নরেন্দ্র মোদীর ঢাকা সফরের চার দিন আগে মঙ্গলবার সংসদ অধিবেশনে এই প্রস্তাব উত্থাপন করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে লেখা নিজের একটি কবিতাও পড়ে শুনিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা ফিরোজ।
ফিরোজ ধন্যবাদ প্রস্তাব উত্থাপনের পর দাঁড়িয়ে সাবেক মন্ত্রী সুরঞ্জিত ‘ভুলগুলো’ ধরিয়ে দেন। তবে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ‘ভুল’ সংশোধনের বিষয়ে কিছু বলেননি।
দুই দেশের ছিটমহল বিনিময় এবং অপদখলীয় ভূমির বিরোধ অবসানে ১৯৭৪ সালে চুক্তির পর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সব প্রক্রিয়া সারা হলেও সংবিধান সংশোধন না করে ভারত প্রক্রিয়া শেষ করতে পারছিল না।
দীর্ঘ দিনের তৎপরতার ফলে গত মে মাসের শুরুতে ভারতের পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে বাংলাদেশের সঙ্গে ভূমি বিনিময়ে সংবিধান সংশোধনের ওই প্রস্তাব (সীমান্ত বিল) পাস হয়।
ঝুলে থাকা বিষয়টির নিষ্পত্তি হওয়ায় বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে বিশেষ আলোচনার মাধ্যমে প্রতিবেশী দেশটির জনগণ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে ধন্যবাদ জানাতে মঙ্গলবার প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন প্রধান হুইপ ফিরোজ।
প্রস্তাবে বলা ছিল- “বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের দূরদর্শী কূটনৈতিক সাফল্যে সম্প্রতি ভারতের সংসদে স্থল সীমান্ত চুক্তি পাস হওয়ায় বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের বিশেষ আলোচনার মাধ্যমে ভারতের জনগণ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদীর সরকারকে ধন্যবাদ জানানো হউক।”
আ স ম ফিরোজ সংসদের কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ (১) বিধিতে প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন।
ওই বিধিতে বলা আছে, “এই বিধিসমূহের অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে এবং স্পিকার অন্যরূপ নির্দেশ না দিলে, প্রস্তাবের একটি প্রতিলিপিসহ প্রত্যেক প্রস্তাবের নোটিস সচিবকে সম্বোধন করিয়া লিখিতভাবে দিতে হইবে এবং নোটিস প্রদানকারী সদস্য উহাতে স্বাক্ষর করিবেন এবং উহা সংসদের নোটিস অফিসে জমা দিবেন।”
দিনের কার্যসূচি চূড়ান্ত করার আগে স্পিকারের অনুমোদনের বিধানও রয়েছে।
ফিরোজ নোটিসটি উত্থাপনের পর আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত দাঁড়িয়ে বলেন, “বক্তব্য দেওয়ার আগে নোটিসের কিছু ভুল সংশোধন করা দরকার।
“প্রস্তাবে বলা হয়েছে ‘শেখ হাসিনা সরকারের দূরদর্শী...’, এখানে হবে শেখ হাসিনা সরকারের কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক তৎপরতায়...।”
সুরঞ্জিত বলেন, “মাননীয় স্পিকার এখানে বলা হয়েছে, ‘ভারতের সংসদ’। ভারতে কোনো সংসদ নেই। এখানে হবে রাজ্যসভা ও লোকসভা। ‘স্থল সীমান্ত চুক্তি পাস’ হওয়ার কথা বলা হয়েছে। চুক্তি অনেক আগেই পাস হয়েছে। ভারতের পার্লামেন্টে চুক্তিটি অনুমোদিত হয়েছে।”
“... ‘জাতীয় সংসদে বিশেষ আলোচনার মাধ্যমে’ ডিলিট হবে। ভারতের জনগণ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও লোকসভা ও রাজ্যসভার সদস্যদের ধন্যবাদ জানানো হউক।”