দুই মামলায়ই মির্জা আব্বাসের জামিন আবেদন খারিজ   

নাশকতার দুই মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে হাই কোর্ট।

সুপ্রিম কোর্ট প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 May 2015, 03:15 PM
Updated : 25 May 2015, 03:16 PM

সোমবার বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুসের একক বেঞ্চের দেওয়া এই রায়ের ফলে এখন বিএনপির এই নেতা নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ না করলে গ্রেপ্তারের ঝুঁকিতে পড়বেন বলে আইনজীবীরা জানিয়েছেন।

বছরের শুরু থেকে বিএনপির আন্দোলনের মধ্যে অপ্রকাশ্যে থাকা মির্জা আব্বাস ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে প্রার্থী হওয়ার পর এই দুই মামলার জামিন চাইতে গত ১৩ এপ্রিল এক দিনের জন্য প্রকাশ্যে এসেছিলেন।

এই দুই মামলায় জামিন পেলে মির্জা আব্বাসে প্রকাশ্য নির্বাচনী প্রচারে আসবেন বলে জানিয়েছিলেন তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাস।

কিন্তু ২৮ এপ্রিল ভোটের আগে হাই কোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ বিভক্ত আদেশ দেওয়ায় তা নিয়ম অনুযায়ী প্রধান বিচারপতির হাত ঘুরে তৃতীয় বেঞ্চে যায়।

ফলে ভোটের প্রচারে মির্জা আব্বাসকে আর দেখা যায়নি। ভোটগ্রহণের মাঝপথে বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা আসে। ভোটের ফলাফলেও হেরেছিলেন ঢাকার সাবেক এই মেয়র।

হাই কোর্টের দ্বৈত বেঞ্চের বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের দেওয়া রায়ের সঙ্গে একমত পোষণ করে একক বেঞ্চ মির্জা আব্বাসের আগাম জামিন আবেদন খারিজ করেন বলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. বশির উল্লাহ জানিয়েছেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রায়ে বিচারপতি তাকে (আব্বাস) অবিলম্বে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এর ফলে তাকে অবিলম্বে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে, অন্যথায় তাকে গ্রেপ্তারে আইনগত কোনো বাধা নেই।”

আগাম জামিন আবেদনের শুনানির সময় আবেদনকারীর উপস্থিত না হওয়াটাই আদালতের নজরে আনে রাষ্ট্রপক্ষ।

“আদালত বলেছে, এটি শোভনীয় নয়,” বলেন বশিরউল্লাহ।  

গত ১৩ এপ্রিল আদালত প্রাঙ্গণে মির্জা আব্বাস (ফাইল ছবি)

মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে এই মামলা দুটির একটি ২০১৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর পল্টন থানায় দায়ের করা হয়। এতে বাসে অগ্নিসংযোগ ও বিস্ফোরণের অভিযোগ রয়েছে। গত ৪ জানুয়ারি মতিঝিল থানার মামলাটি করা হয়েছে বিস্ফোরক আইনে।

এছাড়া প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে গতবছর ৬ মার্চ শাহবাগ থানায় দুর্নীতি দমন কমিশনের করা আরেক মামলার এজাহারে আব্বাসের নাম না থাকলেও গ্রেপ্তারের আশঙ্কায় জামিনের আবেদন করেন আব্বাস। 

দুই আবেদনের শুনানি শেষে ১৫ এপ্রিল বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের বেঞ্চ থেকে  বিভক্ত আদেশ দেয়।

বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি দুই মামলায় তিন সপ্তাহের জামিন দিলেও অপর বিচারক তার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে আবেদন খারিজ করেন এবং আব্বাসকে অবিলম্বে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।

দুদকের মামলা শুনানির জন্য নির্ধারিত বেঞ্চ থাকায় আরেক মামলায় (দুদক) আব্বাসের জামিনের আবেদনটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়।

বিভক্ত আদেশের পর প্রধান বিচারপতি আবেদন দুটি নিষ্পত্তির জন্য বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুসের নেতৃত্বাধীন একক বেঞ্চ গঠন করে দেন।

২৭ এপ্রিল আবেদন শুনানির জন্য তালিকায় আসে। এর ধারাবাহিকতায় দুই দিন শুনানি শেষে সোমবার আদালত রায় দেয়।