খালেদা জিয়া এবারও পরাজিত হবেন: তোফায়েল

আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যা করে খালেদা জিয়ার জয়ের কোনো সম্ভাবনা নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 March 2015, 02:52 PM
Updated : 3 March 2015, 02:52 PM

মঙ্গলবার বিকালে চট্টগ্রামের রেলওয়ে পলোগ্রাউন্ড মাঠে চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, অবরোধের নাম করে তিনি (খালেদা জিয়া) নিজেকে নিজে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন। তিনি আইন-কানুন মানবেন না। তার নামে মামলা আছে। কিন্তু এখন তিনি আদালতে যাবেন না।

“আমরাও তো আদালতে গিয়েছি। আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হাতকড়া পরিয়ে কারাগারে নেওয়া হয়েছে।”

২০ দলীয় জোটের চলমান কর্মসূচির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল বলেন, “হরতাল-অবরোধ আমরাও করেছি। হরতাল দিলে মনে হত কারফিউ, রাস্তায় মানুষ নামত না।

“এখন কি হচ্ছে? রিকশায়-বেবি ট্যাক্সিতে করে মা তার সন্তানকে নিয়ে যাচ্ছে তাদের আগুনে পোড়ানো হচ্ছে। কার বুক খালি করছেন বেগম জিয়া? বিশ্ব ইজতেমা, ২১ ফেব্রুয়ারি, পরীক্ষা এমনকি নিজের ছেলের লাশ সামনে রেখেও তিনি হরতাল দিয়েছেন।”

তোফায়েল আহমেদ বলেন, ৯৬-এর একতরফা নির্বাচন করতে চেয়ে তিনি পরাজিত হয়েছেন। ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারি একতরফা নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছেন। ২০০৮ ও ২০১৪ তে তিনি পরাজিত হয়েছেন। এবারও তিনি পরাজিত হবেন। তার জয়ের কোনো সম্ভাবনা নেই।

“আইএস, তালেবান, আল কায়েদার স্টাইলে যারা মায়ের বুক খালি করে তাদের সাথে আলোচনা হবে না। মেয়াদ শেষের ৯০ দিন আগে, নির্ধারিত সময়ের আগে কোনো নির্বাচন নয়।”

৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তোফায়েল বলেন, “প্রধানমন্ত্রী হওয়া সত্বেও সব ত্যাগ করে শেখ হাসিনা ফোন করেছিলেন। আমি তখন উপস্থিত ছিলাম। বিরোধী নেত্রী ওপার থেকে যে কথা বললেন তা কর্কশ-কঠিন।

“শুধু বয়কট নয়, নির্বাচন যেন না হয় তার সকল প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন। সেদিন নির্বাচন না হলে অসাংবিধানিক পন্থায় তৃতীয় শক্তির হাতে ক্ষমতা দখল হয়ে যেত। অনেক দেশে গিয়েছি সবাই নির্বাচন মেনে নিয়েছে। তারা বলেছে বাংলাদেশের উত্থান বিস্ময়কর। কিন্তু এসব একজনের ভালো লাগে না, তিনি খালেদা জিয়া।”

চট্টগ্রামকে ঘিরেই সব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে উল্লেখ করে তোফায়েল বলেন, “ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেনের কাজ প্রায় শেষ। মিরসরাই ও আনোয়ারায় ইপিজেড হবে। ৪ ফেব্রুয়ারি পারচেজ কমিটির সভায় এলএনজি টার্মিনাল অনুমোদন দিয়েছি।

“এটা হলে প্রতিদিন পাঁচশ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস প্রতিদিন বিদেশ থেকে আমদানি হবে। চট্টগ্রাম থেকে টেকনাফ পর্যন্ত  শিল্প কারখানা গড়ে উঠবে। বিসিআইএম ইকনোমিক করিডর সই করতে যাচ্ছি। দেড় বিলিয়ন ডলার খরচে রিফাইনারি সম্প্রসারণ করতে যাচ্ছি।”

চট্টগ্রাম থেকে চা সংসদের কার্যালয় ঢাকায় স্থানান্তর হবে না বলেও অনুষ্ঠানে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।

চট্টগ্রাম চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির আয়োজনে বাণিজ্য মেলার উদ্বোধীন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেন, বিএনপি আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে। লন্ডনে বসে জাতির পিতা নিয়ে কথা বলছে।

“পাল্টা প্রশ্ন করতে চাই, মুক্তিযুদ্ধকালীন তার পিতার ভূমিকা নিয়ে অনেকক প্রশ্ন আসে। তাহলে কি সেসব সত্যি?”

সাংসদ এম এ লতিফ বলেন, প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে সাধারণ মানুষ আর ব্যবসায়ীদের টার্গেট করবেন না। আগামী নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, আমরা ব্যবসা করতে চাই। রাজনৈতিক স্থিরতা চাই। এ নিশ্চয়তা চাই। অন্য কিছু চাই না।

চট্টগ্রামের গ্যাস সংকট নিরসন এবং গ্যাসের চাপ বাড়াতে বিকল্প সরবরাহ লাইন তৈরির প্রস্তাব দেন চেম্বার সভাপতি।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন চেম্বার সহ-সভাপতি সৈয়দ জামাল আহমেদ এবং সভাপতিত্ব করেন মেলা কমিটির চেয়ারম্যান ও চেম্বারের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি নুরুল নেওয়াজ সেলিম।

দেশি-বিদেশি বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে রেলওয়ে পলোগ্রাউন্ড মাঠে মেলা চলবে মাসব্যাপী।