময় থাকবে না, পালাবারও পথ পাবেন না।”

তিনি বলেন, “জনগণ এখন জেগে উঠছে। অনেকে জনগণের ভয়ে লুকিয়ে আছে। কিছুদিন পরে আপনাদেরও লুকাতে হবে। তখন সব জায়গা থেকে খুঁজে খুঁজে বের করবে। আপনারা লুকানোরও সময় পাবেন না।”

ব্রাজিল থেকে পচা গম আনা হয়েছে অভিযোগ করে খালেদা জিয়া বলেন, “গ্রামের অবস্থা খুবই খারাপ। এখন বন্যা ও নদীভাঙন নানা সমস্যায় জর্জরিত। রিলিফ দিচ্ছে না। এখন শুনা যাচ্ছে, ব্রাজিল থেকে আনা পচা ওই গম আটা বানিয়ে কাবিখা-টেস্ট রিলিফ কর্মসূচির মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হবে। মানুষ ওই পচা গম খেয়ে অসুস্থ হয়ে ধুকে ধুকে মরবে।

“অর্থাৎ এই সরকার চুরি করছে, দুর্নীতি করছে, পচা গম, পচা জিনিস সাধারণ মানুষকে খাওয়াচ্ছে।”

সারা দেশে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের লোকজন দখলদারি-চাঁদাবাজি করছে অভিযোগ করে বিএনপি নেত্রী বলেন, “অথচ মামলা দিচ্ছে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। তাদের জেলে নেওয়া হচ্ছে। জামিন দেওয়া হয় না। যদি জামিন পায়, আবার জেল গেইট থেকে ধরে নিযে যাওয়া হয়।”

পুলিশ ‘একচোখা’ ভূমিকা পালন করছে অভিযোগ তুলে তার সমালোচনা করেন খালেদা জিয়া।

“পুলিশ হচ্ছে জনগণের সেবক। অথচ তারা ২০ দলীয় নেতা-কর্মীদের উপর যেভাবে অত্যাচার করছে তা দুঃখজনক। কিছু কিছু পুলিশ আছে যারা অতি উৎসাহী হয়ে এসব কাজ করছে। এটা তাদের জন্য ভালো হচ্ছে না।”

ভবিষ্যতে এজন্য তাদের ‘সমস্যায়’ পড়তে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

খালেদা জিয়ার সঙ্গে এক টেবিলে এলডিপির চেয়ারম্যান অলি আহমেদ ছাড়াও জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, জামায়াতে ইসলামীর আবদুল হালিম, ইসলামী ঐক্যজোটের আবদুল লতিফ নেজামী, খেলাফত মজলিশের অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ইসহাক,  কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জাগপার শফিউল আলম প্রধান, এনডিপির খন্দকার গোলাম মূর্তজা, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ন্যাপের জেবেল রহমান গানি,  ন্যাপ-ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, বিজেপির সালাহউদ্দিন মতিন প্রকাশ, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, জমিয়তে উলামা ইসলামের মাওলানা মহিউদ্দিন ইকরাম, পিপলস লীগের গরীবে নেওয়াজ, মুসলিম লীগের এএইচএম কামরুজ্জামান খান, ডিএলের সাইফুদ্দিন মনি, আবু তাহের চৌধুরী, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ ও সাহাদাত হোসেন সেলিম ছিলেন।

বিএনপি নেতাদের মধ্যে আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সেলিমা রহমান, রুহুল আলম চৌধুরী, আহমেদ আজম খান, আসাদুজ্জামান রিপন, নাজিম উদ্দিন আলম, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শাহজাহান মিলন, জহিরুল হক শাহজাদা মিয়া, শ্যামা ওবায়েদ ইফতারে অংশ নেন।

২০ দলীয় জোটের রিদওয়ান উল্লাহ শাহিদী, খন্দকার লুৎফর রহমান, মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, সৈয়দ মাহবুব হোসেন, এমএম আমিনুর রহমান, মঞ্জুর হোসেন ঈসা, শাহ আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহও ছিলেন ইফতার অনুষ্ঠানে।

এছাড়া অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমেদ, অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, মামুন আহমেদ, কলামনিস্ট সাদেক খান, মাহবুবউল্লাহ, কাজী সিরাজ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবদুল হাই শিকদার প্রমুখ ইফতারে উপস্থিত ছিলেন।