খালেদাকে হুকুমের আসামি করতে আইন তৈরির সুপারিশ

বিএনপি জোটের হরতাল ও অবরোধের মধ্যে সহিংসতার প্রেক্ষাপটে খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করার মতো আইনগত ভিত্তি তৈরির সুপারিশ এসেছে এক আলোচনায়।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Feb 2015, 08:39 PM
Updated : 28 Feb 2015, 08:39 PM

শনিবার ‘সন্ত্রাস ও নাশকতার বিরুদ্ধে নাগরিক সংলাপ’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা এই সুপারিশ করেন।

রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে ইন্সটিটিউট অব কনফ্লিক্ট, ল’ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিসের এই আলোচনার আয়োজন করে।

সেমিনারে বক্তার বলেন, রাজনৈতিক অধিকারের সঙ্গে বাঁচার ও জীবিকার অধিকার খর্ব করার সুযোগ কারো নাই। এছাড়া  সন্ত্রাস-সহিংসতা কোনো রাজনীতি নয়, তাই এটি বন্ধ করার জন্য যা যা প্রয়োজন তা সরকারকে করতে হবে।

সাবেক রাষ্ট্রদূত ওয়ালিউর রহমান বলেন, “বেগম জিয়াকে গণহত্যার অভিযোগে হুকুমের আসামি করার লিগ্যাল ফ্রেম ওয়ার্ক এখনো নেই। এখন সময় এসেছে এই আইনটা করার।”

একাত্তরের ঘাতক দালাল নিমূর্ল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির সরকারকে কঠোর হাতে সন্ত্রাস দমনের পরামর্শ দেন।

তিনি বলেন, বর্তমান সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের বিস্তার হতে পারে। পাকিস্তান, আমেরিকার মতো দেশগুলো চায় বাংলাদেশে সামরিক হস্তক্ষেপ করার মতো পরিবেশ সৃষ্টি হোক। তাই সরকারের উচিত জঙ্গি দমনে আইএসকে মাথায় রেখে ওয়ার্ল্ড টাস্কফোর্স করা।

বুধবার গুলশানের একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ছবি: মুস্তাফিজ মামুন/ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

বিরোধী জোটের সঙ্গে সংলাপের বিপক্ষে নিজের অবস্থান তুলে ধরে তিনি বলেন, “আইএস ও জামায়াতের যে উদ্দেশ্য তা সংলাপ করে দমন করা যাবে না। সন্ত্রাসের সঙ্গে সংলাপ কিভাবে হয়!”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বিএনপি-জামাত জোট ২১ ফেব্রুয়ারি সারাদেশ অবরোধ করে রেখেছিল। কিন্তু এ দিনটি এখন শুধু জাতীয় নয়, আন্তর্জাতিক একটি দিবস। এ দিনে অবরোধ রেখে তারা মানবসভ্যতার শত্রু হিসেবে নিজেদের চিহ্নিত করেছে।

তিনি বলেন, “অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন সংলাপ না সন্ত্রাস। বলবো, সন্ত্রাসের বিকল্প সংলাপ হতে পারে না। এর বিকল্প কেবলই সন্ত্রাস দমন। যারা সন্ত্রাসের বিকল্প হিসেবে সংলাপকে তুলে ধরছেন তারা সন্ত্রাসকেই প্রশ্রয় দিচ্ছেন।”

আওয়ামী লীগের সমর্থনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে মেয়র প্রার্থী ব্যবসায়ী নেতা আনিসুল হক জননিরাপত্তাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, “এখন জীবন নিরাপদ কী না এটাই বড় ভাবনা। সন্ত্রাসের মোকাবেলা সরকারকে নিজের প্রয়োজনেই করতে হবে।”

জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, “সরকারের দায়িত্ব জনগণকে সুরক্ষা দেওয়া । এজন্য প্রয়োজনে আইনের কঠোর প্রয়োগ করতে হবে। অব্যাহত সন্ত্রাস রোধে প্রয়োজনে রাষ্ট্রে ‘আব্রাহাম লিংকনের’ মতো একনায়কতন্ত্র কায়েম করতে হবে।”

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আবদুর রশিদ।

তিনি বলেন, “হরতাল-অবরোধ থাকবে কী না সেটা নাগরিক সিদ্ধান্তের বিষয়। তবে চলমান অবরোধ ও সন্ত্রাসের মূল কারণ ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নয়, বরং এটি মুক্তিযুদ্ধের মতই একটি মতাদর্শিক লড়াই।”