‘সিটি নির্বাচনে গণতন্ত্রের শক্ত ভিত্তি প্রমাণিত’

ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের শক্ত ভিত্তি প্রমাণিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 May 2015, 03:05 PM
Updated : 23 May 2015, 03:07 PM

হাজারীবাগ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের উদ্বোধন ও শহীদ শামসুননেছা আরজু মণি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন,“সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের ভিত্তি যে মজবুত তা প্রমাণিত হয়েছে।”

শনিবার বিকালে হাজারীবাগ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের পাশে আয়োজিত এই সুধী সমাবেশে শেখ হাসিনা বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে বলেন,“মানুষ ধ্বংস চায় না,শান্তি চায়,সুন্দরভাবে বাঁচতে চায়।গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত থাকুক,তা চায়।

“এতো অত্যাচার,নির্যাতন করলে মানুষ কেন ভোট দেবে?”

গত ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে মাঝপথে ভোট থেকে সরে দাঁড়ান বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থীরা। তিন সিটিতেই জয়ী হন আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী সাঈদ খোকনকে ভোট দিয়ে জয়ী করায় হাজারীবাগবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা।

জনগণ সমর্থন না করায় বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের সরকারবিরোধী কর্মসূচি সফল হয়নি মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই অশুভ শক্তি যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে,সেজন্য জনগণকে সজাগ থাকতে হবে।”

শামসুননেছা আরজু মণিকে স্মরণ করে বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে শেখ হাসিনা বলেন,“সে আমার ফুপাতো বোন, আমার খেলার সাথী,একসাথে বড় হয়েছি।

“সে আমার ফুপু সেরনিয়াবাতের বড় কন্যা। আর শেখ ফজলুল হক মণির স্ত্রী। মাত্র সাড়ে তিন বছর বয়স ছিল তাপসের। পরশ আর তাপস।পরশের বয়স পাঁচ বছর ছিল। তাপস এতো ছোট ছিল,সে স্মৃতি মনে থাকার কথা নয়।”

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে খুন হয়েছিলেন আরজু মণি। বিপথগামী একদল সেনা সদস্যের ওই হত্যাকাণ্ডের সময় দেশের বাইরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।

শেখ হাসিনা যখন আরজু মণিকে নিয়ে কথা বলছিলেন তখন মঞ্চে বসে থাকা স্থানীয় সাংসদ শেখ ফজলে নূর তাপসকে চোখ মুছতে দেখা যায়।

শেখ হাসিনা বলেন,“আমরা দুই বোন বেঁচে গিয়েছিলাম। এই বেঁচে থাকার যে কী জ্বালা, যারা স্বজনহারা তারা বুঝবেন।”  

হাজারীবাগ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনটি দেশের দুইশ ৮৬তম স্টেশন।

প্রধানমন্ত্রী ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি বিভিন্ন উদ্ধার কর্মকাণ্ডে অংশ নেওয়ায় সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবিসহ সব বাহিনীকে ধন্যবাদ জানান।

২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত দেশে ৮০টি নতুন ফায়ার স্টেশন নির্মাণ ও চালু হয়েছে। ৫৪৯টি ফায়ার স্টেশনের নির্মাণ কাজ বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। ২০১৬ সাল নাগাদ বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পসমূহ সমাপ্ত হবে। বর্তমানের ৮ হাজার ২৫৪ জন জনবল বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ১৫ হাজারে উন্নীত হবে।

অগ্নিনির্বাপন,উদ্ধার ও যে কোনো দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ফায়ার সার্ভিসের নিজস্ব কর্মীদের পাশাপাশি ৬২ হাজার কমিউনিটি ভলান্টিয়ার তৈরির পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার কমিউনিটি ভলান্টিয়ারকে অনুসন্ধান, উদ্ধার, প্রাথমিক চিকিৎসা, অগ্নি নির্বাপনসহ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা নামমাত্র রেশন পেতেন।এখন সব পর্যায়ের কর্মীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ রেশন চালু হয়েছে।

শেখ ফজলে নূর তাপসের সভাপতিত্বে সমাবেশে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালিক, স্বরাষ্ট্র সচিব মো.মোয়াজ্জেম হক খান,স্বাস্থ্য সচিব সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ খান বক্তব্য রাখেন।