মনোনয়নপত্র নিলেন বিএনপির মিন্টু, সালাম

সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র পদের জন্য আবদুল আউয়াল মিন্টু ও আব্দুস সালামের মনোনয়নপত্র সংগ্রহের মধ্য দিয়ে দৃশ্যত বিএনপির সিটি নির্বাচনে আসার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 March 2015, 09:27 AM
Updated : 26 March 2015, 10:51 AM

বুধবার ঢাকা উত্তরের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ব্যবসায়ী নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টুর পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন তার দুই ছেলে তাফসির আউয়াল ও তাজওয়ার আউয়াল।

অন্যদিকে মহানগর নাট্যমঞ্চে ঢাকা দক্ষিণের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব সালামের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন তার একান্ত সচিব ফারুক উল ইসলাম সেলিম ও মহানগর বিএনপি নেতা মনিরুল ইসলাম।

মনিরুল পরে সাংবাদিকদের বলেন, “বিএনপি এখনও আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে দল নির্বাচন করবে না- এটাও বলেনি। তাই আগে থাকতে ফরম তুলে রাখছি। যদি দল নির্বাচনের বিপক্ষে অবস্থান নেয়, তখন প্রত্যাহার করা হবে।”

বিএনপির অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক সালাম অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সর্বশেষ মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ঘনিষ্ঠজন হিসাবে পিরিচিত।  

এরশাদের আমলে ঢাকা সিটি করপোরেশনের ডেপুটি মেয়রের দায়িত্ব পালন করা সালাম বিএনপির ঢাকা মহানগরের যে আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব ছিলেন, খোকা ছিলেন সেই কমিটির আহ্বায়ক। নতুন কমিটিতে সালাম আছেন উপদেষ্টা হিসাবে।  

বাবার হয়ে মনোনয়নপত্র নেওয়ার পর তাফসির আউয়াল সাংবাদিকদের বলেন, “সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন করা যাবে কি না তা নিয়ে আমরা কনসার্নড আছি। আমরা ইলেকশন কমিশনের সঙ্গে কথা বলব।”

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু গত নির্বাচনের আগে ২০১৩ সালে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তার নামে নাশকতার কয়েকটি মামলাও রয়েছে।

মামলার কারণে নির্বাচন করতে কোনো ‘সমস্যা হবে না’ বলে উল্লেখ করে তাফসির বলেন, আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেই তারা সব প্রক্রিয়া করছেন।

ছবি: নয়ন কুমার/বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

ছবি: নয়ন কুমার/বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

বিএনপি মিন্টুকে আনুষ্ঠানিক সমর্থন দিচ্ছে কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “এটা নির্দলীয় নির্বাচন। তারপরও তিনি যেহেতু চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, ইলেকশন করতে হলে তার এনডোর্সমেন্ট লাগে। তার সমর্থন নিয়েই সব হবে। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পেতে হলে রোববার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।”

২৯ মার্চ রোববারই এ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ঢাকা ও চট্টগ্রামের তিন সিটিতে ভোট হবে আগামী ২৮ এপ্রিল। 

ব্যবসায়ী নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টু ঊনিশশ নব্বইয়ের দশকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্টজন হিসাবে পরিচিত ছিলেন। বিগত সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় অন্য অনেক রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীর মতো মিন্টুও দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।   

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য এর আগে কারাবন্দি বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুও আইনজীবীর মাধ্যমে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।

পুরান ঢাকার সাবেক এই সাংসদ পিলখানা হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত। ওই রায়ের বিরুদ্ধে তিনি উচ্চ আদালতে আপিল করেছেন।

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের বিষয়ে বিএনপি আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা না দিলেও সম্ভাব্য প্রার্থীদের ‘সবুজ সংকেত’ দেওয়া হয়েছে বলে দলটির একাধিক জ্যেষ্ঠ নেতা জানিয়েছেন। আর দলের ভেতরেও যে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার দাবি যথেষ্ট জোরালো, গত কয়েক দিনে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বক্তব্যে তা স্পষ্ট হয়েছে।

ঢাকা ও চট্টগ্রামের তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপিপন্থি পেশাজীবীদের একটি প্রতিনিধি দল বুধবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন।

মেয়াদপূর্তির কারণে ঢাকা সিটি নির্বাচনের অপেক্ষায় আছে দীর্ঘ আট বছর ধরে। এরইমধ্যে আগের সীমানা ভেঙে উত্তর ও দক্ষিণের জন্য গঠন করা হয়েছে দুটি আলাদা সিটি করপোরেশন।  

আর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়াদ রয়েছে জুলাই পর্যন্ত। নির্ধারিত সময়েই সেখানে ভোটের আয়োজন হচ্ছে।