বুধবার চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ নুরুল হুদার আদালতে হাজির হয়ে নাছির জামিন আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করে।
২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাইয়ের পর এদিনই ক্ষমতাসীন দলের এই নেতার মনোনয়নপত্র বৈধতা পায়।
নাছিরের এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জেলা পিপি আবুল হাশেম জামিন আবেদনের বিরোধিতা করেননি। তার দাবি, নাছির আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়েছেন।
আগামী ৬ এপ্রিল এই মামলাটিতে আসামিদের উপস্থিতিতে শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।
জেলা পিপি আবুল হাশেম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ১৯৯৩ সালে করা মামলাটি দীর্ঘদিন উচ্চ আদালতের আদেশে স্থগিত ছিল।
“উনি (নাছির) আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এছাড়া সামনে সিটি নির্বাচন আছে। তাই আজ তিনি উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদন করেন। ইতোপূর্বে কোনো সাক্ষীই তার বিরুদ্ধে কিছুই বলেননি। সব বিবেচনা করে আদালত তাকে জামিন দিয়েছেন।”
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হিসেবে ভূমিকা কী ছিল- জানতে চাইলে পিপি আবুল হাশেম বলেন, “যখন কোনো আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষীদের বক্তব্য যায় না, তখন রাষ্ট্রপক্ষ এসব জামিন আবেদনের ক্ষেত্রে ‘মাইল্ড’ থাকে।
“রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হিসেবে আমি কোনো ব্যক্তির পক্ষে নই, ন্যায়বিচারের পক্ষে।”
১৯৯৩ সালের ২৪ জানুয়ারি নগরীর লালদীঘির মাঠে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় ওই সময়কার নগর ছাত্রলীগ নেতা সুফিয়ান সিদ্দিকীর ওপর অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা হয়।
এ ঘটনায় সুফিয়ান সিদ্দিকী বাদী হয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নাছিরসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে মামলা করেন।
ওই বছরের ৭ মার্চ সব আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। মামলার ১২ সাক্ষীর মধ্যে আটজনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে সাক্ষীদের অধিকতর জেরার আবেদন করে আসামিপক্ষ।
ওই আবেদন নাকচ হলে এক আসামি উচ্চ আদালতে ১৯৯৪ সালে রিভিশন আবেদন করেন। মামলা স্থগিত চেয়েও উচ্চ আদালতে আবেদন করেন এক আসামি। সেই থেকে মামলাটি স্থগিত ছিল।
স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের পর গত বছর মার্চ মাসে হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ রিভিশন মামলায় আদেশ দেন। এতে আগের আট সাক্ষীকে আবার জেরা ও ছয় মাসের মধ্যে মামলাটি শেষ করতে বলা হয়।
ওই আদেশটি এক বছর পর গত মাসে চট্টগ্রাম আদালতে এসে পৌঁছায়। এরপর আদালত আগামী ৬ এপ্রিল শুনানির দিন ধার্য করে।
আওয়ামী লীগ নেতা নাছিরের বিরুদ্ধে এই মামলা ছাড়াও ১৯৯৩ সালের ১৮ অক্টোবর চট্টগ্রাম মেডিকেলে তিন খুন, ১৯৯৪ সালে ইসলামিয়া কলেজে দুই খুন এবং ১৯৯৯ সালে চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে ছাত্রলীগের এক নেতাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা ছিল।
হত্যা মামলা দুটিতে বেকসুর খালাস এবং হত্যাচেষ্টা মামলায় অব্যাহতি পেয়েছেন বলে এবারের সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দেওয়া হলফনামায় উল্লেখ করেন নাছির।
সুফিয়ান সিদ্দিকীর মামলাটি বিচারাধীন বলে নাছিরের হলফনামায় উল্লেখ করা হয়।
ক্রীড়া সংগঠক ও রাজনীতিক নাছির এবারই প্রথম জনপ্রতিনিধি হতে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।