আব্বাসের আবেদনে ভোটের আগে জামিন শুনানি হল না

ঢাকা দক্ষিণে বিএনপিসমর্থিত মেয়র প্রার্থী মির্জা আব্বাসের সময়ের আবেদনে তিন মামলায় তার জামিন আবেদনের শুনানি এক সপ্তাহ পিছিয়ে গেছে।

সুপ্রিম কোর্ট প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 April 2015, 06:27 AM
Updated : 27 April 2015, 02:58 PM

তিন মাস আত্মগোপনে থাকার পর ভোট সামনে রেখে প্রকাশ্যে এলেও বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য এখন জামিন ছাড়াই মঙ্গলবারের নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছেন। 

আব্বাসের আইনজীবীরা সোমবার নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে সময়ের আবেদন করলে বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুসের হাই কোর্ট বেঞ্চ নাশকতার দুই মামলায় আগাম জামিনের শুনানি পিছিয়ে দেন।

এর আগে হাই কোর্টের অন্য একটি বেঞ্চ বিভক্ত আদেশ দেওয়ায় প্রধান বিচারপতি আবেদনটি শোনার জন্য নতুন এই বেঞ্চ ঠিক করে দেন।

মির্জা আব্বাসের পক্ষে সময়ের আবেদনের শুনানিতে ছিলেন খন্দকার মাহবুব হোসেন,  মাহবুব উদ্দিন খোকন ও রাগিব রউফ চৌধুরী। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. বশির উল্লাহ।

আদেশের পর মাহবুব উদ্দিন খোকন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গত কয়েকদিন ধরে মির্জা আব্বাসের নির্বাচনী প্রচারে হামলা হচ্ছে। ফকিরাপুলে তার কর্মী আহত হয়েছে, গোড়ানে নির্বাচনী প্রচারের ক্যাম্প জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। হাজারীবাগে তার এক সমর্থককে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।”

রোববার রাতেও আব্বাসের বাসা ‘ঘেরাও করে’ রাখা হয়েছিল অভিযোগ করে তার আইনজীবী বলেন, “এসব কারণে মির্জা আব্বাস নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আরেকজন প্রার্থী মাহী বি চৌধুরীর উপর আক্রমণ হয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশের কোনো তৎপরতা নেই। মির্জা আব্বাস নিজের জীবনের নিরাপত্তা প্রশ্নে আজকে আসতে পারেননি। এজন্য সময় চেয়ছি।”

বশির উল্লাহ বলেন, “আদালত সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে শুনানি পিছিয়ে দিয়েছেন। আগামী সোমবার আবেদন দুটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসবে।

পল্টন ও মতিঝিল থানার দুটি মামলায় মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে নাশকতায় জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছে পুলিশ।

আর প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে শাহবাগ থানায় করা অন্য মামলার বাদী দুর্নীতি দমন কমিশন। এজাহারে আব্বাসের নাম না থাকলেও ‘গ্রেপ্তারের আশঙ্কায়’ তিনি ভোটের আগে আগাম জামিনের এই আবেদন করেন।

আব্বাসের আইনজীবীরা সময়ের আবেদন করায় দুদকের মামলা শোনার দায়িত্বে থাকা বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের হাই কোর্ট বেঞ্চে শুনানি এক সপ্তাহ পিছিয়ে দেন।

এ মামলাতেও আব্বাসের পক্ষে খন্দকার মাহবুব হোসেন শুনানি করেন। দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশিদ আলম।

বিএনপির ঢাকা মহানগর আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস গত ১৩ এপ্রিল এ তিন মামলায় আগাম জামিন চাইতে হাই কোর্টে আসেন।

তার আবেদন শুনে বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের হাই কোর্ট বেঞ্চ গত ১৫ এপ্রিল নাশকতার দুই মামলায়  বিভক্ত আদেশ দেয়। জ্যেষ্ঠ বিচারপতি জামিন দিলেও কনিষ্ঠ বিচারপতি জামিন নাকচ করে আসামিকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।  

এর ১১ দিনের মাথায় প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য নিয়ম অনুযায়ী নতুন বেঞ্চ ঠিক করে দিলে তা সোমবার কার্যতালিকায় আসে।

অন্যদিকে হাই কোর্টে দুদকের মামলা শোনার জন্য নির্ধারিত বেঞ্চ থাকায় বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের বেঞ্চ আব্বাসের অন্য আবেদনটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়েছিল।

আব্বাসের আইনজীবীরা পরে দুদকের মামলা শোনার নির্ধারিত বেঞ্চে আবেদন নিয়ে যান এবং শুনানির জন্য সময়ের আবেদন করেন। সে অনুযায়ী আদালত শুনানির জন্য ২৭ এপ্রিল দিন ঠিক করে দিয়েছিল।