ইসির কাছে এমাজউদ্দীনদের ছয়টি চাওয়া

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় বাড়ানোসহ ছয়টি অনুরোধ জানিয়েছেন বিএনপির একদল পরামর্শক।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 March 2015, 10:10 AM
Updated : 25 March 2015, 01:33 PM

তাদের অন্য চাওয়াগুলো হচ্ছে- গ্রেপ্তার ও হয়রানিতে থাকা সম্ভাব্য প্রার্থীদের নির্বাচনী কাজ বাধাহীন করা, কারাবন্দিদের প্রচার কাজে অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত, বিরোধী দল সমর্থিতদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক পদক্ষেপ ঠেকানো, অস্ত্র ও পেশি শক্তি নিয়ন্ত্রণ, প্রচারকর্মী ও পোলিং এজেন্টদের নিরাপত্তা নিশ্চিত।

এসব বিষয়ে সুনির্দিষ্ট আশ্বাস পেয়েছেন কি না- জানতে চাইলে প্রতিনিধি দলের নেতা অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, “কোনো বিষয়ে সিইসি উত্তর দেননি। সামগ্রিক বিষয়ে সিইসি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। তার সাধ্যমতো চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন।”

সরকার পতনে ২০ দলের হরতাল-অবরোধের মধ্যে আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণের আলোচনার মধ্যে বুধবার সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের সঙ্গে দেখা করতে যান খালেদা জিয়ার এই পরামর্শকরা।

ছবি: তানভীর আহমেদ/বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

প্রতিনিধি দলে ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দলের অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপি সমর্থক সাংবাদিক নেতা আবদুল হাই শিকদার ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফাহমিদা ইয়াসমীন  মুন্নী।

তবে তারা দাবি করেছেন, বিএনপির পক্ষ থেকে তারা যাননি। তারা গেছেন ‘শত নাগরিক কমিটি’র পক্ষ থেকে।

এমাজউদ্দীন বলেন, “আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে আসিনি। আমরা কারও পক্ষে না। বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, তা দল সিদ্ধান্ত নেবে। আমরা চাই, সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। সৎ ও যোগ্য প্রার্থী পেলে আমরা সমর্থন দেব।”

লাগাতার অবরোধ ডেকে দলীয় কার্যালয়ে অবস্থানরত খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কয়েকদিন আগেই অধ্যাপক এমাজউদ্দীন বলেছিলেন, সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে বিএনপি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেবে।

বিএনপির পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা না এলেও নির্বাচন কমিশনে এমাজউদ্দীনদের যাওয়ার তোড়জোড়ের মধ্যে বুধবার বিএনপি নেতাদের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে।

ঢাকা উত্তরে মেয়র পদে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল আউয়াল মিন্টু এবং দক্ষিণে দলের অর্থবিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সালামের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান মেয়র এম মঞ্জুর আলম বলেছেন, দল সিদ্ধান্ত জানালে তিনি ভোটের জন্য তৈরি।

ছবি: তানভীর আহমেদ/বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

 

দেড় ঘণ্টা ধরে সিইসির সঙ্গে বৈঠকের পর ‘শত নাগরিক কমিটি’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, স্থানীয় সরকার নির্বাচন নির্দলীয় হলেও বিভিন্ন দল সমর্থক প্রার্থীরা এ নির্বাচনে অংশ নেয়। এবার পরিস্থিতি অনেকটাই ভিন্ন। দেশের সচেতন নাগরিক হিসেবে কিছু বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানায় কমিটি।

মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় বাড়ানোর দাবির বিষয়ে এমাজউদ্দীন বলেন, “বিষয়টি মুখ্য নয়। তবে সার্বিক বিষয়ে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিতের অনুরোধ জানানো হয়েছে।”

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ২৯ মার্চ মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন। ভোট হবে আগামী ২৮ এপ্রিল।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এমাজউদ্দীন বলেন, এই নির্বাচনের সব দলের সমান সুযোগ নিশ্চিত করার দায়িত্ব ইসির।

“বর্তমানে বিএনপির দুটো কার্যালয় [গুলশান ও নয়া পল্টন] বন্ধ রয়েছে। রাজনৈতিক কর্মীরা আসতে পারে না। গণতান্ত্রিক রীতি অনুযায়ী দেশের সব রাজনৈতিক কার্যালয় যেন খুলে দেওয়া হয়।”

ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশের পাশাপাশি নির্বাচিত মেয়র বা জনপ্রতিনিধিকে কোনোভাবেই যেন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বরখাস্ত করা না হয়, সে বিষয়েও ইসির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তারা।  

বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে কি না- জানতে চাইলে খালেদার উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব বলেন, “বিএনপি বা ২০ দল নির্বাচনে যাবে কি না, কাকে সমর্থন দেবে, তা দলীয় ফোরামে সিদ্ধান্ত হবে। শত নাগরিক কমিটি সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির দাবি জানাচ্ছে।

“সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইসিকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। সিইসি আমাদের বিষয়গুলো ইতিবাচকভাবে নিয়ে সাধ্যমতো চেষ্টার কথা জানিয়েছে। সিইসির আশ্বাসে আমরা মোটামুটি সন্তুষ্ট।”