শুক্রবার বিকালে বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থীর পক্ষে প্রচারে নেমে বারিধারার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার প্রবেশ মুখে এক পথসভায় তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।
খালেদা বলেন, “আজ ঢাকার মানুষ পরিবর্তন চায়। ভোটারদের বলছি, ঢাকা শহরের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে চাইলে, চাঁদাবাজি বন্ধ করতে চাইলে, গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানি চাইলে আপনারা ২৮ এপ্রিল সঠিক জায়গায় ভোট দিন।”
২৮ এপ্রিল সবাইকে ‘সকাল সকাল’ কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি নেত্রী বলেন, “আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, ভোটকেন্দ্রে ক্ষমতাসীনরা অন্য কিছু করলে আপনারা এর জবাব দেবেন।”
ভোটের প্রচারের সময় গাড়িবহরের হামলার ঘটনা তুলে ধরে খালেদা বলেন, “আমার প্রাণনাশের চেষ্টা হয়েছে। আমার নিরাপত্তাকর্মীদের আহত করা হয়েছে। এভাবে গুলি চালিয়ে, হামলা করে আমার চলার পথ বন্ধ করতে পারবে না। কারণ আমার সঙ্গে জনগণ আছে। মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ আছেন।”
তিনি বলেন, “জনগণ এদের (আওয়ামী লীগ) আর ভোট দেবে না। গণতন্ত্রের স্বার্থে একটি সন্ত্রাসমুক্ত দেশ গড়তে তাবিথ, মির্জা আব্বাস ও মনজুর আলমকে ভোট দিন।”
বিকাল ৪টা ৩৫ মিনিটে গুলশানের বাসা থেকে বেরিয়ে খালেদা জিয়া নতুন বাজার, প্রগতি সরণী, বাড্ডা সড়ক, গুলশান লিংক সড়ক, গুলশান ১ ও ২ নম্বর সেকশন এবং বনানী এলাকায় প্রচার চালান।
খালেদার গাড়িবহর ঘিরে এ সময় ছাত্রদলের কয়েকশ নেতা-কর্মীকে পায়ে হেঁটে এগোতে দেখা যায়। গত শনি থেকে বুধবার প্রতিদিনই প্রচারে বেরিয়ে খালেদার গাড়িবহর হামলা বা বাধার মুখে পড়ায় শুক্রবার ছাত্রদলকর্মীদের এই বাড়তি তৎপরতা।
গাড়িবহর থেকে হ্যান্ড মাইকে বলা হয়- ‘মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও মির্জা আব্বাসকে ভোট দিন/খালেদা জিয়ার সালাম নিন’। নেতা-কর্মীরা এ সময় রাস্তার দুই ধারে লিফলেটও বিতরণ করে।
খালেদাও মাঝেমধ্যে গাড়ি থেকে রাস্তার পাশের লোকজনকে ডেকে লিফলেট দেন। সড়কের দুই পাশের বিভিন্ন পোশাক কারখানার নারী শ্রমিকদের এ সময় হাত তুলে খালেদা জিয়াকে শুভেচ্ছা জানাতে দেখা যায়।
পথসভায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে খালেদা জিয়া বলেন, “বর্তমান সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আজ মানুষের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। যখন-তখন গুম, খুন হচ্ছে। খালে-বিলে মানুষের লাশ ভেসে ওঠে।”
খালেদা বলেন, সিটি নির্বাচনে সেনা মোতায়েন এখন ‘জনগণের দাবি’।
“একজন পথচারী আমাকে বলেছেন, নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করলে ভোটাররা নির্ভয়ে ভোট দিতে পারত। আমরাও তা বিশ্বাস করি।
“কিন্তু বর্তমান নির্বাচন কমিশন এই সরকারের একটি আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। তারা সেনাবাহিনীকে সেনানিবাসে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
নির্বাচন কমিশনের ওই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে খালেদা বলেন, “আমাদের সেনাবাহিনী বিদেশে গিয়ে নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করে সুনাম অর্জন করছে। অথচ দেশের নির্বাচনে তাদের কাজে লাগানো হচ্ছে না। তারা ক্যান্টনমেন্টে বসে থাকলে ভোটারদের নিরাপত্তা দিতে পারবে না।”
এর আগে গত সোম ও বুধবার কারওয়ানবাজার ও বাংলামোটরে খালেদার প্রচারের গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলায় খালেদার গাড়ির কাচ ভেঙে যায়, ভাংচুর করা হয় বহরে থাকা তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বাহিনী সিএসএফের গাড়িও। ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ি মেরামতে থাকায় বৃহস্পতিবার আর নির্বাচনী গণসংযোগে বের হননি খালেদা।
শুক্রবার আবারও প্রচারে নেমে বনানী মার্কেট ও মহাখালী ডিওএইচএস এলাকায় বিএনপিসমর্থিত প্রার্থীদের পক্ষে ভোট চেয়ে রাত ৯টার দিকে নির্বিঘ্নেই বাসায় ফেরেন বিএনপি চেয়ারপারসন।