মঙ্গলবার বিকালের ওই সভায় প্রার্থীকে জয়ী করতে সমবেত কয়েক হাজার দলীয় নেতাকর্মীকে আহ্বান জানান জ্যেষ্ঠ নেতারা।
কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণের আশ্বাসও দেওয়া হয়।
এ ধরণের প্রতিশ্রুতি প্রদান এবং ভোট প্রার্থনা নির্বাচনী আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের নির্বাচনী কর্মকর্তা আবদুল বাতেন।
নগরীর এস এস খালেদ সড়কের রীমা কমিউনিটি সেন্টারে ‘নাগরিক কমিটি চট্টগ্রামের মনোনীত মেয়রপ্রার্থী আ জ ম নাছির উদ্দিনের সমর্থনে’ মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যৌথ বর্ধিত সভার আয়োজন করে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, গত পাঁচ বছর যিনি মেয়র ছিলেন তিনি জলাবদ্ধতা কমাতে পারেননি। রাস্তাঘাট পরিচ্ছন্ন রাখতে পারেননি।
“চট্টগ্রাম শহরের দুঃখ জলাবদ্ধতা। কথা দিচ্ছি, যদি প্রার্থী জয়ী হয় জলাবদ্ধতা চিরতরে চলে যাবে। অনেক কাজ হবে, অনেক কাজের স্বার্থে আমাদের মেয়র দরকার।”
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে মোশাররফ বলেন, স্লোগান না দিয়ে মা-বোনদের কাছে গিয়ে বিনয়ের সাথে বলবেন- নাছির ভাইয়ের সালাম নিন, অমুক মার্কায় ভোট দিন।
“মিছিল করে ভোট পাবেন না। ঘরে ঘরে গিয়ে ভোট চাইবেন।”
সভায় আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, সরকার এক দলের আর মেয়র আরেক দলের থাকলে শহরের কি অবস্থা হয় তা গত পাঁচ বছর নগরবাসী দেখেছে।
“বিএনপির মেয়র শহরকে ডাস্টবিনে পরিণত করেছেন। ১৪ দলের প্রার্থীকে জয়ী না করলে শহরে নাকে হাত দিয়ে হাঁটতে হবে।”
হাছান মাহমুদ বলেন, “প্রতিটি ওয়ার্ডে কমিটি করে মেয়রপ্রার্থীকে জয়ী করতে হবে। গত নির্বাচনে এক লাখ ভোটে হেরেছিলাম। এবার যেন দুই লাখ ভোটের ব্যবধানে জিতি।”
সভায় নগরীর হারানো সৌন্দর্য্য ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, “যে অঙ্গীকার দিয়ে তারা নির্বাচিত হয়েছিল তার ব্যর্থতার কথা তুলে ধরতে পারলেই আমরা বিজয়ী হব।
“বিরোধী শক্তি বলছে জনগণ আওয়ামী লীগের সাথে নেই। এ নির্বাচনে কোনো কারণে বিপর্যয় হলে তাদের মিথ্যাচার সত্য বলে প্রমাণিত হবে। নির্বাচনে পরাজিত হলে আমি একা পরাজিত হব না।”
সাবেক মন্ত্রী আফসারুল আমীন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ২০১০ সালে দলের হারানো গৌরব ফেরানোর আহ্বান জানান।
এছাড়া উত্তর জেলার সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী ও দক্ষিণ জেলার সভাপতি মোছলেম উদ্দিন নির্বাচনে আ জ ম নাছিরকে জয়ী করে দলীয় সভানেত্রীকে ‘উপহার’ দেবেন বলে আশা ব্যক্ত করেন।
সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আচরণ বিধিমালা অনুসারে ভোটগ্রহণের ২১ দিন পূর্বে হোটেল, রেস্টুরেন্ট, রেস্ট হাউজ, কমিউনিটি সেন্টার ইত্যাদি প্রচারণার কাজে ব্যবহার করা যাবে না।
এছাড়া কোনো অনুষ্ঠানের আড়ালে ভোটারদের খাবার বিতরণ বা অন্য কোনো পন্থায় নির্বাচনী প্রচারণা চালানো যাবে না।
মঙ্গলবারের সভায় সমবেত নেতাকর্মী ও গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে খাবারও বিতরণ করা হয়।
চট্টগ্রামের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন বলেন, যেসব প্রার্থী এখনো মনোনয়ন পত্র দাখিল করেননি তাদের নির্বাচনী বিধিমালা লঙ্ঘনের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিতে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।
“৭ এপ্রিলের আগে কমিউনিটি সেন্টার ব্যবহার করা এবং নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দেওয়া আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার পরই প্রার্থী আমাদের আওতায় আসবেন। তখন প্রয়োজনে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”