এখনও কেন পদে, উকিল নোটিস মায়াকে

দুর্নীতির মামলায় খালাসের রায় বাতিল হওয়ার পর মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য পদে থাকার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একটি উকিল নোটিস গেছে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার কাছে।

সুপ্রিম কোর্ট প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 June 2015, 11:20 AM
Updated : 30 June 2015, 11:25 AM

এই রাজনীতিককে দেওয়া হাই কোর্টের খালাসের রায় সুপ্রিম কোর্ট বাতিল করে দেওয়ার পর তার মন্ত্রিত্ব ও সংসদ সদস্যপদ ছাড়তে দাবির মধ্যেই এই উকিল নোটিস গেল। 

মঙ্গলবার নোটিসটি পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দ।

কোন কর্তৃত্ববলে এখনও মন্ত্রী ও এমপি পদে রয়েছেন- দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মায়ার কাছে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এর জবাব না পেলে হাই কোর্টে রিট আবেদন করবেন বলে জানিয়েছেন এই আইনজীবী। 

ইউনুস আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রেজিস্ট্রার্ড ডাকযোগে মন্ত্রীর মন্ত্রণালয়ের ঠিকানায় ওই নোটিস পাঠানো হয়েছে।

“সংবিধানের ৬৬ এর ২ (ঘ) দফা অনুসারে দণ্ডিত ব্যক্তি সংসদ সদস্য বা মন্ত্রী পদে থাকতে পারেন না,” বলছেন তিনি।

সংবিধানের ৬৬ (২) (ঘ) অনুচ্ছেদে সংসদে নির্বাচিত হওয়ার যোগ্যতা ও অযোগ্যতার বিষয়ে বলা হয়েছে, যদি কেউ নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অন্যূন দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তার মুক্তিলাভের পর পাঁচ বছরকাল অতিবাহিত না হয়ে থাকে, তবে তিনি সংসদ সদস্য থাকার যোগ্য হবেন না।

আট বছর আগের একটি দুর্নীতি মামলায় গত ১৪ জুন আওয়ামী লীগ নেতা মায়াকে খালাস করে হাই কোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করে নতুন করে আপিল শুনানির আদেশ দেয় আপিল বিভাগ।

ওই আদেশের পর মায়ার মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য পদে থাকা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়।

মায়ার আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদারের দাবি, যেহেতু আপিল বিচারাধীন, সেহেতু মন্ত্রিত্ব ও সংসদ সদস্য পদ নিয়ে ৬৬ (২) (ঘ) অনুচ্ছেদটি এক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।

অন্যদিকে মামলাকারী দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী খুরশিদ আলমের মত, মায়ার সংসদ সদস্য পদ ধরে রাখা এখন উচিত নয়।

তবে এই প্রশ্নের মীমাংসা সংসদে হওয়া উচিত বলে মনে করেন এই আইনজীবী।

বিষয়টি নিয়ে মায়ার নীরবতার মধ্যে বিএনপি ইতোমধ্যে তার পদত্যাগের দাবি তুলেছে।   

২০০৭ সালের ১৩ জুন জরুরি অবস্থার সময় দুদকের করা ওই মামলায় সম্পদের তথ্য গোপন ও অবৈধভাবে ২৯ লাখ টাকার সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ আনা হয় মায়ার বিরুদ্ধে।

পরের বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত দুই ধারায় মায়াকে মোট ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেয়। সেই সঙ্গে তাকে পাঁচ কোটি টাকা জরিমানাও করা হয়।

ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মায়া ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে যান। তার আপিলের শুনানি করে ২০১০ সালের ২৭ অক্টোবর হাই কোর্ট বেঞ্চ তাকে খালাস দেয়, যা বাতিল হয়ে যায় আপিল বিভাগের আদেশে।