২২৯ কোটি টাকা ঋণের ভার মিন্টুর কাঁধে

১৪টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত আছেন আব্দুল আউয়াল মিন্টু, যে সব প্রতিষ্ঠানে নামে ঋণ রয়েছে ২২৯ কোটি টাকা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 March 2015, 05:41 PM
Updated : 31 March 2015, 05:46 PM

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দাখিল করা বিএনপি চেয়ারপারসনের এই উপদেষ্টার হলফনামায় তার ঋণের এই তথ্য মিলেছে।

এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মিন্টু এবারই প্রথম জনপ্রতিধি হতে ভোটের লড়াইয়ে নামতে যাচ্ছেন। গত রোববার তার ছেলে বাবার পক্ষে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।

হলফনামা বিশ্লেষণে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী এফবিসিসিসিআইয়ের সাবেক আরেক সভাপতি আনিসুল হকের তুলনায় সম্পদ আর ঋণ- দুই হিসাবেই এগিয়ে আছেন মিন্টু।

আদালতের আদেশে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতাসহ সাত দফা তথ্য দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বিধান রয়েছে হলফনামার তথ্য জনসম্মুখে প্রচারেরও।

হলফনামা অনুযায়ী এমএসসি ডিগ্রিধারী মিন্টুর নিজের নামে বাড়ি কিংবা অ্যাপার্টমেন্ট; আবাসিক-বাণিজ্যিক দালান নেই। তবে যৌথ মালিকানায় বাড়ি-এপার্টমেন্ট রয়েছে।

আব্দুল আউয়াল মিন্টু

পেশায় ব্যবসায়ী আবদুল আউয়াল মিন্টু ১৪টি প্রতিষ্ঠানের মালিকানা ও বিভিন্ন পদে রয়েছেন।

তার বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণের পরিমাণ ২২৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। আর বিভিন্ন খাতে দায়ের পরিমাণ দেখানো হয়েছে ৬ কোটি টাকা।

অস্থাবর সম্পত্তিতে মোটর গাড়িসহ বাহন খাতে স্ত্রীসহ ১৮ লাখ টাকা অস্থাবর সম্পদ দেখিয়েছেন বিএনপির এই নেতা। এর মধ্যে নিজের নামে সাড়ে ৮ লাখ টাকা ও স্ত্রীর নামে ৯ লাখ ৮৩ হাজার টাকা।

৫ কোটি ১৮ লাখ টাকা বার্ষিক আয়ের যে তথ্য মিন্টু হলফনামায় দিয়েছেন, তার মধ্যে কৃষি থেকে ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা, বাড়ি-অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া থেকে ৯ লাখ ৪ হাজার টাকা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হিসাবে পরিতোষিক হিসেবে ৯৩ লাখ টাকা, শেয়ারে ২৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা; শিক্ষকতা, চিকিৎসা, আইন ও পরামর্শক হিসেবে বার্ষিক ২ লাখ ৭২ হাজার টাকা ও অন্যান্য খাতে তিন লাখ ৩৮ লাখ ৩৭ হাজার টাকা আয়ের কথা বলা হয়েছে।

মিন্টু নিজের নামে ৫৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা এবং স্ত্রীর নামে 8 কোটি ৩৬ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদ থাকার কথা বলেছেন।

এছাড়া তার নিজের নামে রয়েছে ৪ কোটি ৫০ লাখ টাকার কৃষি-অকৃষি জমি, স্ত্রীর নামে রয়েছে ৫০ লাখ টাকার অকৃষি জমি এবং যৌথ মালিকানায় ৬১ লাখ টাকার বাড়ি রয়েছে।

মিন্টুর অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে নগদ টাকা ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ব্যাংকে জমা ৬৮ লাখ ৮৯ হাজার টাকা এবং বন্ড ও কোম্পানির শেয়ার মিলিয়ে আছে ৪০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।

বাবার পক্ষে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন তাফসির এম আউয়াল

হলফনামায় দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মিন্টুর বিরুদ্ধে ১৩টি মামলা রয়েছে, যার মধ্যে তিনি পাঁচটিতে জামিনে রয়েছেন। বাকিগুলো ‘পেন্ডিং’ রয়েছে বলে তিনি কমিশনকে জানিয়েছেন।

এছাড়া আগের তিন মামলার মধ্যে দুটিতে অব্যাহতি পেয়েছেন মিন্টু, একটির কার্যক্রম হাই কোর্টের আদেশে স্থগিত।

ঢাকা উত্তরে মিন্টুর ছেলে তাবিথ আউয়ালও শেষ মুহূর্তে প্রার্থী হয়েছেন।

বাবা বিএনপির রাজনীতিতে থাকলেও তাবিথ সরাসরি কোনো দলের সঙ্গে নেই। তবে অনেকের ধারণা, কোনো কারণে মিন্টুর প্রার্থিতা বাতিল হলে ভোটের লড়াইয়ে থেকে যাবেন তাবিথ।

মাল্টিমোড গ্রুপের উপ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তাবিথ আউয়ালের নামে কোনো মামলা নেই। তিনি নিজেও ১৭টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত।

হলফনামায় তিনি নিজের বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন সোয়া কোটি টাকা।

তার অস্থাবর সম্পত্তির তালিকায় রয়েছে ১৪ কোটি ৮১ লাখ টাকার বন্ড ও শেয়ার। অন্যান্য খাতে রয়েছে আরও ১৫ কোটি ২৫ লাখ টাকার সম্পদ। তার স্ত্রীর নামে রয়েছে ৬০ ভরি স্বর্ণ।