ভোটের প্রচারে খালেদা

“কেমন আছেন আপনারা? ভালো নেই, আমি জানি। আজকে এসেছি, ভোট চাইতে। তাবিথকে একটা ভোট দেবেন। মার্কা হচ্ছে বাস”- ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থীর জন্য এভাবেই ভোট চাইলেন খালেদা জিয়া।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 April 2015, 11:32 AM
Updated : 18 April 2015, 04:21 PM

২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় সিটি নির্বাচনে দল সমর্থিত প্রার্থীদের পক্ষে শনিবারই ভোট চাইতে প্রথম সরাসরি নামেন বিএনপি চেয়ারপারসন। “জনগণের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি,” প্রচার শেষে সাংবাদিকদের বলেন তিনি। 

বিধি-নিষেধের বেড়াজালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচনে প্রচার চালানোর সুযোগ না থাকলেও খালেদা তা পাচ্ছেন।

সরকারবিরোধী আন্দোলন শিথিল করে সিটি নির্বাচনে এসে খালেদা জিয়া গত মঙ্গলবার বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে বক্তব্যে ব্যালটে ‘নীরব বিপ্লব’ ঘটাতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।

সেদিন বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী হিসেবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে তাবিথ আউয়াল এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে মির্জা আব্বাসকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।

এর চার দিনের মাথায় দল সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইতে সরাসরি মাঠে নেমে গুলশান, বনানী, মহাখালী ও বাড্ডা এলাকায় জনসংযোগ চালান বিএনপি চেয়ারপারসন।

খালেদা জিয়া এ সব এলাকার বিপণি বিতানের বিভিন্ন দোকানে ঢুকে তাবিথের প্রচারপত্র বিলি করেন।  বাস প্রতীকের প্রার্থী তাবিথ বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে।

বনানী ১১ নম্বর সড়কে খালেদার গাড়িবহর এগুনোর সময়ে হঠাৎ তাবিথ আউয়াল হেঁটে এসে দলীয় প্রধানের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি সালাম দিলে খালেদা জিয়া তার মাথা ছুঁয়ে দিয়ে তাকে প্রচার চালিয়ে যেতে বলেন। এরপর এই মেয়র প্রার্থী কয়েকটি দোকানে গিয়ে ভোট চান।

শ’ খানেক নেতা-কর্মী বেষ্টিত হয়ে খালেদার এই প্রচারে সঙ্গে ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরীন সুলতানা, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস।

বিকালে গুলশানের বাড়ি থেকে বেরিয়ে প্রথমে গুলশান এক নম্বর গোল চত্বরে পিংক সিটিতে যান খালেদা। হেঁটে ডিসিসি মার্কেট ও নাভানা টাওয়ারে প্রচার চালানোর পর গাড়িতে ওঠেন তিনি।

গুলশান ১ নম্বর হয়ে বাড্ডা, নতুনবাজার, গুলশান এক নম্বর ঘুরে বনানী যান খালেদা। বনানী থেকে মহাখালী, নাবিস্কো মোড় হয়ে হাতির ঝিল ঘুরে রাত ৯টায় নিকেতনে গিয়ে তার প্রচার শেষ হয়।

গোলাপি শাড়ি পরা খালেদা জিয়া প্রচারের পুরোটা সময় বিভিন্নজনের সঙ্গে কথা বলেন, মানুষের হাতে তুলে দেন তাবিথের প্রচারপত্র।

গুলশান-১ নম্বরে গাড়ি নেমে যখন ওষুধের একটি দোকানে তিনি ঢুকছিলেন, তখন সেখানে থাকা ফল ব্যবসায়ী বৃদ্ধ আসলাম আলী বিএনপি চেয়ারপারসনকে সালাম দিয়ে বলেন, “ম্যাডাম ইনশাল্লাহ ভোটে আপনারই বিজয় হবে।”

বনানী সুপার মার্কেটে একজন নারীর হাতে তাবিথের প্রচারপত্র দিয়ে খালেদা বলেন, “ভোট দেবেন। তাবিথ তরুণ প্রজন্ম। আমরা পরিবর্তনের পক্ষে, প্লিজ ভোট দিতে কেন্দ্রে যাবেন।”

ওই নারী তখন খালেদাকে বলেন, “ম্যাডাম অবশ্যই ভোট দেব, আমিও পরিবর্তন চাই।”

হাতির ঝিলে একজন তরুণ পথচারীকে ডেকে কথা বলেন বিএনপি চেয়ারপারসন। তিনি জানতে চান- “কেমন আছ।” ওই তরুণের উত্তর আসে, “ম্যাডাম ভালো নেই। নেতিবাচক রাজনীতি আমরা দেশে দেখতে চাই না।”

তখন খালেদা জিয়া বলেন, “আমরা নেতিবাচক রাজনীতি করি না। আমরা তোমাদের জন্য ইতিবাচক রাজনীতি করি। তোমরা নতুন প্রজন্মের, তাই উত্তরে তোমাদের প্রজন্মের তাবিথ আউয়াল সমর্থন দিয়েছে, তাকে নির্বাচিত করবে।”

২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনের পর এই প্রথম নির্বাচনী প্রচারণায় নামলেন খালেদা।

জনগণের প্রতিক্রিয়া কেমন পেলেন- প্রচার শেষে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি হেসে বলেন, “আপনারা তো আমার সাথেই আছেন। দেখতে পাচ্ছেন, মানুষের সাড়া কেমন। জনগণের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি।”