শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মুক্তি ভবনে দলটির ৬৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
সিপিবি সভাপতি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র অভিজিৎ হত্যার বিরুদ্ধে থাকলে এফবিআইয়ের টিম পাঠানোর দরকার নেই। তারা এদেশে জামায়াত-শিবির পোষণ বাদ দিলেই এ ধরণের হত্যাকাণ্ড বন্ধ হয়ে যাবে।
“অথচ তারা অভিজিৎকে হত্যা করতে জামায়াত-শিবিরকে মদদ দিয়ে যাচ্ছে, আবার তদন্ত করতে টিমও পাঠাচ্ছে।”
সরকারও জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে চায় না মন্তব্য করে তিনি বলেন, “সাত দিনের মধ্যে সরকার অভিসংশন আইন করতে পারে। কিন্তু জামায়াতকে নিষিদ্ধের কথা বললে বলে, আইনের নাকি একটু ফাঁক আছে।”
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাকে সঙ্গে নিয়ে একুশের বইমেলা থেকে বের হওয়ার পর ওই জায়গাতেই হামলার শিকার হন মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎ, যিনি যুক্তরাষ্ট্রে প্রকৌশলী হিসাবে কাজ করছিলেন।
হামলায় আহত বন্যাকে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়া হয়েছে। স্বামীর মতো ব্লগার বন্যাও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।
এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে সহযোগিতা করতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় এসেছেন। তারা শুক্রবার হামলার স্থান, বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ সংশ্লিষ্ট এলাকা সময় নিয়ে ঘুরে দেখেন এবং ছবিসহ বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করেন।
অভিজিৎ হত্যার তদন্তে যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআই সদস্যের পাঠানোর সমালোচনা করে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, “ঢাকার বুকে এফবিআইয়ের পার্মানেন্ট অফিস আছে। তাদের বাইরে থেকে টিম পাঠানোর প্রয়োজন ছিল না। আসলে তারা আরেকটু শক্ত করে কামড় দিতে চায়।”
কমিউনিস্ট পার্টির রাজনীতির ভুল স্বীকার করে সিপিবি সভাপতি বলেন, “স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগের বাইরে এসে জনগণকে নিয়ে আমরা রাজনীতি করতে পারলে জাসদ তৈরি হতো না। জাসদের ছত্রছায়ায় প্রতিক্রিয়াশীলরাও জন্ম নিতে পারতো না।
“আর এ কারণেই আমরা বঙ্গবন্ধুকে বাঁচাতে পারিনি। আবার বাংলাদেশকেও সাম্প্রদায়িকতা থেকে আটকাতে পারিনি।”
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপি জন্ম থেকেই লুটেরাদের দল। আওয়ামী লীগে একসময় স্কুলমাস্টার, শ্রমিক ও আইনজীবীরা নেতৃত্ব দিত।
“এখন আওয়ামী লীগ লুটেরাদের দলে পরিণত হয়েছে। সেই নেতৃত্ব এখন আর দলটিতে নেই।”
মুক্তিযুদ্ধে দলের ভুমিকা তুলে ধরে সেলিম বলেন, “কমিউনিস্ট পার্টি না থাকলে আওয়ামী লীগ হতো না। আর আওয়ামী লীগ না থাকলে শেখ মুজিবুর রহমানও বঙ্গবন্ধু হতেন না।”
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিপিবির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মনজুরুল আহসান খান, মোজাম্মেল হক তারা ও শামসুজ্জামান হিরা।