খালেদাই বিএনপিকে ‘নিশ্চিহ্ন’ করছেন: হাসিনা

খালেদা জিয়ার নির্দেশিত ‘ভুল’ পথে বিএনপি ‘নিশ্চিহ্ন’ হওয়ার পথে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 April 2015, 12:20 PM
Updated : 1 April 2015, 02:15 PM

বুধবার সংসদ অধিবেশনে এক প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিয়ে এই মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, “তিনি (খালেদা জিয়া) ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে যেমন ভুল করেছেন, তেমনি এখন যে দেশের মানুষ তার সাথে নেই, তা বুঝেও না বোঝার ভান করছেন।”

দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করে এখন নির্দলীয় সরকারের অধীনে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি জোটের হরতাল-অবরোধের দিকে ইঙ্গিত করে একথা বলেন তিনি। 

বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলের হরতাল-অবরোধে নাশকতায় নিরীহ মানুষের প্রাণহানি নিয়ে যেমন সমালোচনা রয়েছে, তেমনি কর্মসূচির প্রভাবও এখন জনজীবনে দৃশ্যমাণ নয়।  

শেখ হাসিনা বলেন, “তার (খালেদা জিয়া) এই কর্মসূচি বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করে দেবে, আর এটাই হবে তার কথিত আন্দোলনের পরিণতি।”

সরকার প্রধান সংসদে জানান, বিএনপি জোটের ৮৫ দিনের কর্মসূচিতে পেট্রোল বোমায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে ১৩০ জন নিহত এবং সহস্রাধিক ব্যক্তি মারাত্মক আহত হয়েছেন। এই সময়ে ২ হাজারের বেশি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়।

“এটা দেশের চলমান অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে রুখে দেওয়া গভীর ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয়। এই নৈরাজ্য দীর্ঘদিন চলতে দেওয়া যায় না।”

জনগণের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

নাশকতা প্রতিরোধে সরকারের পক্ষ থেকে সমর্থনের আশ্বাস দিয়ে তিনি জনগণকে স্বাভাবিক কাজ ও যানবাহন চলাচল অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ মহবিল থেকে এ পর্যন্ত নাশকতায় ক্ষতিগ্রস্ত ১২৭ জনকে মোট ১১ কোটি ৭০ লাখ টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে। আরও ৩০ জনের পরিবারকে ১ কোটি ১৭ লাখ টাকা অনুদান দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায় রয়েছে।

যে সব যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের মধ্যে ৪২৬টির মালিককে মোট ৫ কোটি ৭৭ লাখ ৭৩ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আরও ৩৯৫টি ক্ষতিগ্রস্ত যানবাহন মালিকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

১৩ মার্চের সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া

হরতাল-অবরোধ কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়লেও গত ১৩ মার্চ সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণাই দিয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা।

হাসিনা বলেন, “এতগুলো মানুষ মারা গেল, অথচ তিনি তার বক্তব্যে তাদের প্রতি সমবেদনাটুকুও জানাননি। আসলে এই নিরীহ মানুষগুলোকে তিনি হত্যা করেছেন। তাই সমবেদনা জানানোর মানসিক শক্তিটুকু তার ছিল না।”

বিএনপির মধ্যেও খালেদা জিয়া অনাস্থায় ভুগছেন দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, “তার দলের নেতারাও তার কথা শোনে না। তার ফোন পর্যন্ত ধরে না।”

৫ জানুয়ারির নির্বাচনের বছরপূর্তির দিন ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপের মধ্যে ৩ জানুয়ারি কার্যালয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন খালেদা জিয়া। পরে পুলিশ বেষ্টনি সরানো হলেও গুলশানের কার্যালয় ছাড়েননি তিনি।

প্রায় তিন মাস ধরে কার্যালয়ে অবস্থানের মধ্যে জিয়া ট্রাস্টের দুই মামলায় হাজিরা না দেওয়ায় খালেদার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। তবে তা কার্যকর হতে এখনও দেখা যায়নি। 

আদালতে না গিয়ে খালেদা আইন ভেঙেছেন মন্তব্য করে সরকার প্রধান হাসিনা বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন যদি আদালতে আত্মসমর্পণ না করেন, তাহলে থানায় গ্রেপ্তারি পরোয়না যাওয়া মাত্র পুলিশ আইনানুগ পদক্ষেপ নেবে।