ভোটে বিএনপি সমর্থিতদের হার নিশ্চিত: আমু

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে বিএনপি যাদের সমর্থন দিয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের জয় আনার সামর্থ্য নেই বলে মনে করছে আওয়ামী লীগ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 April 2015, 11:53 AM
Updated : 27 April 2015, 03:10 PM

তিনি সিটি করপোরেশনে ভোটের আগের দিন এক সংবাদ সম্মেলনে ক্ষমতাসীন দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, “বিএনপি প্রার্থীদের পরাজয় নিশ্চিত। তাদের জেতার কোনো উপায় নেই।”

মেয়র পদে ঢাকা উত্তরে বিএনপি সমর্থন দিয়েছে দলীয় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে তাবিথ আউয়ালকে। তিনি এই ভোটের মধ্যদিয়ে রাজনীতিতে পা রাখলেন।

তাবিথ প্রসঙ্গে প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা আমু বলেন, “বিএনপি যে প্রার্থী দিয়েছে তাকে তো চিনতে হবে। এটা তার দলের ব্যর্থতা।”

ঢাকা দক্ষিণে বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী দলের জ্যেষ্ঠ নেতা মির্জা আব্বাস নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার এড়াতে নির্বাচনী প্রচারে নামেননি। চট্টগ্রামের প্রার্থী এম মনজুর আলম মেয়র হিসেবে গত মেয়াদে ব্যর্থ বলে তার সমালোচকরা বলেন।

গত তিন মাসের আন্দোলনে নাশকতার জন্য বিএনপির পক্ষে জনগণ আর নেই দাবি করে আমু বলেন, “অবস্থা বুঝতে পেরেই চট্টগ্রামে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও আবদুল্লাহ আল নোমান খালেদা জিয়ার অনুরোধ সত্ত্বেও নির্বাচনে দাঁড়াননি।”

“তিনি (খালেদা জিয়া) জানেন, তার প্রার্থীরা জয়লাভ করবেন না,” সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে বলেন এই আওয়ামী লীগ নেতা।

নির্বাচনে কোনো ধরনের সরকারি হস্তক্ষেপ হবে না জানিয়ে এই মন্ত্রী বলেন, “আওয়ামী লীগ স্বচ্ছতার সাথে নির্বাচন না করলে গতবার পাঁচটা সিটি কর্পোরেশনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী কিভাবে জয়লাভ করল?”

মূলত গত রোববার সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার দেওয়া বক্তব্যের জবাব দিতেই সোমবার বিকালে ধানমন্ডি তিন নম্বর সড়কে দলীয় সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন ডাকে আওয়ামী লীগ।

বিএনপি চেয়ারপারসনের সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে আমু বলেন, “এতে তার (খালেদা জিয়া) দেউলিয়াত্ব প্রমাণিত হয়েছে। তিনি সব কিছু জানেন, দলীয় নেতা হিসেবে আন্দোলনে ব্যর্থতা এবং নির্বাচনে ব্যর্থতা ঠেকানোর জন্যই মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়েছেন।”

“খালেদার বক্তব্যে তার ভন্ডামির মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে। এজন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই। আমাদের আগাম কিছু বলতে হচ্ছে না, তিনিই সব আগাম বলে দিচ্ছেন,” বলেন তিনি।

আমির হোসেন আমু বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন করা সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অঙ্গীকার।

খালেদা জিয়া সংবাদ সম্মেলনে ‘কিছু অসত্য’ কথা বলেছেন বলে মন্তব্য করে আমু বলেন, ৫ জানুয়ারি থেকে ৯২ দিনের হরতাল ও অবরোধের কর্মসূচিতে দলীয় নেতাদের ও আন্তর্জাতিক সমর্থন পাননি।

২০ দলীয় জোটের কর্মসূচি চলাকালে সরকার দলের পক্ষ থেকে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে খালেদা জিয়ার বক্তব্যের জবাবে আমু বলেন, “জনগণ এখন অনেক সচেতন।

“এজন্য, উনি সুড়সুড় করে কোর্টে গিয়ে জামিন নিয়ে বাড়ি চলে গিয়েছেন। অবশ্য, তার দলের নেতারা মনে করেন, আঁতাত করে উনি বাড়ি চলে গিয়েছেন।”

বিশৃঙ্খল অবস্থা সৃষ্টি করে নির্বাচন বানচালই খালেদা জিয়ার উদ্দেশ্য ছিল বলে দাবি করেন আমু।

“বেগম জিয়াকে অনেকে নেত্রী বলেন। আমরাও নেত্রী বলি। তার মুখ থেকে এই ধরনের মিথ্যাচার শোভা পায় না। তিনি নিজেকে সংশোধন করুক। জনগণ শুধু আন্দোলন নয়, উনাকেও পরিত্যাগ করেছে। যারা আগুনে পুড়েছে, তাদের আত্মীয়-স্বজনরা তাকে ধাওয়া করেছেন।”

পাঁচ জানুয়ারি পরবর্তী খালেদার দুটি সংবাদ সম্মেলনে পেট্রোল বোমায় অগ্নিদগ্ধদের সমবেদনা না জানানো এবং তাদের দেখতে বার্ন ইউনিটে না যাওয়ার কথাও আমু উল্লেখ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে আমুর সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল-আলম হানিফ ও দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহম্মদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন, দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, উপ-প্রচার সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য আখতারুজ্জামান, আব্দুর রহমান, এনামুল হক শামীম, সুজিত রায় নন্দী এবং সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুকুল বোস।