বিএনপি ভোট থেকে সরবে না: মওদুদ

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে ২০ দল সমর্থিত প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের হয়রানির অভিযোগ এনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেছেন, পরিস্থিতি যতই প্রতিকূল হোক, তার দল সিটি করপোরেশন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবে না।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 April 2015, 11:37 AM
Updated : 17 April 2015, 06:25 PM

শুক্রবার বিএনপির ঢাকা উত্তর নির্বাচন পরিচালনা সমন্বয় কমিটির সভার শুরুতে সাংবাদিকদের সামনে দলের এই অবস্থান তুলে ধরেন মওদুদ।

তিনি বলেন, “আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমরা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। অনেক প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে আমরা নির্বাচনে আছি। শেষ পর্যন্ত আমরা থাকব, যতই প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হোক না কেন।’’

গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সমন্বয়ক কমিটির প্রথম সভা হয়। এতে উত্তরের মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচারের কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়।

ভোটে সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে না অভিযোগ করে কমিটির আহ্বায়ক মওদুদ বলেন, “আজই একটি পত্রিকায় উঠেছে, আওয়ামী লীগের ১৬ জন প্রার্থীর মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। নির্বাচনে লেভেল প্লেইং ফিল্ড তো দূরের কথা, গতকালও উত্তরের কাউন্সিলর প্রার্থী কাওছার আহম্মদকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।

৫ জানুয়ারির নির্বাচন ঠেকাতে আন্দোলন করা দল বিএনপির এই নেতা বলেন, “সর্বত্র আমাদের প্রার্থী ও সমর্থকদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী হুমকি দিচ্ছে, হয়রানি করছে। তারপরও বলব, আমরা কোনো অবস্থায় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াব না।”

দেশের মানুষের মধ্যে সরকারের বিরুদ্ধে ‘ক্ষোভ, দুঃখ’ বিরাজ করছে মন্তব্য করে মওদুদ বলেন, “নীরব ভোট বিপ্লবের মাধ্যমে ২৮ এপ্রিল ভোটাররা এর বহিঃপ্রকাশ ঘটাবে। আমাদের প্রার্থীরা বিপুল ভোটে বিজয় লাভ করবে।”

ঢাকা ও চট্টগ্রামের তিনি সিটির এই নির্বাচন সরকার ও নির্বাচন কমিশনের জন্য ‘অগ্নি পরীক্ষা’ বলে মনে করেন সাবেক মন্ত্রী মওদুদ।

তিনি বলেন, “এই নির্বাচনের মাধ্যমে প্রমাণ হবে বর্তমান নির্বাচন কমিশন কতটুক শক্তিশালী।”

প্রচারে ‘বাধার অভিযোগ’ কমিশনকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে কি-না এ প্রশ্নে মওদুদ বলেন, “অবশ্যই আমরা লিখিত অভিযোগ করছি। তবে নির্বাচন কমিশনের কি চোখ, কান নেই? তারা কি পত্র-পত্রিকা পড়ে না? নির্বাচন কমিশন আমাদের সঙ্গে বৈষ্যমমূলক আচরণ করছে।”

যেসব ওয়ার্ডে ২০ দলীয় জোটের একাধিক নেতা প্রার্থী হিসাবে প্রচার চালাচ্ছেন- তাদের উদ্দেশে এই বিএনপি নেতা বলেন, “আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই, দল ও জোটর পক্ষ থেকে যাদের সমর্থন দেওয়া হয়েছে, যাদের নাম গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, তারাই আমাদের সমর্থিত প্রার্থী। অন্যদের ওইসব প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে হবে।”

উত্তরের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল সাংবাদিকদের বলেন, “গত শুক্রবার থেকে আমি প্রচার চালিয়ে আসছি। জনগণ ভোটের অপেক্ষায় আছে, আমাদের জোটকে সমর্থন দেওয়ার জন্য। দলের সবার প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে, যে কয়টা দিন আছে, আমরা যেন সম্মিলিতভাবে কাজ করি। আমি সকলের সহযোগিতা চাই।”

অন্যদের মধ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শাহজাহান ওমর, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহান, উত্তরের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও তার মা নাসরিন ফাতেমা আউয়াল, আর্দশ ঢাকা আন্দোলনের সদস্য সচিব শওকত মাহমুদ, সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ, প্রকৌশলী আনহ আখতার হোসেন, রিয়াজুল ইসলাম রিজু, অ্যাডভোকেট ফাহমিদা আখতার মুন্নী সমন্বয় কমিটির এই সভায় উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া ২০ দলীয় জোটের শরিক জাগপার শফিউল আলম প্রধান, এনডিপির খন্দকার গোলাম মুর্তজা,  খেলাফত মজলিশের সৈয়দ মজিবুর রহমান, মাওলানা শফিকউদ্দিন, ন্যাপের জেবেল রহমান গানি, এলডিপির সাহাদাত হোসেন সেলিম, বিএনপির আবদুল লতিফ, শাহ আবু জাফর, মনিরুল হক চৌধুরী, আবুল হোসেন, হবিবুর রহমান হাবিব, মুস্তাফিজুর রহমান বাবুল, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স,আসাদুল করীম শাহিন, সুলতানা আহমেদ, মো. সাহাবুদ্দিন, চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।

গত ৫ এপ্রিল খালেদা জিয়া এই কার্যালয় থেকে চলে যাওয়ার পর এই প্রথম বিএনপির নেতারা সেখানে প্রবেশ করলেন।