ঢাকার মেয়র প্রার্থী চূড়ান্ত করতে যাচ্ছেন খালেদা

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণে মেয়র পদে দল থেকে কাদের সমর্থন করা হবে, তা মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর ঘোষণা করবে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 March 2015, 05:10 PM
Updated : 30 March 2015, 05:10 PM

সোমবার রাতে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করার পর বিএনপি সমর্থক পেশাজীবীদের নেতা রুহুল আমিন গাজী সাংবাদিকদের একথা জানান।

অর্থাৎ রোববার মনোনয়নপত্র দাখিল শেষ হওয়ার পর যাচাই-বাছাই শেষে বৃহস্পতিবার বিএনপির সমর্থনের ঘোষণা আসতে পারে।

রুহুল আমিন বলেন, “প্রার্থী কাকে করা হবে, তা নিয়ে সবার সঙ্গে তিনি (খালেদা) আলোচনা করছেন। প্রার্থিতা যাচাই-বাছাই অর্থাৎ ২ তারিখের পরই তা চূড়ান্ত করা হবে।”

চট্টগ্রাম সিটি করপোরশন নির্বাচনে মেয়র পদে এম মনজুর আলমকে বিএনপির আনুষ্ঠানিক সমর্থন দিলেও ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। এই দুটিতেই বিএনপির একাধিক নেতা মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।

ঢাকা উত্তরে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল আউয়াল মিন্টুর পাশাপাশি তার ছেলে তাবিথ আউয়ালও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এখানে আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে মেয়র প্রার্থী ব্যবসায়ী আনিসুল হক।  

মির্জা আব্বাস ও আব্দুস সালাম

ঢাকা দক্ষিণে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, অর্থবিষয়ক সম্পাদক আবদুস সালামের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন ও সহ সাংগঠনিক সম্পাদক নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টুও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

ঢাকা উত্তরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সমর্থন পেয়েছেন সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফের ছেলে সাঈদ খোকন।

নির্দলীয় সরকারের অধীনে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার মধ্যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছেন বিএনপি নেতারা। তিনি সিটিতেই ভোট হবে ২৮ এপ্রিল। 

এদিকে বিএনপির যুগ্মমহাসচিব বরকতউল্লাহ বুলুর নামে গণমাধ্যমে আসা এক বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়েছে, এই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল সমর্থিত প্রার্থীরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচার চালাচ্ছেন।

“নির্বাচন কমিশন কর্তৃক আচরণবিধির ওপর কড়াকড়ি আরোপ করলেও এখন পর্যন্ত তার সুস্পষ্ট প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। একদিকে প্রকাশ্যে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা অত্যন্ত দাপটের সাথে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে বিরোধী দলের প্রার্থীদের বেলায় সুষ্ঠু আচরণবিধি পালনের মাধ্যমে প্রচারণা চালানোর কিঞ্চিৎ সুযোগও দেওয়া হচ্ছে না।”

ইসি ইতোমধ্যে জানিয়েছে, নির্বাচনের প্রচার ৮ এপ্রিলর আগে চালানোর কোনো সুযোগ নেই। আচরণ বিধি লঙ্ঘনের জন্য চট্টগ্রামে তিন মেয়র প্রার্থীকে নোটিসও পাঠানো হয়েছে।   

রুহুল আমিন গাজী বলেন, ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনের কার্যক্রম খালেদা জিয়া ‘তীক্ষ্ণভাবে পর্যবেক্ষণ’ করছেন।

“সিটি নির্বাচনে দলীয়ভাবে অংশ নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ম্যাডাম চান, সব প্রার্থী যাতে তাদের প্রচার-প্রচারণার সমান সুযোগ পাক। একটি অর্থবহ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হচ্ছে কি না, তার ওপর তিনি নজর রাখছেন।”

চট্টগ্রামে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী এম মনজুর আলম

গুলশানে খালেদার কার্যালয়ে রাত সাড়ে পৌনে ৮টার দিকে পুলিশের অনুমতি নিয়ে ঢোকেন রুহুল আমিন গাজীর নেতৃত্বে পেশাজীবীদের ১৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।

দলে ছিলেন- সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান ও এম এ আজিজ, প্রকৌশলী নেতা হারুনুর রশীদ ও রিয়াজুল ইসলাম রিজু, চিকিৎসক নেতা রফিকুল কবির, মোস্তাক রহিম স্বপন ও এসএম রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, ‍জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. শরীফ উদ্দিন, কৃষিবিদ নেতা হাসান জাফর তুহিন ও জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম।

‘পরিবেশ’ তৈরি না হলে বিএনপি নির্বাচন থেকে সরে আসবে কি না- জানতে চাইলে শওকত মাহমুদ বলেন, “যদি নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি না হয়, সেক্ষেত্রে ভোটাররা যদি ভোট দিতে না পারে, তখন তিনিই (বেগম জিয়া) ঠিক করবেন, কী করতে হবে।”

পেশাজীবীদের পর আইনজীবীদের একটি প্রতিনিধি দল খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে। ওই দলে ছিলেন সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, ওমর ফারুক ফারুকী, সিমকি ইমাম খান ও আবদুল খালেক মিলন।

পরে গণস্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরীরও বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করেন।

হরতাল-অবরোধ ডেকে আড়াই মাসের বেশি সময় ধরে ওই কার্যালয়ে রয়েছেন খালেদা জিয়া।