সাকার আপিল: আসামি পক্ষের সাক্ষ্য উপস্থাপন শুরু

যুদ্ধাপরাধের দায়ে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আপিলের ওপর শুনানিতে পেপারবুক থেকে আসামিপক্ষের সাক্ষ্য উপস্থাপন শুরু করেছে আসামি পক্ষ।  

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 June 2015, 04:21 PM
Updated : 28 June 2015, 04:21 PM

রোববার প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্ব চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ সপ্তম দিনের মতো আপিলের শুনানি নেয়।

বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন- বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

এ দিন পেপারবুক থেকে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তার জেরা উপস্থাপন শেষে আসামি পক্ষের সাক্ষ্য উপস্থাপন শুরু করে বিএনপি নেতার আইনজীবী।

সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর সোয়া ১টা পর্যন্ত শুনানি চলে। এরপর আদালত সোমবার সাড়ে ১১টায় পরবর্তী শুনানির সময় নির্ধারণ করে।

আদালতে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পক্ষে শুনানি করেন এস এম শাহজাহান। তার সঙ্গে ছিলেন তানভীর আহমেদ আল-আমিন ও মো. মহিনুর রহমান।

রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোমতাজ উদ্দিন ফকির।

পরে শাহজাহান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পেপার বুক থেকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. নূরুল ইসলামের(রাষ্ট্রপক্ষের ৪১ নম্বর সাক্ষী) জেরা উপস্থাপন শেষ করেছি। রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষিগুলো উপস্থাপনের পর সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর (ডিডব্লিউ-১) দেওয়া সাফাই সাক্ষি তুলে ধরেছি।”

দেড় বছর আগে দেওয়া ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে ১৬ জুন থেকে সালাউদ্দিন কাদেরের আপিলের শুনানি শুরু হয়। এটি আপিল আদালতে আসা যুদ্ধাপরাধের পঞ্চম মামলা।

ট্রাইব্যুনালের রায়ে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে নয়টি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে দণ্ড দেওয়া হয়েছিল। ছয় দিনের শুনানিতে আসামিপক্ষ পেপারবুক থেকে এসব অভিযোগ ও এরপক্ষে প্রসিকিউশনের সাক্ষীর জেরা-জবানবন্দি উপস্থাপন করা হয়েছে বলে আসামিপক্ষের আইনজীবী জানান।  

রাউজানে কুণ্ডেশ্বরী ঔষধালয়ের মালিক নূতন চন্দ্র সিংহকে হত্যা, সুলতানপুর ও ঊনসত্তরপাড়ায় হিন্দু বসতিতে গণহত্যা এবং হাটহাজারীর এক আওয়ামী লীগ নেতা ও তার ছেলেকে অপহরণ করে খুনের দায়ে ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সালাউদ্দিন কাদেরকে মৃত্যুদণ্ড দেয়।

এছাড়া হত্যা, গণহত্যার পরিকল্পনা সহযোগিতা এবং লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও দেশান্তরে বাধ্য করার মতো তিনটি অভিযোগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্যকে ২০ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অপহরণ ও নির্যাতনের দুটি ঘটনায় তাকে দেওয়া হয় পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড।

রায়ে বলা হয়, প্রসিকিউশন তার বিরুদ্ধে ২৩টি অভিযোগ এনেছে, তার মধ্যে নয়টি (২ থেকে ৮, ১৭ ও ১৮ নম্বর অভিযোগ) সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

১, ১০, ১১, ১২, ১৪, ১৯, ২০ ও ২৩ নম্বর অভিযোগ প্রসিকিউশন প্রমাণ করতে পারেনি।আর প্রসিকিউশন শুনানির সময় কোনো সাক্ষী হাজির করতে না পারায় ৯, ১৩, ১৫, ১৬, ২১ ও ২২ নম্বর অভিযোগের মূল্যায়ন করেনি ট্রাইব্যুনাল।

সব দণ্ড থেকে বেকসুর খালাস চেয়ে ২০১৩ সালের ১০ অক্টোবর ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন সাবেক মন্ত্রী সালাউদ্দিন কাদের।