আমাদের বিব্রত করবেন না: ইনুকে ইঙ্গিত করে সুরঞ্জিত

খালেদা জিয়ার আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ হবে না- তথ্যমন্ত্রী হিসেবে হাসানুল হক ইনুর এই বক্তব্যের পর বিব্রতকর কোনো কথা না বলতে মন্ত্রীদের পরামর্শ দিয়েছেন সরকারের বৃহত্তম শরিক দল আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 June 2015, 11:57 AM
Updated : 29 June 2015, 05:31 PM

“মাননীয় মন্ত্রীরা আপনারা যে দলেরই হোক না কেন, মন্ত্রী হয়ে সংসদে যখন বলেন, তখন তার দায়-দায়িত্ব তো প্রধানমন্ত্রীকেও নিতে হয়। এটা চিন্তা ভাবনা করবেন, যাতে আমরা বিব্রত না হই,” সোমবার সংসদে বলেছেন সাবেক এই মন্ত্রী।

দুদিন আগেই সংসদে জাসদ সভাপতি ইনু বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নিয়ে কথা বলেন। তা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে বিএনপি বলেছে, আদালতের রায় কী হবে তা এখন মন্ত্রীরাই বলে দিচ্ছে।

২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করে সংসদের বাইরে থাকা খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কয়েকটি দুর্নীতির মামলা বিচারাধীন। খালেদাকে রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে বের করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এই মামলাগুলো করা হয়েছে বলে বিএনপির দাবি।

সুরঞ্জিত বলেন, “আমরা সংবিধানের শাসনে বিশ্বাস করি। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট, ২১ অগাস্ট এগুলোর বিচার হবেই। বিচার যেটা হবে, সেটা হবে, বিচার বিভাগ আলাদা।”

হাসানুল হক ইনু

জোট শরিক দল জাসদের সভাপতি ইনুর বক্তব্যের দিকে ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য সুরঞ্জিত বলেন, “এই প্রজাতন্ত্রে আমি নির্বাচন করতে পারব, কি পারব না, কবে করব, কি করব না- এই সিদ্ধান্ত তো সংসদ দেবে না।

“তার জন্য আদালত আছে, উচ্চতর আদালত আছে, তার জন্য নির্বাচন কমিশন আছে, তার জন্য সংবিধান আছে।”

“আমাদের প্রধানমন্ত্রী দিনরাত কষ্ট কইরা কাজ করতেছেন, তিনি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন বলেই গণতন্ত্রের জন্য জীবন বাজি রাইখ্যা কাজ করতেছেন। গণতন্ত্রই আমাদের প্রধান কথা। গণতন্ত্রের বাইরে আমরা কোনো কথা বলব না,” বলেন তিনি।

এই প্রসঙ্গে প্রবীণ এই রাজনীতিক আরও বলেন, “পলিটিকাল ডিক্লারেশন দিয়ে কাউকে আনট্রিট করা যায় না। ’৫৮ সালে আইয়ুব খান করছে, তার বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু বাঘের মতো গর্জন কইরা ডাক দিছিলেন, ছাত্রসমাজ দাঁড়াইছিল।”

খেলাপি ঋণ আদায়ের তাগিদ

বাংলাদেশের ৫৬টি ব্যাংকে ৫৫ হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণ আদায়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।

সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত

 

সংসদে বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি বলেন, “৫৫ হাজার কোটি টাকা যদি খেলাপি ঋণ হয়, তাহলে আলাপি ঋণ কত?

“আলাপি ঋণ হইল, এইটা মাইরা খাইছে। এইটা খেলাপির মধ্যেও নাই। হল-মার্ক টলমার্ক, এরা নিছে কত?”

খেলাপি ঋণ আদায়ে অর্থঋণ আদালতকে কাজে লাগাতে না পারায় সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনাও করেন ক্ষমতাসীন দলের এই সংসদ সদস্য।

“৬-৭ বছরেও খেলাপি ঋণ আদায়ে আমরা অর্থঋণ আদালতকে কাজে লাগাতে পারলাম না। এইগুলার ব্যাপারে আমি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করব। এটাকে কমিয়ে আনতে হবে।”

ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে ব্যাংকিং কমিশন গঠনের প্রস্তাবও দেন তিনি।