গাড়িবহরে খালেদার প্রচার: অভিযোগ আমলে নিচ্ছে ইসি

গাড়ি বহর ও সাধারণের চলাচলে বিঘ্ন ঘটিয়ে বিধি লঙ্ঘন করে প্রচার বন্ধের ব্যবস্থা নিতে রিটার্নিং কর্মকর্তা, পুলিশ কমিশনার ও নির্বাহী হাকিমকে নির্দেশনা দিতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন।

মঈনুল হক চৌধুরীবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 April 2015, 01:44 PM
Updated : 24 April 2015, 02:36 PM

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিধি লঙ্ঘন করে দলসমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়ার পর ইসির এই উদ্যোগ।

আওয়াম লীগ সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করা সহস্র নাগরিক কমিটি খালেদার বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের ওই অভিযোগ আনে।

ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম শুক্রবার সন্ধ্যায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ বিষয়ে একটা সিদ্ধান্ত হয়েছে। পুলিশ কমিশনার ও রিটার্নিং অফিসারকে চিঠি দেব। কেউ যেন আচরণবিধি ভঙ্গ না করতে পারেন। ইতোমধ্যে খসড়াও হয়ে গেছে।”

গাড়িবহর নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের সাম্প্রতিক প্রচারের বিষয়টি আমলে নিয়েই এ নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “যেই হোক, আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচার করতে পারবেন না কেউ।”

রিটার্নিং কর্মকর্তা, পুলিশ কমিশনার ও নির্বাহী হাকিমরা বিষয়টি ‘যথাযথভাবে দেখবেন’ বলে মন্তব্য করেন সচিব।

বিএনপি চেয়ারপারসনকে চিঠি দেওয়ার ‘ওরকম’ সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের এ নির্দেশনা কোনো ব্যক্তিকে নয়, ব্যবস্থা নিতে কর্মকর্তাদের পাঠানো হবে।”

২৮ এপ্রিল ভোটের আগে প্রচারের সুযোগ আছে আর মাত্র তিন দিন। ইতোমধ্যে বিধি লঙ্ঘন না করার বিষয়ে অনুরোধ করার পর প্রচার থেকে সরে গেছেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এইচ এম এরশাদ। পাশাপাশি বিএনপি সমর্থিত দুই প্রার্থীকেও দলীয় প্রধানকে নিয়ে প্রচারে বিধি লঙ্ঘন না করার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।

গত শনিবার থেকে ঢাকায় বিএনপি সমর্থিত দুই প্রার্থীর পক্ষে গাড়িবহর নিয়ে নির্বাচনী প্রচারে থাকা বিএনপি নেত্রী খালেদা মাঝখানে একদিন বিরতি দিয়ে শুক্রবার আবারও প্রচারে নেমেছেন।

এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের নালিশ দেন সহস্র নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব গোলাম কুদ্দুস।

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে একজন নির্বাচন কমিশনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ ধরনের একটি বিষয় মিটিংয়ে এসেছিল। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রচারণা চালাতে পারবেন, কিন্তু গাড়িবহর ব্যবহার তো আচরণবিধি লঙ্ঘন। আবার প্রচারে কারও বাধা দেওয়াও আচরণবিধি লঙ্ঘন।”

খালেদা যে ছয়দিন ভোটের প্রচারে বেরিয়েছেন, তার মধ্যে চারদিনই তার গাড়িবহরে বাধা দেওয়া বা হামলার ঘটনা ঘটেছে, যা নিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে ইসিতে অভিযোগ জানানো হয়েছে।

কমিশনের কর্মকর্তারা বলছেন, খালেদা জিয়া গাড়ি বহর নিয়ে গেছেন, আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন; হামলার ঘটনায় থানায় মামলাও হয়েছে। খালেদা জিয়া যেমন সাবেক প্রধানমন্ত্রী, তেমনি এরশাদও সাবেক রাষ্ট্রপতি। দুজনই সাবেক সরকার প্রধান। একজনকে বিরত রাখা হলে অন্যজনের বিধি লঙ্ঘন লুকানোর সুযোগ নেই।

এ বিষয়টি দেখভালের দায়িত্ব মূলত দায়িত্ব রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ওপর বলে জানান একজন নির্বাচন কমিশনার।

এরশাদকে চিঠি দিয়েছিলেন ঢাকা দক্ষিণে রিটার্নিং কর্মকর্তা মিহির সারওয়ার মোর্শেদ।

খালেদা জিয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হিসেবে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানকে আচরণবিধি লঙ্ঘন না করার বিষয়ে অনুরোধ করা হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসন এখন কোনো লাভজনক পদে না থাকায় তার প্রচারণায় বাধা নেই। তবে গাড়িবহর ব্যবহার ও চলাচলে বিঘ্ন ঘটানো বিধি লঙ্ঘন। প্রার্থীকে এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।”

ঢাকা উত্তরের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহ আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রার্থীকে সতর্ক করার পর তো উনি নামেননি। তারপরও নির্বাচনী এলাকায় নির্বাহী হাকিম রয়েছেন। তারা বিধি লঙ্ঘন করলেই ব্যবস্থা নেবেন।”